কলকাতা: সামনে বিশ্বরেকর্ড গড়ার হাতছানি। ওয়ান ডে ক্রিকেটের ইতিহাসে তার আগে পর্যন্ত কোনও দল ৩২৫ রান তাড়া করে জেতেনি। কিন্তু ইংল্যান্ডের রান তাড়া করতে নেমে তখন ১৪৬/৫ হয়ে গিয়েছে ভারত। ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar), সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়রা (Sourav Ganguly)। ম্যাচ জেতার আশা কার্যত ছেড়েই দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।


ব্যতিক্রমী হতে পারেননি তাঁরাও। মহম্মদ কাইফের (Mohammad Kaif) বাবা ও মা। তাঁরা ধরেই নিয়েছিলেন যে, এই ম্য়াচে আর মোক্ষলাভ হল না। টিভিতে খেলা দেখা তাঁদের কাছে তখন যেন 'ইমোশনাল অত্যাচার'। স্নায়ুর চাপ সামলাতে না পেরে অবশেষে বাড়ি থেকেই বেরিয়ে পড়েন উদ্বিগ্ন দম্পতি। চলে যান কাছের সিনেমা হলে। সেখানে গিয়ে শাহরুখ খান অভিনীত 'দেবদাস' দেখেন তাঁরা।


হল থেকে বেরিয়ে অবশ্য জীবনের সবচেয়ে বড় চমক অপেক্ষা করেছিল কাইফ দম্পতির জন্য। যখন তাঁরা শুনবেন যে, লর্ডসে তাঁদের ছেলের হাত ধরে ইতিহাস গড়েছে ভারত। ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সৌরভের টিম ইন্ডিয়া।


সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে মার্কাস ট্রেসকোথিক ও নাসের হুসেনের সেঞ্চুরির সুবাদে ৩২৫/৫ তোলে ইংল্যান্ড। জবাবে তিন বল বাকি থাকতে ২ উইকেটে জয়ের রান তুলে নেয় ভারত। ষষ্ঠ উইকেটে ১২১ রানের অবিশ্বাস্য পার্টনারশিপ গড়েন যুবরাজ সিংহ ও মহম্মদ কাইফ। যুবরাজ ৬৩ বলে ৬৯ রান করে ফিরলেও, ক্রিজে ছিলেন কাইফ। শেষ পর্যন্ত ৭৫ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের ক্রিকেটার। ভারত ম্যাচ জিততেই লর্ডসের ব্যালকনিতে সৌরভের জার্সি খুলে ওড়ানো ও তারপর মাঠে দৌড়ে গিয়ে সতীর্থের কোলে ঝাঁপ ভারতীয় ক্রিকেটে রূপকথা হয়ে রয়েছে।


লর্ডসের মাটিতে ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের ২০ বছর সম্পূর্ণ হল ১৩ জুলাই। পরে একটি সাক্ষাৎকারে কাইফ জানান যে, মাঠে যখন ব্যাট হাতে তিনি ও যুবরাজ রুদ্ধশ্বাস পাল্টা লড়াই করছেন, স্নায়ুর চাপে টিভিতে ম্যাচই দেখতে পারেননি তাঁর বাবা ও মা। সিনেমা হলে চলে গিয়েছিলেন। দিনটি কাইফের কাছে এমনই স্মরণীয় হয়ে রয়েছে যে, তিনি অবসর ঘোষণার জন্যও বেছে নেন ১৩ জুলাই।


আরও পড়ুন: ও অনেকটা মিয়াঁদাদের মতো, খারাপ ফর্মের মাঝেই প্রাক্তন পাক অধিনায়কের সমর্থন পেলেন বিরাট