কলকাতা: আইপএলের সারাদিনের সব সেরা খবরের হাইলাইটস এক ঝলকে।


রসায়ন কী


প্রথমবার আইপিএল (IPL) খেলতে নেমেই হইচই ফেলে দিয়েছে গুজরাত টাইটান্স (Gujarat Titans)। গ্রুপ পর্বে ১৪ ম্যাচে ১০টি জয়। পয়েন্টের বিচারে অন্য সব দলের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কোয়ালিফায়ারেও দাপট দেখিয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্যরা (Hardik Pandya। ইডেনে (Eden Gardens) সহজে ম্যাচ জিতে পৌঁছে গিয়েছেন ফাইনালে। নতুন দল, নতুন সমস্ত ক্রিকেটার। অথচ এই অল্প সময়ে মাঠে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার নেপথ্যে কী?


আইপিএল ফাইনালের আগে ডেভিড মিলারের (David Miller) কাছে জানতে চেয়েছিল এবিপি লাইভ। জানতে চাওয়া হয়েছিল, গুজরাতের মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারে মিলার, রাহুল তেওয়াটিয়া, রশিদ খান মিলে যেরকম সব অবিশ্বাস্য ম্যাচ জিতিয়েছেন, তাতে তো প্রতিপক্ষ বোলাররা রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে থাকেন। বিষয়টা কতটা উপভোগ্য?


মিলার বলেন, 'টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চার, পাঁচ, ছয় ও সাত নম্বর ব্যাটারের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভাল শুরু করাটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যখন চাপ আসে, বিশেষ করে রান তাড়া করার সময় যখন ওভার প্রতি নির্দিষ্ট রান তুলতে হয়, তখন মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারের অবদান ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। মিডল অর্ডার শক্তিশালী হলে যে কোনও লক্ষ্য তাড়া করে ম্য়াচ জেতা যায়।'


সেই সঙ্গে গুজরাতের সাফল্যের মন্ত্রও জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা। বিধ্বংসী ব্য়াটিংয়ের জন্য ক্রিকেটবিশ্বে যিনি 'কিলার মিলার' নামে পরিচিত। 'এই মরসুমে যেটা আমাদের পক্ষে গিয়েছে সেটা হল দলীয় সংহতি। আমরা একে অপরের দক্ষতায় বিশ্বাসী। প্রত্যেকে প্রত্যেককে সমর্থন করে। এক এক ম্যাচে এক একজন ভাল খেলেছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছন্দ ধরে রাখা খুব জরুরি আর সেটা আমরা পেরেছি। দলের এক একজন ক্রিকেটার এক এক ধরনের প্রাণশক্তি যোগ করছে,' বলছিলেন মিলার। যোগ করলেন, 'আমাদের মরসুমটা অবিশ্বাস্য কাটছে। এমন সব ম্যাচ জিতেছি যা আগে কখনও দেখিনি। আমরা সেটাই করে দেখিয়েছি। অনেক কিছুই একত্রিত হয়ে আমাদের পক্ষে গিয়েছে। আমরা কাউকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি না। নিজেদের মতো করে খেলছি। খুব শান্ত, সংযত ও ফুরফুরে মেজাজে থাকছি। সেটাই আমাদের সাফল্যের মন্ত্র।'


বাইশ গজের বাইরে


রবিবার সন্ধ্যায় মহম্মদ শামি (Mohammed Shami) যখন কেরিয়ারের প্রথম আইপিএল (IPL) ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে আমদাবাদের নবনির্মিত নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে নামবেন, তিনি তখন ক্রিকেট থেকে কয়েক যোজন দূরে। একটা সময় আইপিএলের একটি শো-তেই শামির সঙ্গে তাঁর আলাপ, প্রেম, বিয়ে। কিন্তু এখন আইপিএল শুনলেই যেন বিরক্ত হন। মহম্মদ শামি কলকাতায় এসে প্লে অফ খেলে গিয়েছেন জানেন। কিন্তু কবে বা কাদের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচ ছিল, তা নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে।


হাসিন জাহানের (Hasin Jahan) কাছে এখন ক্রিকেট বা আইপিএল যেন ভিনগ্রহের কোনও প্রাণী!


শামির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। হাসিনের দিনের একটা বড় অংশ কেটে যায় আদালত আর আইনজীবীদের দফতরে। সেই সঙ্গে কন্যা আইরার পড়াশোনা, নাচের ক্লাস। নিজে ফের মডেলিংয়ে নামার চেষ্টা করছেন। এত ব্যস্ততার মাঝে আইপিএল নিয়ে ভাবার সময় কই!


শনিবার দুপুরে এবিপি লাইভকে হাসিন বললেন, 'আইপিএল দেখছি না। তাই কোনও খবরও বলতে পারব না।' শামি কলকাতায় খেলে গেলেন, ম্যাচ দেখেননি? একটা সময় ডানহাতি পেসারের ম্যাচ দেখতে ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) দৌড়ে যেতেন। কিন্তু এখন যেন ক্রিকেট নামেই বিরক্ত। হাসিন বললেন, 'শামি কলকাতায় খেলতে এসেছিল শুনেছি। কিন্তু আমি ক্রিকেট দেখি না। কাদের সঙ্গে, কবে ম্যাচ ছিল কিছুই জানি না। বরং ভাল কিছু সিনেমা দেখলাম। ভুলভুলাইয়া টু দেখলাম। অপরাজিত দেখলাম। বেবোও (মেয়ে আইরার ডাকনাম) খুব উপভোগ করেছে।'


আফগান ঝাঁঝ


টুর্নামেন্টের ১৫ বছরের ইতিহাসে এই নজির রয়েছে একমাত্র চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK)। সাল ২০১১। ঘরের মাঠ এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে আইপিএল (IPL) ফাইনাল খেলে সেরার শিরোপা জিতেছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা (MS Dhoni)।


তার ঠিক এগারো বছর পর ধোনিদের সেই কীর্তি স্পর্শ করার সুযোগ গুজরাত টাইটান্সের (GT) সামনেই। কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবেই। অপ্রত্যাশিত কারণ, এবারের টুর্নামেন্ট শুরুর আগে না ঠিক ছিল কারা ফাইনালে খেলবে, না চূড়ান্ত ছিল ফাইনালের কেন্দ্র। পরে ঠিক হয় যে, ফাইনাল হবে আমদাবাদের নবনির্মিত নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। আর ফাইনালে উঠে ধোনিদের কীর্তি স্পর্শ করার সুযোগ করে নিয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্য, রশিদ খান, রাহুল তেওয়াটিয়া-রা।


ধোনিদের নজির স্পর্শ করার হাতছানিকে কীভাবে দেখছেন? রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ফাইনালের আগে এবিপি লাইভের প্রশ্নে গুজরাত দলের সহ-অধিনায়ক তথা সেরা স্পিন-অস্ত্র রশিদ খান (Rashid Khan) জুম কলে বললেন, 'শুধু সিএসকে ঘরের মাঠে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমাদের সামনে সেই সুযোগ রয়েছে। তবে এসব ভেবে মাঠে নামব না। আমরা এখনও পর্যন্ত ভাল ক্রিকেট খেলেছি। অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলেছি বলেই আমরা আজ এখানে (পড়ুন ফাইনালে)।'


ঋদ্ধি-শো


এবারের আইপিএলটা (IPL) বেশ অন্য়রকম কাটছে রোমির (Romi Mitra)। ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha) নতুন দলের হয়ে নিজেরে পুণঃপ্রতিষ্ঠা করছেন। পারফরম্যান্স দিয়ে সমস্ত সমালোচনার জবাব দিচ্ছেন। আর তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ডামাডোলের সময় স্ত্রী সঙ্গে থাকতে পারছেন না। আগলে রাখতে পারছেন না। দুই সন্তানের কথা ভেবে বায়ো বাবলে প্রবেশ করেননি রোমি। ইডেনে প্লে অফের ম্যাচ দেখেছিলেন গুজরাত টাইটান্সের জন্য বরাদ্দ বক্সে। অন্যান্য ক্রিকেটারের পরিবারের মতো বায়ো বাবলের বক্সে বসা হয়নি।


তবে ইডেনে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে প্রথম কোয়ালিফায়ার দেখার ফাঁকে রোমি এবিপি লাইভকে বলেছিলেন, ফাইনাল দেখতে আমদাবাদ যেতে পারেন। জানিয়েছিলেন, আইপিএল ফাইনাল খেলার সুযোগ তো বড় একটা পাওয়া যায় না। তাই এই মাহেন্দ্রক্ষণ মাঠে থেকে দেখতে চেয়েছিলেন রোমি।


কিন্তু বিধি বাম হলে যা হয়। আচমকাই দাঁতের যন্ত্রণায় কাবু রোমি। পরিস্থিতি এমনই হয়ে দাঁড়ায় যে, যন্ত্রণায় কাতর রোমি তাঁর দাঁত তুলতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর আমদাবাদ যাওয়াও হচ্ছে না। শহরে বসেই গুজরাতের হয়ে গলা ফাটাবেন ঋদ্ধির ঘরণি।


এবিপি লাইভকে রোমি জানালেন, দাঁতের ব্য়থায় কাবু হয়ে পড়েছেন। তাই তাঁর আমদাবাদ যাওয়ার পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত। কলকাতায় বসেই ম্যাচ দেখবেন।