আবীর দত্ত, কলকাতা: বিশ্বকাপ আপনার মুখের সামনে। আর আপনি তা খাচ্ছেন। খেলা দেখছেন ব্রাজিলের বা আর্জেন্তিনার। একটু বিশ্বকাপের দিকে তাকিয়ে বললেন, "বেশ ভালো খেতে" আবার উপভোগ করতে লাগলেন রোনাল্ডোর গোল। ভাবুন। যে বিশ্বকাপের লড়াইয়ে ৩২ টি দেশ সেই বিশ্বকাপ নাকি আপনার হাতে। আর আপনি সেই নলেন গুড়ের কেক বিশ্বকাপ খেয়ে বিশ্বকাপ দেখছেন। খেলা দেখছেন না খেলা দেখাচ্ছেন ! বোঝা মুশকিল। কিন্তু উপভোগ নিজেও করছেন। কারণ আপনার হাতে বিশ্বকাপ আছে। মিষ্টি বিশ্বকাপ। নলেন গুড়ের বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপ জিতে অধিনায়ক থেকে ফুটবলার সবাইকে দেখা যায় বিশ্বকাপ দুহাত দিয়ে তুলে ধরছেন। চুমু খাচ্ছেন। বা জড়িয়ে ধরছেন। আবার অলিম্পিকের মতো খেলায় মেডেল জিতলেই আলতো কামড়ে দেখা। যেন স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। এবার ভাবুন, বিশ্বকাপ থেকে অনেক দূরে আপনি। আপনাকে একটা বিশ্বকাপ দেওয়া হলো। আপনি সেই বিশ্বকাপ স্পর্শ করে, চুমু খেতে গিয়ে স্বাদ নিয়ে ফেললেন। আর এতো ভালো লাগলো যে কামড়ে কামড়ে খেয়ে নিলেন। এসব হয় বলুন! এবার হয়তো এটাই হবে। দোহা তে নয় কলকাতায়।
ইতিমধ্যে চাহিদা বাড়ছে। আই এফ এ তরফে অর্ডার দেওয়া হয়েছে। অর্ডার দিয়েছে বেসরকারি অফিসে থেকে সরকারি অফিস। অনেকেই সাজিয়ে রাখার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ ছবি তুলে রিলস বানাবেন বলে। কেউ সেলফি। বিশ্বকাপ বলে কথা। কিন্তু এতো বড় বিশ্বকাপ কি ফ্রিজে ঢুকবে? হয়তো ঢুকবে। 29 দিন বিশ্বকাপ উপভোগ করার মতো ধীরে সুস্থে বিশ্বকাপ ফ্রিজ থেকে বার করে খাওয়াও যাবে। অভিজ্ঞতা একটা। বিশ্বকাপ তো আশা, আকাঙ্খার আরেক নাম। দলগত প্রয়াসে পাওয়া যায়। কিন্তু একটা ঘরে সারাদিন বিশ্বকাপ আর আপনি। যখন ইচ্ছা দেখছেন , ছবি তুলছেন। ভিডিও কলে বন্ধুকে দেখাতে পারছেন। স্বাদ নিতে পারছেন। কিন্তু এই বিশ্বকাপ নেওয়ার লড়াই তো বিরাট কঠিন। ৩২ টা দেশ। নতুন পুরোনো খেলোয়ারদের কোলাজ। অধ্যায়ন কার কেমন সেই পরীক্ষায় শুধু পাশ করা নয়, টপার হওয়ার লড়াই। সেই বিশ্বকাপ নাকি আপনার হাতে। বাঙালি পারেনা কিছু নেই। এবার ও বিশ্বকাপে ভারতীয় ফুটবল দল নেই তো কি হয়েছে , গোটা বিশ্বকাপ ভারতে আছে। একটা নয় একাধিক। তাও আবার তিলোত্তমা কলকাতায়। কিন্তু রাখতে হবে ঠিক ভাবে নয়তো কেউ নিয়ে চলে যেতে পারে দলগত প্রয়াসে। গোটা নয় ভেঙে ভেঙে। যেমন ধরুন পিঁপড়ে!
শহরজুড়ে শীতের আমেজ। আর তার মধ্যে বিশ্বকাপ। শীতে নলেন গুড়ের সন্দেশ। নতুন কি? আর নলেন গুড়ের সন্দেশ যদি বিশ্বকাপ হয়? তাও আবার বিশ্বকাপ জ্বরে যখন মাতোয়ারা আপামর বাঙালি তখন চোখের সামনে প্রায় ১ ফুটের বিশ্বকাপ তাও আবার সন্দেশ বিশ্বকাপ। গুড়ের করা পাকের, মুখে দিলেই যেন বিশ্ব ভ্রমণ। ১ কিলোগ্রাম ওজন। লম্বায় ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি। পুরো গোটা বিশ্বকাপ। রসনা তৃপ্তির হাতছানি। চাহিদা তুঙ্গে। পাওয়া যাচ্ছে মিঠাই মিষ্টির দোকানে। মিঠাই মিষ্টি প্রতিষ্ঠানের পার্টনার নীলাঞ্জন ঘোষ জানাচ্ছেন,"চাহিদা তুঙ্গে। ১ কেজি বিশ্বকাপের দাম ৭০০ টাকা। কম দামের ও আছে। আমরা চেষ্টা করছি ৩০ টাকায় ছোটো ছোটো বিশ্বকাপ বানাব।"
এবার ভাবুন রাতের ডিনারের টেবিলে বসে রিমোট হাতে ব্রাজিল আর্জেন্তিনা ম্যাচ দেখতে দেখতে ডিনার শেষ করলেন। আর শেষ পাতে বিশ্বকাপ মিষ্টি। মেসি রোনাল্ডো জিতুক আর না জিতুক পেলে মারাদোনার মতো আপনারও বিশ্ব জয় হয়ে গেলো