আমদাবাদ: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) আমদাবাদের বিমান ধরতে যাওয়ার আগে বেহালার বাড়িতে বসে বলে গিয়েছিলেন, অঘটন না ঘটলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হাসতে হাসতে জিতবে ভারত (Ind vs Pak)।
কিন্তু তারপরেও টস জিতে রোহিত শর্মা যখন প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন, অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন। এত বড় ম্যাচে কী দরকার ছিল প্রতিপক্ষকে প্রথমে ব্যাটিং করতে পাঠানোর? এবার যদি বড় একটা স্কোর চাপিয়ে দেয় ঘাড়ের ওপর? রেকর্ডও তো সেই আশঙ্কাকে আরও উসকে দেওয়ার বন্দোবস্ত করে ফেলেছে ততক্ষণে। পরিসংখ্যান বলছে, ওয়ান ডে বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত সাত সাক্ষাতের সাতবারই জিতেছে ভারত। কিন্তু তার মধ্যে ৬ বার শুরুতে ব্যাট করে। একবারই ব্যতিক্রম। ২০০৩ সালে সেঞ্চুরিয়নে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রান তাড়া করে জিতেছিল ভারত। ওয়াসিম আক্রম-শোয়েব আখতারদের পিটিয়ে ম্যাচ বার করে দিয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। শনিবার যিনি বিশ্বকাপ ট্রফিটা নিয়ে মাঠে ঢুকলেন।
কিন্তু সব উদ্বেগ, আশঙ্কা ঘুচে গেল ৪২.৫ ওভারে। মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে গেল পাকিস্তান। ৩৬ রানে শেষ আট উইকেট হারাল পাক শিবির। ১৫৫/২ থেকে ১৯১ রানে অল আউট। ওয়ান ডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৮-০ করার জন্য ভারতকে তুলতে হবে ১৯২ রান।
রোহিত অবশ্য টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। বলেছিলেন, 'এখানকার পিচ দুর্দান্ত। দুই ইনিংসেই পিচের চরিত্র খুব একটা বদলাবে না। পরের দিকে শিশির পড়বে। সেটা বিরাট একটা ভূমিকা নিতে পারে। সেই কারণেই শুরুতে ফিল্ডিং করে নেওয়া।'
ম্য়াচের শুরুর এক ঘণ্টা কিন্তু ছবিটা অন্যরকম ছিল। পাকিস্তানের ওপেনারেরা ভাল শুরু করেছিলেন। ৮ ওভারে ৪১ রান যোগ করেছিলেন আগের ম্যাচের নায়ক আবদুল্লা শফিক ও ইমাম উল হক। প্রথম ওভারেই যশপ্রীত বুমরাকে বাউন্ডারি মেরেছিলেন শফিক। পরের ওভারে মহম্মদ সিরাজ়কে তিনটি চার হাঁকান ইমাম। তখন মনে করা হয়েছিল, টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে কি আত্মহনন করলেন রোহিত?
তবে যে সিরাজ়কে বর্ণ-ছন্দহীন দেখাচ্ছিল, তিনিই পাক শিবিরে প্রথম ধাক্কা দেন। শফিককে ফিরিয়ে দেন ব্যক্তিগত ২০ রানে। হার্দিক পাণ্ড্যর বলে ফেরেন ইমাম (৩৬)। কিন্তু এরপরই প্রত্যাঘাত পাকিস্তানের সেরা দুই ব্যাটারের। বাবর আজ়ম ও মহম্মদ রিজ়ওয়ান। বাবর রান পাচ্ছিলেন না চলতি বিশ্বকাপে। মহম্মদ আমির শুক্রবারই এবিপি লাইভকে বলেছিলেন যে, হয়তো ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচেই দেখা যাবে বাবরের সেরা ইনিংস। ম্যাচের শুরুতে সেরকম ইঙ্গিতও ছিল। অন্য়দিকে শ্রীলঙ্কা বধের নায়ক রিজ়ওয়ানকেও ছন্দে দেখাচ্ছিল। তৃতীয় উইকেটে দুজনে ৮২ রান যোগ করে পেলেন দুজনে। ততক্ষণে অনেকে ধরেই নিয়েছেন যে, তিনশো তুলবে পাকিস্তান।
কিন্তু অন্য়রকম কিছু ভেবেছিলেন ভারতীয় বোলাররা। বাবরের হাফসেঞ্চুরি হওয়ার পরেই তাঁকে বোল্ড করে দেন সিরাজ়। সউদ শাকিল ও ইফতিকার আমেদকে ফিরিয়ে দেন কুলদীপ যাদব। যশপ্রীত বুমরার অসাধারণ ক্রস সিম ডেলিভারি রিজ়ওয়ানের অফস্টাম্প ভেঙে দেয়। গ্রিপ বুঝতে না পেরে আগে ব্যাট চালিয়ে বসেন রিজ়ওয়ান। শাদাব খানকেও বোল্ড করে দেন বুমরা। পাক ব্যাটিংয়ের লেজ মুড়িয়ে দিতে সমস্যা হয়নি হার্দিক-রবীন্দ্র জাডেজাদের।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন