মুম্বই: আইপিএলে (IPL) প্রথমবার পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা হল গুজরাত টাইটান্সের। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) বিরুদ্ধে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ম্যাচ জিতিয়ে তৃপ্ত কুলদীপ যাদব। আইপিএলের সারাদিনের সব খবর এক ঝলকে।


জয়ী হায়দরাবাদ


প্রথমবার আইপিএলে (IPL) নেমে জয়ের হ্যাটট্রিক গড়েছিলেন হার্দিক পাণ্ড্যরা (Hardik Pandya)। টানা তিন ম্যাচে জিতেছিল দল। কিন্তু গুজরাত টাইটান্সের (GT) জয়ের অশ্বমেধ সোমবার হ্যাঁচকা টানে থামিয়ে দিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (SRH)। ৮ উইকেটে হার্দিকদের হারিয়ে দিলেন কেন উইলিয়ামসনরা (Kane Williamson)। ৫ বল বাকি থাকতে গুজরাত টাইটান্সের ১৬২/৭ স্কোর পেরিয়ে ১৬৮/২ তুলে দিল হায়দরাবাদ।


ওপেনারদের দাপট


টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন। হার্দিক পাণ্ড্যর অপরাজিত হাফসেঞ্চুরির সুবাদে ১৬২/৭ তোলে গুজরাত। রান তাড়া করতে নেমে অবশ্য হায়দরাবাদের হাতে ম্যাচের রাশ তুলে দেন দুই ওপেনার কেন উইলিয়ামসন ও অভিষেক শর্মা। উইলিয়ামসন ৪৬ বলে ৫৭ রান করে আউট হন। ৩২ বলে ৪২ রান অভিষেকের। হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ৫৩ বলে ৬৪ রান যোগ করেন। শেষ দিকে ১৮ বলে ৩৪ রান করে গুজরাত টাইটান্সের স্বপ্নে জল ঢেলে দেন নিকোলাস পুরান।


পন্থকে পেরলেন হার্দিক


চলতি আইপিএলে (IPL) তিনি রানের মধ্যেই রয়েছেন। সোমবার পেলেন চলতি টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ৪২ বলে অপরাজিত ৫০ রান করে তিনিই এদিন গুজরাত টাইটান্সের (GT) সর্বোচ্চ স্কোরার। হার্দিক পাণ্ড্য (Hardik Pandya) আর একটি রেকর্ডও গড়ে ফেললেন। আইপিএলে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্য়ে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে একশো ছক্কা মারা হয়ে গেল বঢোদরার অলরাউন্ডারের।


হার্দিক ভেঙে দিলেন ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) রেকর্ড। ১২৩৪ বল খেলে একশো ছক্কা মেরেছিলেন পন্থ। সোমবারের ইনিংসে একটিমাত্র ছয় মেরেছেন হার্দিক। আর তাতেই ভেঙে দিয়েছেন পন্থের রেকর্ড। ১০৪৬ বল খেলে একশো ছক্কা মারা হয়ে গেল তাঁর।


কুলদীপের পুনর্জন্ম


এবারের আইপিএলে (IPL) যেন পুনর্জন্ম হয়েছে কুলদীপ যাদবের (Kuldeep Yadav)। ৪ ম্যাচে ১০ উইকেট। পার্পল ক্যাপ জেতার দৌড়ে রয়েছেন কুলদীপ। রবিবার ৪ উইকেট নিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স ব্যাটিংয়ের কোমর ভেঙে দিয়েছেন। সেই কেকেআর, যে দলে টানা উপেক্ষিত হতে হতে এক সময় মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন বিরল চায়নাম্যান স্পিনের পূজারি। রবিবার নাইটদের বিরুদ্ধে বাড়তি আগুন নিয়ে নেমেছিলেন। নিজের বলে উমেশ যাদবের উঁচু ক্যাচ অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় নেওয়ার পর কুলদীপের হুঙ্কারে যেন ছিল জবাব দেওয়ার প্রতিচ্ছবি। ম্যাচের সেরাও হয়েছেন তিনি।


গর্বিত কোচ


ছাত্রের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত কুলদীপের শৈশবের কোচ কপিল পাণ্ডে (Kapil Pandey)। কানপুরে যাঁর হাত ধরে কুলদীপের উত্থান। ফোনে এবিপি লাইভকে কপিল বললেন, 'লাগাতার ভাল বল করছিল। যে দল সুযোগ দিচ্ছিল না, সেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছিল। কাজে লাগিয়েছে।'


বাড়তি তাগিদ


কেকেআর ম্যাচের আগে থেকেই যেন ফুটছিলেন কুলদীপ। কপিল বলছেন, 'ম্যাচের আগে আমাকে ফোন করেছিল। বলেছিল, স্যার কাল ম্যাচ। বলেছিলাম, সাধারণ ম্যাচ হিসাবেই দেখো। ঠাণ্ডা মাথায় বল করো। ব্যাটার দেখে বল করো। সেই মতোই বল করেছে। ৪ উইকেট নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছে।'


অবজ্ঞার জবাব


কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর কুলদীপের সঙ্গে কথা হয়েছে? কপিল বলছেন, 'হয়েছে। ও ভীষণ খুশি। আমাকে বলল, স্যার পারফরম্যান্সেই সব জবাব দিলাম। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম, অভিষেক নায়ার বা টিম ম্যানেজমেন্টকে আলাদা করে কিছু বলার দরকার হয়নি।' কপিল যোগ করলেন, 'ওর চোট লেগেছিল। অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল। তবে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছিল। আত্মবিশ্বাসী ছিল। ভেতর ভেতর ফুটছিল।'


কেকেআরের খবর


দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছে। প্রথমে বল হাতে প্রচুর রান খরচ করা ও পরে ব্যাট করতে নেমে ৪৪ রানে হার। ম্যাচে কোনওকিছুতেই ঠিকঠাক কাজ করেনি কলকাতার জন্য। উমেশ-কামিন্স পেস জুটি অন্যান্য ম্যাচে ভাল পারফর্ম করলেও রবিবার নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। স্পিন জুটি বরুণ-নারিনও ফ্লপ। তবে তার থেকেও বেশি চিন্তার হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতার ওপেনিং জুটি। পাঁচটি ম্যাচ খেলা হয়ে গেল। প্রথম ম্যাচে ৪৪ রান বাদ দিলে বাকি ৪ ম্যাচে একের পর এক ফ্লপ অজিঙ্ক রাহানে। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে যে আইপিএলেও কী তাহলে সময় ঘনিয়ে এসেছে মুম্বইয়ের এই ব্য়াটারের। ভেঙ্কটেশ আইয়ারও এবার কোনও বড় ইনিংস ধারাবাহিকভাবে খেলতে পারছেন না। 


শ্রেয়সের বার্তা


দিল্লির বিরুদ্ধে হারলেও ফিরে আসার বার্তা দিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্স অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। নাইটদের তরফে সোশ্যাল সাইটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে শ্রেয়স বলছেন, "ভেঙে পড়ার কিছুই হয়নি। প্রত্যেকে একে অন্যকে সমর্থন কর, পাশে দাঁড়াও, ভরসা দাও। একে অন্যের খেয়াল রাখ। আমি নিশ্চিত, আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব।''