কলকাতা: ঘরের মাঠে কেরালা ব্লাস্টার্স খেলতে নামা মানেই জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে শুধু হলুদ রঙের হাজার হাজার জার্সি, শয়ে শয়ে ব্লাস্টার্স সমর্থকদের পোস্টার ও প্রিয় দলের সমর্থনে আকাশ ফাটানো চিৎকার, যা চলে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। এই পরিবেশে অতিথি দলের খেলোয়াড়দের স্নায়ু ধরে রাখাটা যে কঠিন, তা এর আগে অনেক ফুটবলারই বলেছেন। 


মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস অবশ্য চান, এই পরিবেশকেই কাজে লাগাক তাঁর দলের ফুটবলাররা। প্রতিপক্ষের সমর্থকদের চিৎকারেই নিজেদের উজ্জীবিত করে তুলুক তারা। বুধবার কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে মাঠে দল নামানোর আগে দলের ছেলেদের বোধহয় সেই পাঠই পড়াবেন তিনি। কী করে বিপক্ষের সমর্থকদের চিৎকারে নিজেদের উজ্জীবিত করে তুলতে হয়, তার পাঠ। 


মঙ্গলবার কোচি উড়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের হাবাস বলেন, ''কোচির পরিবেশে, সমর্থকদের চিৎকারে আমাদের ছেলেদের উজ্জীবিত হতে হবে। মানসিকতায় বদল আনতে হবে। এত দর্শকের মাঝে খেলা তো ভাল। গ্যালারিতে এক হাজার লোক থাকার চেয়ে ভরা গ্যালারির সামনে খেলতে ভাল লাগে। আমরা পেশাদার। আমাদের এ ভাবেই ব্যাপারটা দেখতে হবে।''


কিন্তু বুধবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামার পর কী হবে, তার চেয়ে বেশি কোচ চিন্তিত, ম্যাচের আগে দলের ফুটবলারদের কী ভাবে ফের একটা কঠিন ম্যাচ খেলার জায়গায় নিয়ে আসবেন। আসলে রবিবার ডার্বি খেলার দু’দিন পরই বুধবার কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচ। যতই গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে হারুক ব্লাস্টার্স, দল হিসেবে তারা যে যথেষ্ট শক্তিশালী তা সম্প্রতি টের পেয়েছে এফসি গোয়া, যেদিন ৮১ মিনিট পর্যন্ত ২-১-এ এগিয়ে থাকার পরও ২-৪-এ হেরে মাঠ ছাড়ে তারা। এই কোচিতেই ঘটেছিল সেই কাণ্ড। 


তাই কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ যে বেশ কঠিন, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই হাবাসের। বলেন, ''তীব্রতার দিক থেকে এই ম্যাচটা ডার্বির চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। প্রতিপক্ষকে ঠিকমতো বিশ্লেষণ করা খুব জরুরি। ওখানকার পরিবেশ কেমন হবে, প্রতিপক্ষ শিবির থেকে কোন কোন অস্ত্র ধেয়ে আসতে পারে, আমরা জানি। কিন্তু আমাদের নিজেদের নিয়ে ভাবা বেশি জরুরি। বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে খেলা দরকার এই ম্যাচটা। কী ভাবে, সেটাই ঠিক করতে হবে আমাদের।''


কিন্তু তাঁর চিন্তা, এমন কঠিন ম্যাচের আগে যথেষ্ট প্রস্তুতির অভাব। যা নিয়ে হাবাস বলেন, ''এই ম্যাচের জন্য প্রস্তুতির সুযোগই পাইনি আমরা। একটা ম্যাচ হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরই আর একটা ম্যাচ, সে ভাবে ভাবনা-চিন্তাও করতে পারিনি ম্যাচটা নিয়ে। কাজটা খুব কঠিন। কিন্তু আমরা পেশাদার। আমাদের তো মাঠে নামতেই হবে।'' 


নিজের দলের যথেষ্ট প্রস্তুতির অভাব, প্রতিপক্ষ শক্তিশালী, তার ওপর ঘরের মাঠে খেলছে। তা হলে কি বুধবার ড্র করলেই যথেষ্ট? এমন প্রশ্ন যে পছন্দ নয়, তা সবুজ-মেরুন কোচের উত্তর শুনে আগেও বোঝা গিয়েছিল। এ দিনও একই উত্তর দেন তিনি। বলেন, ''কোনও ম্যাচেই ড্র বা হার নিয়ে ভাবি না আমি। সব ম্যাচেই তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্যই মাঠে দল নামাই। কালও জেতার জন্যই আমার দল নামবে। এখন আমাদের সব ম্যাচেই জিততে হবে। তা হলে আর কোনও জটিল অঙ্কের হিসাব কষতে হবে না।''                                                                              তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল মিডিয়া