কলকাতা: ক্রিকেটবিশ্বে তাঁকে সকলে 'বম্বে ডাক' নামই দিয়ে ফেলেছিল।


আর হবে নাই বা কেন! যেখানে এক ইনিংসে শূন্য় রানে ফিরলে 'ডাক' তকমা দেওয়া হয়, সেখানে সাত ইনিংসে কোনও রান না করে ড্রেসিংরুমে ফেরা। অ্যাডিলেড হোক বা মেলবোর্ন, সিডনি হোক বা ওয়াংখেড়ে, শূন্যের দৌড় যেন থামছে না।


অজিত আগরকর (Ajit Agarkar) হয়তো নিজেই ভাবছিলেন যে, কেন তাঁর ভাগ্যেই এই লজ্জার অভিজ্ঞতা লেখা রয়েছে।


আগরকর নিজে যদিও বলেছিলেন, 'এই নাম নিয়ে আমি আগেও বিব্রত ছিলাম না, এখনও নই। কারণ, আমার প্রধান কাজ বোলিং করা। বরং উইকেট না পেলে আমি হয়তো বিব্রত হতাম।'


এমনিতে আগরকরের বিব্রত হওয়ার কথাও নয়। কারণ, যে ব্যাটিং লাইন আপে বীরেন্দ্র সহবাগ (Virender Sehwag), সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar), সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly), রাহুল দ্রাবিড়, ভি ভি এস লক্ষ্মণ, ওয়াসিম জাফররা থাকেন, সেখানে আগরকরের ব্যাটিং নিয়ে ভেবে লাভ কী!


১২ ইনিংসে ১২৭ রান। গড় ৭.৪৭। সেরা ইনিংস ৪১। টেস্টে যখন এরকম পরিসংখ্যান, তখন লর্ডসে ব্যাট হাতে নেমে পড়া। ২৯ জুলাই, ২০০২। সব হিসেব নিকেশ বদলে গেল ওই একটা ইনিংসে। সকলকে হতবাক করে দিয়ে সেঞ্চুরি করলেন মুম্বইয়ের ডানহাতি পেসার। লর্ডসের ঐতিহাসিক বোর্ডে খোদাই করা হল অজিত আগরকরের নাম।


ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৪৮৭ রানের জবাবে ভারতের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ২২১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ইংল্যান্ডের ব্যাটের শাসন। ৬ উইকেটে ৩০১ রান তুলে ইনিংস ডিক্লেয়ার করলেন নাসের হুসেন। ভারতের সামনে তখন ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই। অথচ নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে ভারত ১৭০/৬ হয়ে গেল। তখনই আগরকরের ব্যাটে অবিশ্বাস্য প্রত্যাঘাত। ১০৯ রানে অপরাজিত রইলেন। ৩৯৭ রানে অল আউট হয়ে গেল ভারত। ১৭০ রানে পরাজয়।



আগরকরের ইনিংস সেদিন হয়তো ভারতকে বাঁচাতে পারেনি। কিন্তু গোটা শিবিরে বিশ্বাস গেঁথে দিয়েছিল যে, আমরাও পারি। যার প্রতিফলন পাওয়া গেল পরে। টেস্ট সিরিজ ১-১ করে মাথা উঁচু করে দেশে ফিরেছিল টিম ইন্ডিয়া।


আরও পড়ুন: ধোনিদের নজির স্পর্শ করার হাতছানি, এবিপি লাইভের প্রশ্নে কী বললেন রশিদ?