কলকাতা: ইডেন কোনওদিনই কাউকে খালিহাতে ফেরায়নি। তা হরভজন সিংহ হোক, তা ভিভিএস লক্ষ্মণ হোক বা কিং কোহলি হোক। গতকালের পর সেই তালিকায় নাম খোদাই হয়ে গেল এক অচেনা তরুণের। অবশ্য কালকের পর থেকে তাঁকে অচেনা বলাটাও বোধহয় ভুল। কারণ আরসিবি বনাম লখনউ ম্যাচের পর থেকে গুগল, ট্যুইটার সোশ্য়াল মিডিয়ায় সব জায়গাতেই ট্রেন্ডে তো শুধুই তিনি। রজত পাতিদার। মধ্যপ্রদেশের ২৯ বছরের এই রজতের দুরন্ত শতরানই তো আইপিএলে আরসিবির ট্রফি জয়ের স্বপ্ন এখনও জিইয়ে রেখেছে। নিলামে তোলা হয়নি রজতকে। কিন্তু চোট পাওয়া এক ক্রিকেটারের বদলি হিসেবেই পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন স্কোয়াডে। তবুও আদৌ প্রথম একাদশে সুযোগ কতটা মিলবে তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন নিজেই। গতকাল ম্যাচের পর রজত বলছিলেন, ''আমাকে নিলামে তোলা হয়নি, তবে সেই সময়টা আমি অনুশীলনে জড়িত ছিলাম এবং এটাই আমাকে সাহায্য করেছে।'' পরিশ্রমের যে কোনও বিকল্প নেই, তার প্রমাণ যদি দীনেশ কার্তিক হয়ে থাকেন, তবে খুব একটা দূরে থাকবেন না রজত পাতিদারও। 


নায়ক রজত









কোহলি পারেননি। ইনিংস ওপেন করতে নেমে ২৪ বলে ২৫ রানে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। কোহলির জন্য সাজানো মঞ্চে বুধবার দেখা গেল রজত-রাজ। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৫৪ বলে ১১২ রান করে অপরাজিত রইলেন মধ্যপ্রদেশের ব্যাটার রজত পাতিদার (Rajat Patidar)। মাত্র ৪৯ বলে সেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করলেন।


কে এই রজত পাতিদার?


মধ্যপ্রদেশের এক ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম রজতের। পাইপের ব্যবসা ছিল রজতদের। তাঁর বাবা- মা চেয়েছিলেন যে ছেলে ভবিষ্যতে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেবেন। কিন্তু কোনওদিনই ব্যবসায় আগ্রহ ছিল না রজতের। অনূর্ধ্ব ১৫ বয়সভিত্তির টুর্নামেন্টে যখন খেলতে গিয়েছিলেন নিজেকে পেস বোলার হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। মিচেল স্টার্ক পছন্দের বোলার। কিন্তু উচ্চতা কম হওয়ায় কোচ বলেন ব্যাটিংয়ে মন দিতে। ব্যস বদলে যায় জীবনের গতিপথ। ঘরোয়া ক্রিকেটে এরপর রান পেতে থাকেন রজত। কিন্তু আইপিএলের নিলামে জায়গা হয়নি। তবে হাল ছাড়েননি। সিসোদিয়া চোট পাওয়ায় ভাগ্য খুলে যায় ২৯ বছরের তরুণের সামনে। আজ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জ্বলে উঠে সবাইকে বুঝিয়ে দিলেন তিনি যে লম্বা রেসের ঘোড়া।