কলকাতা: সোমবার ঘরের মাঠে যাদের বিরুদ্ধে আইএসএল অভিযান শুরু করছে ইস্টবেঙ্গল এফসি, সেই জামশেদপুর এফসি সম্পর্কে যে খুব বেশি কিছু জানেন না তাঁরা, তা এক প্রকার স্বীকারই করে নিলেন তাদের কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। কিন্তু তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন তিনি। কুয়াদ্রাত মনে করেন, তাঁদের দল যদি নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে পারে, তা হলে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বেশি কিছু না জানাটা কোনও সমস্যা হয়ে উঠবে না।
রবিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে লাল-হলুদ বাহিনীর কোচ বলেন, “জামশেদপুর সম্পর্কে আমরা বেশি কিছু জানি না। তবে এটা কোনও অজুহাত নয়। আমাদের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। ভাল খেলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। মরশুমের প্রথম ম্যাচ জিততে হবে। এটা কোনও বড় ব্যাপার নয়। আমরা আমাদের মতো খেলব”।
লিগের প্রথম ম্যাচ জেতা যে খুবই জরুরি, তা জানিয়ে কুয়াদ্রাত বলেন, সোমবার তারা জয় দিয়ে শুরু করতে চান শুধু নিজেদের আত্মবিশ্বাসের জন্য নয়, সমর্থকদের জন্যও। বলেন, ''প্রথম ম্যাচ জেতা খুবই জরুরি। সমর্থকদের জন্য তো বটেই, আমাদের জন্যও। সমর্থকেরা বরাবর আমাদের পাশে রয়েছেন। তাদের কথা ভেবে আমাদের সাফল্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দলের মানসিকতা, গতিশীলতা বদলেছে। ঘরের মাঠে ছ’টা ম্যাচ খেলে ফেলেছি আমরা। তাতে সমর্থকেরা আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। এ বার তাদের কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার পালা।''
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে কোচের সঙ্গে ছিলেন অধিনায়ক হরমনজ্যোৎ সিং খাবরা। ৩৫ বছর বয়সী খাবরা ইস্টবেঙ্গলে ফিরছেন সাত বছর পরে। লাল-হলুদ বাহিনীর হয়ে ৭৮টি ম্যাচ খেলেছেন। চারটি গোলও আছে তাঁর। ২০১৬-র জুলাইয়ে ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে তিনি চেন্নাইন এফসি-তে যোগ দেন।
সাত বছর বলে যখন লাল-হলুদ শিবিরে ফিরলেন, তখন এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। গত তিন মরশুমে ব্যর্থতার পরে ইস্টবেঙ্গলের সামনে আসা এই ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে খাবরা বলেন, “পেশাদারদের সবসময়ই কড়া চ্যালেঞ্জ সামলাতে হয়। এটা আমি সারা জীবন দিয়ে শিখেছি। বেঙ্গালুরুতে যখন খেলতাম, তখনও অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। কেউ মনে করত না, আমি একজন বল প্লেয়ার। কেরালা ব্লাস্টার্সে খেলার সময় একেবারে নীচ থেকে উঠে এসে আমরা ফাইনালে পৌঁছই। এই চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা সারা জীবনই করেছি। কোচ আমাকে যে বড় দায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালন করাটাই আমার কাছে বড় কাজ”।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “অনুশীলনে আমরা যা করি, তার একশো শতাংশ যদি ম্যাচে দিতে পারি তা হলে সফল হব। এটা টিম গেম। কোনও একজনের ভাল বা খারাপ খেলায় গোটা দলের কিছু এসে যায় না। পুরো দলকে ভাল খেলে যেতে হবে। এটা নক আউট নয় যে একটা ম্যাচে ভুল করলেই সব শেষ। নিজেদের শোধরানোর সময় ও সুযোগ পাওয়া যাবে। আমাদের একশো শতাংশেরও বেশি দিতে হবে। ইস্টবেঙ্গলকে জেতাতে হবে। সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে হবে”।
সাত বছর পরে কলকাতার দলে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইস্টবেঙ্গলে ফিরতে পেরে আমি খুবই খুশি। আমি সৌভাগ্যবান। কোচের এই প্রকল্পে থাকতে পারাটা আমার কাছে বড় ব্যাপার। ২০১৬-য় যখন ইস্টবেঙ্গলে ছেড়ে যাই, তখন সমর্থকদের মধ্যে যে উন্মাদনা দেখেছিলাম, এখনও একই আছে। গত কয়েক বছরে আমি এর অভাব টের পেয়েছি। এ বার সমর্থকদের জন্য ভাল কিছু করতে চাই”।