হায়দরাবাদ: ম্যাচ জিততে প্রয়োজন ছিল আইপিএলের সর্বকালীন রেকর্ড ২৮৭ রান। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে রাজস্থান রয়্যালস শুরুটা খুব একটা ভাল করতে পারেনি। তবে মিডল অর্ডারের সুবাদে লড়াই চালান তাঁরা। তা সত্ত্বেও জয় অবশ্য অধরাই রয়ে গেল। শেষমেশ ছয় উইকেটে ২৪২ রানে থামল রাজস্থান। ৪৪ রানে ম্যাচ জিতে আইপিএল (IPL 2025) অভিযান শুরু করল সানরাইজার্স। তবে সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson), ধ্রুব জুরেলরা (Dhruv Jurel) নিজেদের ব্যাটিংয়ে অনন্ত লড়াইটা দেখালেন।


রাজস্থানের জন্য এই ম্যাচে ইতিবাচক দিক বলতে এটাই। যে ম্যাচে সব মিলিয়ে ৫০০-র অধিক রান উঠেছে, সেখানে চার ওভারে বল হাতে ৩৪ রানে দুই উইকেট নিয়ে নজর কাড়লেন হর্ষল পটেল (Harshal Patel)। রেকর্ড রান তাড়া করে জিততে হলে শুরুটা ভাল করার প্রয়োজন ছিল। যশস্বী জয়সওয়াল বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাটিং করার জন্য পরিচিতও বটে। তবে মাত্র এক রানে তাঁকে সাজঘরে ফেরান সিমরনজিৎ সিংহ। ওই একই ওভারে চার রানে স্ট্যান ইন রাজস্থান অধিনায়ক রিয়ান পরাগেরও উইকেটটি নেন তিনিই। পাওয়ার প্লে শেষের আগেই নীতীশ রানাকে মহম্মদ শামি ফেরালে ৫০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে রাজস্থান।


এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে হাল ছাড়েননি স্যামসন ও জুরেল। ৫৯ বলে দুইজনে মিলে ১১১ রান যোগ করেন। স্যামসন ২৬ ও জুরেল ২৮ বলে নিজেদের অর্ধশতরান পূরণ করেন। তবে ঠিক যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচে অবিশ্বাস্য় কিছু হলেও হতে পারে, তখনই জোড়া ধাক্কা। তিন বলের ব্যবধানে স্যামসন ও জুরেল, উভয়েই সাজঘরে ফেরেন।


কিন্তু এই আইপিএলে ম্যাচ হারলেও নেট রান রেটের কথা মাথায় রেখে সকল দলই বড় ব্যবধানে হার এড়াতে চাইবে। সেই লক্ষ্যেই শিমরন হেটমায়ার ও শুভম দুবে ব্যাট চালিয়ে যান। দুইজনে ৮০ রান যোগ করেন। হেটমায়ার ২৩ বলে ৪২ রানে আউট হন আর শুভম ১১ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন।


এর আগে প্রথম ইনিংসে মারকাটারি মেজাজে শুরুটা করেছিলেন হেড এবং অভিষেক শর্মা। অবশ্য অভিষেকের ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২৪ রানেই থামতে হয় তাঁকে। তবে হেড ও ঈশান কিষাণ বিধ্বংসী মেজাজে ব্য়াটিং চালিয়ে যান। মাত্র ২১ বলে অর্ধশতরান পূরণ করেন হেড। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই ৯৪ রান তুলে ফেলে সানরাইজার্স। হেডকে তুষার দেশপাণ্ডে ৬৭ রানে ফেরালেও ঈশান কিষাণ কিন্তু থামেননি। তিনি বিধ্বংসী ব্যাটিং চালিয়ে যান। ২৫ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি।  


হেনরিখ ক্লাসেন ও নীতীশ রেড্ডি বড় রান করতে না পারলেও, ঈশান কিষাণকে যোগ্য সঙ্গ দেন। রানের গতি যাতে কোনওভাবেই না কমে, সেইদিকে নজর রাখেন তাঁরা। ক্লাসেন ১৪ বলে ৩৪ ও নীতীশ ১৫ বলে ৩০ রান করেন। শতরানের কাছাকাছি পৌঁছলেও কিন্তু ঈশান এদিন থামেননি। পরিস্থিতি অনুযায়ী যা প্রয়োজনীয় ছিল, তেমনই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করে যান তিনি। দশটি চার ও ছয়টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৪৫ বলে আসে তাঁর প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি।


ইশান শেষমেশ ১০৬ রানে অপরাজিত থাকেন। রাজস্থানের জার্সিতে নিজের প্রত্যাবর্তন ম্যাচে রেকর্ড গড়লেন জোফ্রা আর্চার। তবে এ রেকর্ড লজ্জার। নিজের চার ওভারে কোনও উইকেট না নিয়ে ৭৬ রান খরচ করেন তিনি। এক ম্যাচে চার ওভারে এত রান আর কোনও বোলার খরচ করেননি।