সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তিনি মাঠে থাকা মানেই জনতা জনার্দন শুধু তাঁকেই দেখবে। তাঁর হয়েই গলা ফাটাবে। কয়েকদিন আগেই যা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ করছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের এক কর্তা। বলছিলেন, 'বিরাট কোহলি (Virat Kohli), মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের (MS Dhoni) বিরুদ্ধে আমরা ঘরের মাঠে খেললেও মানুষ ওদের হয়ে গলা ফাটায়।'
শনিবারই সেই ছবির ব্যতিক্রম হয়নি। ইডেন হয়ে রইল বিরাট-ময়। দেখে কে বলবে যে, অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে নেমেছেন কোহলি? ইডেনে তিনিই যেন কিংগ। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর নামে উঠল জয়োধ্বনি। খোদ কেকেআর মালিক শাহরুখ কিংগ খান পর্যন্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোহলিকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে দারুণ দারুণ প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন। এমনকী, গ্যালারিকে কোহলি-কোহলি স্লোগান তুলতেও বললেন।
কেকেআরের মালিক হয়তো ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি যে, ম্যাচে এভাবে তাণ্বব চালাবেন বিরাট। তাঁর ৩৬ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস কেকেআর শিবিরে আঁধার নামাল। প্রথম ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়ল গতবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কেকেআর।
তবে ম্য়াচে কোহলি ব্যাটিং করার সময় তৈরি হল এক নাটকীয় মুহূর্তও। আরসিবি ইনিংসের তখন ১৩তম ওভার। ম্যাচ কার্যত কেকেআরের হাতের বাইরে। বল করছিলেন হর্ষিত রানা। সেই হর্ষিত, গত আইপিএলে কেকেআরের জার্সিতে যিনি নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। যা তাঁর সামনে জাতীয় দলের দরজাও খুলে দিয়েছিল।
সেই হর্ষিতের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মারলেন কোহলি। পূর্ণ করলেন হাফসেঞ্চুরি। আইপিএলে তাঁর ৫৬তম হাফসেঞ্চুরি। ঠিক সেই সময়ই হাই কোর্ট প্রান্তের জি ব্লক থেকে দেখা গেল এক তরুণ লোহার ব্যারিকেড টপকে মাঠে প্রবেশ করেছেন। পরনে টি শার্ট ও ট্রাউজার্স। মাঠে আরসিবির ব্যান্ডানা। মাঠে ঢুকেই দৌড় শুরু করলেন। উদ্দেশ্য কোহলি। সোজা দৌড়ে গিয়ে কোহলির পায়ে শুয়ে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করলেন। যেন প্রিয় নায়ককে কাছ থেকে দেখে মন্ত্রমুগ্ধ। তারপরই জড়িয়ে ধরলেন কোহলিকে।
নিরাপত্তারক্ষীরা মাঠে দৌড়ে ঢুকে সেই যুবককে পাকড়াও করে নিয়ে এলেন মাঠের বাইরে। শোনা গেল, ময়দান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে ।
যদিও কানায় কানায় উপচে পড়া ইডেন অবাক হয়নি । কোহলির জন্য এরকম পাগলামি থাকবে না তো আর কার জন্য ?