কলকাতা:ভারতীয় ক্রিকেটের 'মহারাজ' সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আজ জন্মদিন। ভারতীয় ক্রিকেটে 'দাদা' হিসেবে পরিচিত সৌরভ দলে বিদেশের মাটিতে জয়ের আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করেছিলেন। সেই 'প্রিন্স অফ কলকাতা' আজ ৪৮ বছরে পা দিলেন। ২০০০-এর দশক থেকে অধিনায়ক সৌরভের হাত ধরে রূপান্তর হয় ভারতীয় দলের। সৌরভ এমন একটা সময় নেতৃত্বভার গ্রহণ করেছিলেন, যখন এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছিল ভারতীয় ক্রিকেটকে।
এখন সৌরভ বিসিসিআই সভাপতি। অধিনায়ক হিসেবে তিনি যুবরাজ সিংহ, হরভজন সিংহ, বীরেন্দ্র সহবাগ, জাহির খান ও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো পরবর্তী কালের দুরন্ত ম্যাচ উইনারদের দলে সুযোগ দিয়েছিলেন। সৌরভের নেতৃত্বে ভারত ১৪৬ একদিনের ম্যাচে ৭৬ টিতে জেতে। হারে ৬৫ ম্যাচে। অমীমাংসিত ছিল পাঁচ ম্যাচ। একদিনের ক্রিকেটে সৌরভের সাফল্যের হার ৫৩.৯০ শতাংশ।

সৌরভের নেতৃত্বে ভারত ৪৯ টেস্টের মধ্যেজয়ী হয় ২১ টিতে, হার হয় ১৩ টেস্টে, ড্র ১৫ টেস্ট। টেস্টের সৌরভের নেতৃত্বে ভারতের সাফল্যের হার ৪২.৮৫ শতাংশ।
সৌরভের নেতৃত্বে ভারতীয় দলের ২০০২-এ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস জয় এখনও দলের সমর্থকদের স্মৃতিতে তরতাজা। লর্ডসের ব্যালকনিতে সৌরভের জার্সি ওড়ানোর ছবি এখনও অমলিন দলের সমর্থকদের স্মৃতিতে। এর এক বছর পর সৌরভের নেতৃত্বে ভারত পৌঁছে গিয়েছিল একদিনের ক্রিকেটের বিশ্বকাপের ফাইনালে। ১৯৮৩-র পর প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ভারত। যদিও সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যাওয়ায় বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি।


সৌরভ ১১৩ টেস্ট ও ৩১১ একদিনের ম্যাচ খেলেছেন। টেস্টে ৪২.১৮ গড়ে মোট ৭,২১২ রান করেছেন তিনি। রয়েছে ১৬ টি সেঞ্চুরি। ১৯৯৬-এ লর্ডসে অভিষেক ম্যাচেই শতরান করেছিলেন সৌরভ। টেস্টে ৩১ টি হাফসেঞ্চুরি ও ৩২ উইকেটও রয়েছে তাঁর নামে।
একদিনের ম্যাচে সৌরভ ২২ সেঞ্চুরি ও ৭২ অর্ধশতরান সহ ৪০.৭৩ গড়ে করেছেন ১১,৩৬৩ রান। একদিনের ক্রিকেটে তাঁর সংগ্রহে রয়েছে ১০০ উইকেটও।
সফল অধিনায়কের পাশাপাশি সৌরভ ছিলেন দুরন্ত ব্যাটসম্যানও। অধিনায়ক হিসেবে কখনও সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করতেন না তিনি। আর তাঁর হাত ধরেই বিশ্ব ক্রিকেটে প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসে ভারত। ব্যাট হাতেও দুরন্ত সব ইনিংস খেলেছেন সৌরভ। লর্ডসে সুইং ডেলিভারিই হোক বা ফিরোজ শাহ কোটলার ঘূর্ণি পিচ- বাঁহাতি সৌরভ সব ক্ষেত্রেই সফল হয়েছেন। এরমধ্যে অফ সাইডে তাঁর অসাধারণ দক্ষতা বোলারদের মনে ত্রাসের সঞ্চার করত। কভার দিয়ে বল বাউন্ডারিতে পাঠানো বা স্কোয়ার বাউন্ডারিতে তাঁর খেলার ক্ষমতা ছিল চমকপ্রদ। অফ সাইডে ফিল্ডিংয়ের ফাঁকফোকর অনায়াস দক্ষতায় খুঁজে নিতেন তিনি। আর এজন্যই গত অফ দ্য অফ-সাইড অভিধাও অর্জন করে নিয়েছিলেন তিনি।
২০০৮-এ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি।