কলকাতা: আগামী বিশ্বকাপ ফুটবল (এশীয় পর্ব) ও এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের যে গ্রুপবিন্যাস হয়ে গেল বৃহস্পতিবার, তাতে দেখা যাচ্ছে ভারত রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে। ভারতের গ্রুপে রয়েছে কাতার ও কুয়েত। এছাড়াও থাকবে আফগানিস্তান অথবা মঙ্গোলিয়ার মধ্যে যে কোনও একটি দল। এই দুই দলের মধ্যে প্লে-অফ ম্যাচে যারা জিতবে, তারা। ভারত সরাসরি খেলবে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে। যেহেতু ভারত এখন এশিয়ার ১৮ নম্বর দল, তাই তাদের সরাসরি দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে খেলার অধিকার দেওয়া হয়েছে।


ভারতের গ্রুপে তাদের চেয়ে ক্রমতালিকায় ওপরে থাকা একমাত্র দল কাতার। বাকি দু’টি দল ক্রমতালিকায় তাদের চেয়ে নীচে রয়েছে। প্রতি গ্রুপ থেকে দুটি করে দল তৃতীয় রাউন্ডে উঠবে। ফলে ভারতের তৃতীয় রাউন্ডে ওঠার সম্ভাবনা অবশ্যই রয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় ফুটবল দল এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে সে রকম মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। গত বিশ্বকাপের ও আসন্ন এশিয়ান কাপের আয়োজক কাতার এখন বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৫৯ নম্বরে রয়েছে। ভারত রয়েছে ৯৯ নম্বরে। কুয়েত ১৩৭-এ। আফগানিস্তান ১৫৭ ও মঙ্গোলিয়া ১৮৩ নম্বরে রয়েছে।


চলতি বছরে ভারত এ পর্যন্ত ১১টি ম্যাচ খেলেছে। তার মধ্যে ন’টিতে জিতেছে এবং দু’টিতে ড্র করেছে। অর্থাৎ এই বছরে এখন পর্যন্ত হারের মুখে দেখেনি ক্রোয়েশিয়ান কোচ ইগর স্টিমাচের প্রশিক্ষণাধীন ভারত। টানা আটটি ম্যাচে গোল খায়নি তারা। এমন ধারাবাহিকতা অনেকদিন দেখেনি ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা। এই ধারাবাহিকতার ফলে ফিফার বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৯৯ নম্বরে উঠে এসেছে ভারত। এই উন্নতিই আসন্ন বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ভারতকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাতে পারে।


এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভারত কি বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে উঠে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারবে? বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফা জানিয়েছে, ২০২৬-এ বিশ্বকাপের মূলপর্ব হবে ৪৮টি দেশকে  নিয়ে। এশিয়া থেকে আটটি দল খেলবে সেই বিশ্বকাপে। এ ছাড়াও আরও একটি এশীয় দেশ প্লে-অফের গণ্ডী পেরিয়ে মূলপর্বে উঠতে পারে।


কিন্তু বাছাই পর্ব থেকে কী ভাবে বিশ্বকাপের মূলপর্বে যাবে এশীয় দেশগুলি?


বাছাই পর্বের আসল লড়াই শুরু হবে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে যেখানে মোট ৩৬টি দলকে ৯টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। প্রতি গ্রুপে থাকবে চারটি দল। যেমন ‘এ’ গ্রুপে আছে কাতার, কুয়েত, ভারত এবং আফগানিস্তান বা মঙ্গোলিয়া। প্রতি দল হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে ছ’টি করে ম্যাচ খেলার পর প্রতি গ্রুপের সেরা দু’টি দল পৌঁছবে তৃতীয় রাউন্ডে। অর্থাৎ ন’টি গ্রুপের দুটি করে দল, মোট ১৮টি দল উঠবে তৃতীয় রাউন্ডে।


তৃতীয় রাউন্ডে ১৮টি দলকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হবে। অর্থাৎ, ছ’টি করে দল থাকবে প্রতি গ্রুপে। এখানেও হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে প্রতি দলকে মোট দশটি করে ম্যাচ খেলতে হবে দ্বিতীয় রাউন্ডের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কঠিন প্রতিদ্বন্দীর বিরুদ্ধে। এই তিন গ্রুপের সেরা দু’টি করে দল, অর্থাৎ মোট ছ’টি দল, ২০২৬ বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে সরাসরি। কিন্তু তিন ও চার নম্বর দলগুলির তখনও আমেরিকায় যাওয়ার আশা বেঁচে থাকবে। তাদের তখন খেলতে হবে চতুর্থ রাউন্ডে। অর্থাৎ, চতুর্থ রাউন্ডে ছ’টি দল উঠবে।


চতুর্থ রাউন্ডে ওঠা ছ’টি দলকে দু’টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। প্রতি গ্রুপে থাকবে তিনটি করে দল। এই রাউন্ডে প্রতি দলকে বাকি দুই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একবার করে খেলতে হবে নিরপেক্ষ ভেনুতে। দুই গ্রুপের এক নম্বর দলগুলি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার ছাড়পত্র পাবে। অর্থাৎ, এখানেই আটটি এশীয় দলের জায়গা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। কিন্তু এর পরেও পড়ে থাকবে আরও একটি স্থান।


সেজন্য আবার পঞ্চম রাউন্ড খেলতে হবে চতুর্থ রাউন্ডের দুই গ্রুপের রানার্স আপ দলগুলিকে। একে অপরের মধ্যে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে দুটি ম্যাচ খেলে যারা জয়ী হবে, তারা ইন্টার কনফেডারেশন প্লে-অফে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে।                              (তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল মিডিয়া)