FC Goa vs East Bengal: ১০ ম্যাচে অপরাজিত গোয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে চোট সমস্যার জেরবার দল, কী ভাবছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ?

ABP Ananda Updated at: 18 Jan 2025 09:32 PM (IST)
Edited By: Rishav Roy

Oscar Bruzon: নাগাড়ে তিন ম্যাচ জিততে পারলেই তাঁর দল প্রথম ছয়ে থাকার দৌড়ে চলে আসবে বলে মনে করছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোন।

FC Goa vs East Bengal: ১০ ম্যাচে অপরাজিত গোয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে চোট সমস্যার জেরবার দল, কী ভাবছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ?

দলকে নিয়েও এখনও আশাবাদী লাল হলুদ কোচ (ছবি: ইস্টবেঙ্গল এক্স )

NEXT PREV

গোয়া: যেখানে প্রথম এগারো গড়তেই হিমশিম খাচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কোচ অস্কার ব্রুজোন (Oscar Bruzon), সেখানে তিনি পরপর তিন ম্যাচে জেতার কথা ভাবছেন কী করে, সেটাই অবাক করার মতো।











রবিবার এফসি গোয়ার ঘরের মাঠে নামছে ইস্টবেঙ্গল। যে এফসি গোয়া গত দশটি ম্যাচের একটিতেও হারেনি। তবে গত দু’টি ম্যাচে ড্র করেছে তারা। তাই রবিবার ঘরের মাঠে জয়ে ফেরার জন্য নিশ্চয়ই মরিয়া হয়ে উঠবে। মানোলো মার্কেজের দল খুব ভাল করেই জানে যে ইস্টবেঙ্গল শিবিরের হাল এখন বেহাল।

কলকাতা ডার্বিতে পিভি বিষ্ণুকে রক্ষণে খেলাতে হয়েছিল। হেক্টর ইউস্তে, লালচুঙনুঙ্গাদের আনতে হয়েছিল মাঝমাঠে, শৌভিক চক্রবর্তী, জিকসন সিংদের সঙ্গে। রবিবার এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সউল ক্রেসপো ফিট নন। একই অবস্থা হেক্টর ইউস্তেরও। চোট-আঘাতের তালিকায় আগেই ছিলেন ডিফেন্ডার মহম্মদ রকিপ। তাতে ঢুকে পড়েছেন আরও দুই ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি ও প্রভাত লাকরা। দলের ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ও অধিনায়ক ক্লেটন সিলভাও পুরোপুরি ফিট নন বলেই শোনা যাচ্ছে। মিডফিল্ডার শৌভিক চক্রবর্তী গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখে এই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। তা হলে মাঠে নামবেন কারা?

তাঁর মাঝমাঠ ও রক্ষণের অবস্থা বেশ খারাপ। দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসকে গোলের বল দেওয়ার মতো খেলোয়াড় কোথায়? ভেনেজুয়েলার যে নয়া স্ট্রাইকার এসেছেন সপ্তাহ খানেক আগে, সেই সেলিসও কি ভারতের মতো অজানা-অচেনা পরিবেশে মাঠে নেমেই গোল করতে শুরু করে দেবেন?

ইস্টবেঙ্গল কোচ নিজেই শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, “নতুন যে স্ট্রাইকার এসেছে, রিচার্ড সেলিস, ওকে সবে দু’টো অনুশীলনে দেখলাম। এই আবহাওয়া, আর্দ্রতার সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া ওর পক্ষে কঠিন। লম্বা সফর করে এসেছে ও। তার আগে দেড় মাস কোনও ম্যাচ খেলেনি। তবে অনুশীলনের মাঠে ওকে দেখে ভাল লেগেছে। ধারালো, ভাল মানের ও শক্তিশালী খেলোয়াড়। আমাদের গোলের খরা মেটাতে পারে ও। সেলিসের জন্য ফাইনাল থার্ডে আমরা আরও তৎপর হয়ে উঠতে পারি”। কিন্তু এখনই তা সম্ভব কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত নন অস্কার।

গত আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতা দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসকে নিয়ে লাল-হলুদ সমর্থকদের আশা ছিল আকাশ ছোঁয়া। অনেকেই ভেবেছিলেন গত মরশুমের মতো তিনি এ মরশুমেও লাল-হলুদ জার্সি গায়ে গোলের বন্যা বইয়ে দেবেন। কিন্তু সেই আশাও অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে তাদের।

ইস্টবেঙ্গলের দিমি-কে নিয়ে কোচের বক্তব্য, “দিমিত্রি একজন ভাল স্ট্রাইকার, যে বক্সে খেলে। বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসে নিজেই গোল তৈরি করে নেওয়ার মতো খেলোয়াড় ও নয়। ওকে সাপ্লাই দিতে হবে। তা হলেই গোল করবে। উইংয়ে গিয়ে খেলতে পারবে না ও। বড়জোর একটু নীচে নেমে মাঝামাঠের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। কিন্তু ওকে ঠিকমতো গোলের বল দিতে হবে। দেখা যাক, সউল ফিরে এলে, ক্লেটন ও দিমি একটু ভাল জায়গায় পৌঁছতে পারে কি না। গত বছর কেরালা ব্লাস্টার্সে যে জায়গায় ছিল দিমি, সবচেয়ে বেশি গোল করেছিল, সেই জায়গায় পৌঁছতে পারে কি না। ফর্মের অভাব ও সাপ্লাইয়ের অভাবই ওর প্রধান সমস্যা”।

কিন্তু দিমি, সউল, ক্লেটন, সেলিসরা যতদিনে সেরা ছন্দে ফিরবে, ততদিনে ইস্টবেঙ্গলের প্লে-অফের সম্ভাবনা থাকবে কি? এটা ভাববার বিষয়।
অস্কার ব্রুজোন তবুও আশাবাদী। আসলে যে ভাবে তিনি দলকে খাদের কিনারা থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন, তার পরে এই আত্মবিশ্বাস অস্বাভাবিক নয়। “আমাদের সামনে শুরু থেকেই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা প্রথম ছয় ম্যাচে কোনও পয়েন্ট পাইনি। তার পর সাতটা ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট পেয়েছি। গত দশটা ম্যাচের পয়েন্ট টেবল যদি দেখেন, তা হলে আমরা কিন্তু সেরা ছয়ে ছিলাম। গত দুই ম্যাচে হারের আগে পর্যন্ত আমরা সেরা তিনে ছিলাম”, বলেন লাল-হলুদ কোচ।

এই আত্মবিশ্বাস থেকেই তিনি এখনও দলের ছেলেদের উৎসাহ জোগানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কী ভাবে? তাঁর বক্তব্য, “ছেলেদের বলেছি, আইএসএলে আমরা কখনও পরপর তিনটে ম্যাচে যেমন জিতিনি, তেমন তিন ম্যাচে হারিওনি। এ বার যেন তিন ম্যাচে হারের রেকর্ডটা না হয়। ডিসেম্বরে যেমন আমরা সব দলের সঙ্গেই লড়েছিলাম, সেই লড়াই আবার ফিরিয়ে আনতে হবে আমাদের। এফসি গোয়া সেরা তিনে থাকা দল। ওদের ফুটবলাররা যথেষ্ট পরিণত। তবু কাল আমাদের পয়েন্ট পেতে হবে”।

কিন্তু কাদের নিয়ে লড়বেন অস্কার ব্রুজোন? কলকাতার সংবাদমাধ্যমে ইস্টবেঙ্গলের যে সম্ভাব্য একাদশের কথা বেশি করে বলা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী সেলিস ও বিষ্ণুকে দুই উইংয়ে রেখে এবং দিয়ামান্তাকস ও ডেভিড লালনসাঙ্গাকে সামনে রেখে নাকি রবিবার দল সাজাতে পারেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। নন্দকুমার শেকর ও নিশুকুমার দুই সাইড ব্যাক হিসেবে খেলতে পারেন, এমন সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। সেন্টার ব্যাক হিজাজি মাহেরের সঙ্গে লালচুঙনুঙ্গা। মাঝমাঠে নাওরেম মহেশের সঙ্গে জিকসন সিং।

এই কম্বিনেশন নিয়েও টানা তিন ম্যাচে জেতার কথা ভাবতে পারছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ! তাঁর বিশ্বাস, টানা তিন ম্যাচে জিততে পারলে তাঁরা ফের সেরা ছয়ের দৌড়ে চলে আসতে পারে। বলেন, “ছ’নম্বর দলের চেয়ে আমরা দশ পয়েন্টে পিছিয়ে আছি। সেরা ছয়ে পৌঁছতে গেলে যে আমাদের টানা তিনটি ম্যাচ জিততে হবে, যা আমাদের ক্লাব কখনও করতে পারেনি। এটা দলের ছেলেদের উপলব্ধি করতে হবে। তবে আমার মনে হয়, একসঙ্গে তিনটে ম্যাচে জেতার চাপ না নিয়ে ম্যাচ ধরে ধরে এগোনোই ভাল। সেরা ছয়ের দলগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের যদি লড়াই করার ইচ্ছে থাকে, তা হলে কাল থেকেই তা শুরু করতে হবে। কাল আমাদের পয়েন্ট পেতে হবে। এর পর কেরালা, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলব। তাদেরও সেরা ছয়ে ওঠার সম্ভাবনা যথেষ্ট”।

তবে ধারাবাহিকতার অভাবে যে প্রবল ভাবে ভুগছে তাঁর দল, তা স্বীকার করতেই হয়েছে স্প্যানিশ কোচকে। বলেন, “আমাদের ধারাবাহিকতার সমস্যা রয়েছে। গোয়ার কোচ মানোলো মার্কেজ যে অবস্থায় রয়েছে, গত দশটা ম্যাচে হারেনি, আমি ঠিক তার উল্টো পরিস্থিতিতে আছি। চোট আঘাত আর কার্ড সমস্যার জন্য কিছুতেই ধারাবাহিকতা আসছে না আমাদের প্রথম এগারোয়। প্রতি সপ্তাহেই দেখছি, নতুন নতুন সৈন্যদের নিয়ে একটা নতুন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে আমাদের। কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়ছি”।

এই শেষটুকুই বাস্তব। বাকিটা সবই আবেগ, স্বপ্ন, আত্মবিশ্বাস ও সাহস। একসময় এগুলোর জোগান দিয়েই দলকে শূন্য থেকে ১৪-য় এনে দাঁড় করিয়েছিলেন অস্কার ব্রুজোন। ফের সেই রাস্তাতেই হাঁটা শুরু করেছেন তিনি। দেখা যাক, এই অন্ধকার রাস্তার শেষে ফের আশার আলো দেখতে পান কি না।























Published at: 18 Jan 2025 09:32 PM (IST)

- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -

© Copyright@2025.ABP Network Private Limited. All rights reserved.