কুন্তল চক্রবর্তী, দিল্লি: অলিম্পিক্সে হকিতে পদক জয়ের লক্ষ্যে ভারতের পুরুষ হকি দল মঙ্গলবার সেমিফাইনালে মুখোমুখি বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে। ৪১ বছর পর হকিতে পদক জয়ের হাতছানি ভারতের সামনে। ৪৯ বছর পর পুরুষদের হকিতে অলিম্পিক্সের সেমিফাইনালে উঠেছে ভারত। গ্রুপ লিগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল ভারত। কিন্তু সেই হারের ধাক্কা কাটিয়ে ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে মাত্র এক কদম দূরে ভারত। ওই হারের পরও টানা চারটি ম্যাচ জিতে এই ভারতীয় দল প্রমাণ করে দিয়েছ যে, তারা গত তিন দশকের ভারতীয় দলগুলির তুলনায় অনেকটাই আলাদা।
হকিতে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ভারতের রেকর্ড কেমন, তা জেনে নেওয়া যাক। একে অপরের বিরুদ্ধে ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাবে যে দুটি দল ১৭ বার মুখোমুখি হয়েছে। এরমধ্যে ভারত জয় পেয়েছে মাত্র পাঁচ বার। অন্যদিকে, বেলজিয়াম ভারতকে হারিয়েছে নয় বার। তিনটি ম্যাচ থেকেছে অমীমাংসিত।
আন্তর্জাতিক হকি র্যাঙ্কিংয়ে দুই নম্বর স্থানে রয়েছে বেলজিয়াম। বেলজিয়াম দল চলতি অলিম্পিক্সে ৬ ম্যাচে ২৯ গোল করেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে তারা গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ২-২ ড্র করেছিল। সম্প্রতি ইউরোপে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ভারত বেলজিয়ামকে হারিয়েছিল। কাজেই বিশ্বের দুই নম্বর দলের বিরুদ্ধে ভারতের জয়ের পথ কঠিন হলেও অসম্ভব কিন্তু নয়।
কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত হারিয়ে দিয়েছে গ্রেট ব্রিটেনকে। ৩-১ গোলে জয় পেয়েছে ভারত।
গ্রুপ পর্বে বরবরই অপ্রতিরোধ্য ছিল ভারতীয় হকি দল। শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই হারতে হয়েছিল ভারতকে। ৭-১ গোলে হারতে হয়েছিল সেই ম্যাচে মনপ্রীত, দিলপ্রীতদের। কিন্তু ওই একটি ম্যাচ বাদ দিলে বাকি কোনও ম্যাচেই আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় ভারতীয় দলকে। সব ম্যাচেই দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া।
উল্লেখ্য, ভারতীয় হকি দল গত ৪১ বছরে অলিম্পিক্সে কোনও মেডেল পায়নি। মেডেলের এই খরা কাটাতে স্বাভাবিকভাবেই মুখিয়ে থাকবে ভারত। টোকিও অলিম্পিক্সে ভারত এখনও পর্যন্ত ৬ ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই জয়ী হয়েছে।
বেলজিয়াম এখনও পর্যন্ত অলিম্পিক্সে সোনার পদক জেতেনি। যদিও ২০১৬-র রিও অলিম্পিক্সে রুপোর পদক জিতেছিল তারা। এর আগে ১৯২০-তে বেলজিয়ামের হকি দল ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল।
অন্যদিকে, ভারতের পুরুষ হকি দল অলিম্পিক্সের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত ১১ পদক জিতেছে। এরমধ্যে রয়েছে আটটি সোনা, একটি রুপো ও দুটি ব্রোঞ্জ। ভারতের হকি দল ১৯২৮,১৯৩২,১৯৩৬,১৯৪৮,১৯৫২, ১৯৫৬, ১৯৬৪ ও ১৯৮০-তে সোনার পদক জিতেছিল। এছাড়াও ১৯৬০-এ রূপো ও ১৯৬৮ ও ১৯৭২-এ ব্রোঞ্জ জিতেছিল।