কলকাতা: আইপিএল (IPL) সংসারে পা রেখেছেন গত মরসুমের মাঝপথে। তাঁর সঙ্গে চুক্তি করেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (Royal Challengers Bangalore)। কিন্তু প্রথম একাদশে সুযোগ হয়নি। বাইরে বসেই কেটেছিল।


বাংলার পেসার আকাশ দীপকে (Akash Deep) এবার ২০ লক্ষ টাকায় কিনেছে আরসিবি-ই। নতুন মরসুমের আগে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ডানহাতি পেসার। প্রথম একাদশে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন বাংলার আকাশ।


আইপিএল খেলতে মুম্বইয়ে পাড়ি দিয়েছেন। সেখানে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের শিবিরে যোগ দিয়েছেন। পা কেটে যাওয়ায় রঞ্জি ট্রফির গ্রুপ পর্বে বাংলার শেষ ম্যাচে খেলতে পারেননি। মুম্বই যাওয়ার আগে এবিপি লাইভকে আকাশ বললেন, 'পা কেটে গিয়েছিল। তবে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।'


গতবারও আরসিবি ড্রেসিংরুমে ছিলেন। সেই দলের হয়েই ফের আইপিএল গ্রহে প্রবেশ। আকাশ বলছেন, 'এই দলের সদস্য ছিলাম। আমার মধ্যে নিশ্চয়ই কিছু দেখেছেন আরসিবি কর্তারা যে, দ্বিতীয়বার সুযোগ দিয়েছেন। পরিচিত ড্রেসিংরুম। স্বচ্ছন্দ বোধ করি এই দলেই।'


বরাবর তারকাখচিত দল। তবে আইপিএল ট্রফি এখনও অধরা আরসিবি-র। আকাশ বলছেন, 'সত্যি কথা যে, আরসিবি কোনওদিন আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়নি। ভাল দলই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একমাত্র শর্ত নয়, ভাগ্যও জরুরি। তবে আমাদের ভক্ত সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আত্মবিশ্বাসী দলের সকলে। এবার আশা করছি সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।'


টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইকনমি ৬.৪২। অর্থাৎ, ওভার প্রতি সাত রানেরও কম খরচ করেছেন আকাশ। ২৫ বছরের পেসার বলছেন, 'সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাটারদের দাপট থাকে। তবে নিজের ভূমিকা জানতে হয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চার ওভার করতে হবে। আগাম জানতে হয় দল বা অধিনায়ক আমার কাছে ঠিক কী চায়। সেই মতো পরিকল্পনা করি। সেই ভাবে বল করি। তাতেই সাফল্য পাই।' যোগ করছেন, 'টি-টোয়েন্টিতে সেরা অস্ত্র হল আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস থাকলেই নিজের বলটা করা যায়। প্রত্যেক বল করার সময় নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হয়। স্লোয়ার করব বা ইয়র্কার করব আগে থেকে ভেবে রাখা যায় না। সব ব্যাটারদের এক বল করলেও চলে না। ব্যাটারদের মনস্ত্বত্ত্ব বুঝতে হয়। তবে আমি যদি ঠিক করি ব্যাটারকে ইয়র্কার দেব তো দেবই। স্লোয়ার দেব ঠিক করলে দেবই। সে ব্যাটারের নাম যাই হোক না কেন। নাম দেখে বল করি না কখনও।'


বিরাট কোহলির সঙ্গে এক ড্রেসিংরুমে থাকতে পারাটা কতটা ইতিবাচক? আকাশ বলছেন, 'বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। কোহলি ভাই যে পর্যায়ে খেলছে আর সেখানে যা নিষ্ঠা দেখায়, শেখার মতো। রাত বারোটায় ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেও সকালে প্র্যাক্টিস করতে হাজির হয়ে যেতে দেখেছি বিরাট ভাইকে।' যোগ করেছেন, 'মহম্মদ সিরাজ, হর্ষল পটেলের মতো জাতীয় দলে খেলা পেসারেরা রয়েছে আরসিবিতে। অনেক কিছু শেখা যায় ওদের থেকেও। ওরা আমার ভাল বন্ধু।'


আরসিবি-তে আকাশের অন্যতম সতীর্থ বাংলারই শাহবাজ আমেদ। দুজনে একসঙ্গে রাজ্য দলে খেলেন। দুজনই ভিন রাজ্যের তকমা মুছে বঙ্গ ক্রিকেটে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। সেই বোঝাপড়া কতটা সাহায্য করে? আকাশ বলছেন, 'বাংলার হয়ে খেলার বোঝাপড়া আইপিএলেও কাজে লাগবে। একে অপরের সঙ্গে কথা বলি, গল্প করি। একে অপরের শক্তি-দুর্বলতা জানি। আমার বা শাহবাজের কারও খেলায় কোনও সমস্যা চোখে পড়লে তা নিয়ে কথা বলি।'


আপাতত প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার প্রার্থনায় বাংলার পেসার।