কলকাতা: টানা আটটি ডার্বি হারতে হয়েছিল। ২০১৯ সালের পর ২০২৩। প্রায় চার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে চলতি মরসুমের প্রথম ডার্বিতেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। এই ক্লাবেরই ঘরের ছেলে একেবারে তিনি। এখনও অবসর ঘােষণা না করলেও নিজেকে 'প্রাক্তন' হিসেবেই দেখতে চান অর্ণব মণ্ডল। ২০১২ সালে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে ডেম্পোর বিরুদ্ধে গোল করে সবার নজরে উঠে এসেছিলেন। অসংখ্য ডার্বির অভিজ্ঞতা রয়েছে। লাল হলুদের হয়ে ১০৩টি ম্যাচ খেলেছেন। আজ ডুরান্ড কাপের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান দ্বৈরথ। নিজে ধারাভাষ্যকার হিসেবও দায়িত্ব সামলাবেন। তবে লাল হলুদের প্রতি একটা আবেগ বরাবরই কাজ করে অর্ণবের। এবিপি লাইভের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা ডিফেন্ডার।


রবিবারের ডার্বিতে কাকে এগিয়ে রাখবেন?


অর্ণব: ডার্বিতে কাউকে সেভাবে এগিয়ে রাখব না। এই লড়াইটা একেবারেই আলাদারকমের। শারীরিক লড়াইয়ের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক লড়াইটাও একটা ফ্য়াক্টর। যে এই দুই লড়াইয়ে জয় ছিনিয়ে নিতে পারবে, সেই বাজিমাত করবে। দুটো দলের খেলাই দেখেছি। আমার মতে আজকের ডার্বি ৫০-৫০। মাঠে সেই মুহূর্তে যে কড়া টক্কর দিতে পারবে, সেই দলই জয় পাবে। 


ইস্টবেঙ্গলের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গাটা কোনটা?


অর্ণব: দেখুন এই দলটা একদম নতুন। বিদেশিরাও নতুন। খুব বেশি ম্যাচ প্র্য়াক্টিস পায়নি এরা। কিন্তু এরমধ্যেও সীমিত সুযােগ, সীমিত সম্ভাবনা নিয়েই কুয়াদ্রাত দারুণভাবে দলটাকে সামলেছে। দলের প্রতি বিশ্বাস তৈরি করাতে পেরেছে। এই ইস্টবেঙ্গল দলটা গত কয়েক মরসুমের দলের থেকে অনেক আলাদা। বৈচিত্র্য রয়েছে প্লেয়ারদের মধ্যে। এছাড়া খাবরা, শৌভিকের মত ভারতীয় ফুটবলার রয়েছে, যাঁদের ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে ধারণা রয়েছে, অভিজ্ঞতা রয়েছে। লাল হলুদ শিবির ডেডবল সিচ্যুয়েশনে ও সেটপিসে দারুণ। এবারের ডুরান্ড দেখে অন্তত আমার তেমনই মনে হয়েছে। 


তবে আমার মনে হয় রিজার্ভ বেঞ্চটা ভাবাবে কুয়াদ্রাতকে। মোহনবাগানের সঙ্গে যদি তুলনা করি, তবে অনেকটাই পিছিয়ে রিজার্ভ বেঞ্চের প্লেয়াররা।


কুয়াদ্রাতের কোচিং সম্পর্কে আপনার মতামত?


অর্ণব: বিশ্বমানের কোচ। ডার্বির অভিজ্ঞতা কম ফেরান্দোর থেকে। কিন্তু ভারতে কোচিং করিয়ে গিয়েছেন। ফলে এখানকার ফুটবল সংস্কৃতি সম্পর্কে জানেন। আর প্রথম ডার্বিতে জয় ছিনিয়ে নেওয়ায় কুয়াদ্রাতের আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে থাকবে। ছেলেদেরকেও সেই আত্মবিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে পারবেন। তবে সেই একটাই কথা যে ডার্বিতে সব দল, সব কোচই সবসময় একটা বাড়তি চাপ অনুভব করে।









অর্ণব: ক্লেটন দলে ঢোকার পর দলের ভারসাম্য আরও বেড়ে গিয়েছে। গত আইএসএলে এতগুলো গোল করেছেন। এবার প্রথম ডার্বির দিন ও উপলব্ধ ছিল না। কিন্তু এই ম্যাচে ক্লেটন ছন্দে থাকলে কিন্তু লাল হলুদের প্লাস পয়েন্ট। এছাড়া এলসি, সিভেরিও রয়েছেন। যাঁরা ডুরান্ডে ছন্দে রয়েছেন। 


আপনার চোখে আজকের ডার্বিতে লাল হলুদের তুরুপের তাস কে হবেন?


অর্ণব: অবশ্যই নন্দকুমারের কথা বলতেই হবে। আগের ডার্বিতে একটা বিশ্বমানের গোল এসেছে ওর পা থেকে। নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধেও গোল করেছে। গোলটা খুব ভাল করে চেনে। উইং ধরে যেভাবে এগিয়ে যায়, তার প্রশংসা করতেই হবে। আর দ্বিতীয় জন সিভেরিও।


নর্থ-ইস্ট ম্যাচে লাল হলুদের কিছু সমর্থকদের ব্যবহার ও গ্যালারিতে তাঁদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের বিদ্রুপ করার অভিযোগ উঠেছিল। অর্ণব ডার্বির আগে সমর্থকদের বলছেন, ''ক্লাবকে ভালবাসুন, অবশ্যই সমর্থন করুন, কিন্তু এমন কিছু কাজ করবেন না যাতে প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের আঘাত করে। কারণ তাঁদের ক্লাবও তাঁদের কাছে মায়ের মত।''