মুম্বই: তাঁর নিজের নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামেই সেদিন এসেছিলেন ভারত-অস্ট্রেলিয়া (India vs Australia) বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখতে। ভেবেছিলেন সবরমতীর তীরে তাঁর সামনেই হয়ত রোহিতরা বিশ্বকাপ হাতে তুলবেন। কিন্তু সে আশা ভঙ্গ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ষষ্ঠবারের মত বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছে ভারতকে হারিয়ে। আর পাঁচজন ক্রিকেটপ্রেমীর মত হৃদয় ভেঙেছে তাঁরও। কিন্তু তিনি তো দেশের প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister)। তিনি তো সবার অভিভাবক। তাই তো প্যাট কামিন্সের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে দিয়ে শেষে চলে গেলেন ভারতীয় ড্রেসিংরুমে। আর সেখানে গিয়ে বিরাট, রোহিত, শামিকে বুকে টেনে নিলেন, অভিবাদন জানালেন, হাত মেলালেন। সব মিলে মন জয় করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 


ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন কোচ ও দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেট উপস্থাপক রবি শাস্ত্রী মনে করেন যে দেশের প্রধানমন্ত্রীর যেভাবে ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের পর, তা কিছুটা উদ্বুদ্ধ করবে ছেলেদের। এক সাক্ষাৎকারে শাস্ত্রী বলেন, ''এরকম একজনের সংস্পর্শে আসা সত্যিই আলাদা করে উজ্জীবিত করে তোলে। আমি এই দলটার সঙ্গে সাত বছর কাটিয়েছি কোচ হিসেবে। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ সম্পর্কে জানি। তার আগে ভারতীয় দলের জার্সিতে খেলেছি। এমন কোনও সময় যখন সময় খারাপ যায়, যখন কোনও কিছুই ইতিবাচক হয় না। তখন এরকম একজন মানুষকেই পাশে দরকার। যে কোনও সাধারণ মানুষ নয়। ড্রেসিংরুম দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আসছে, এই অনুভূতিটাই আলাদা। আমি নিশ্চিত নরেন্দ্র মোদিজীর সঙ্গে দেখা করার পর দলের ছেলেরাও অনেকটাই উদ্বুদ্ধ হয়েছে।''


উল্লেখ্য, ১৯ নভেম্বর আমদাবাদে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারে ভারত। তার দুদিন পরেই রাহুল গাঁধী বালোত্রাতে একটি জনসভায় বলেন, 'অপয়া... অপয়া...। ওখানে আমাদের ছেলেরা বিশ্বকাপটা জিতেই যেত। কিন্তু অপয়াটা হারিয়ে দিল। টিভির লোকেরা এটা বলবে না কিন্তু জনতা জানে।'


তারপর থেকেই রাজনীতির ময়দানে ঝড় ওঠে। এমনকী, নির্বাচন কমিশন থেকে রাহুলের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিসও পাঠানো হয়। এ প্রসঙ্গে শামিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'আমি এসব কিছুই শুনিনি। আমরা ভাল ক্রিকেট খেলেছি। ১১ ম্যাচের মধ্যে ১০টিই জিতেছি। টানা ১০ ম্যাচ জিতে ফাইনালে গিয়েছিলাম। একটা দিন আমাদের খারাপ গিয়েছিল।' শামি আরও বলেন, 'এসবের মধ্যে রাজনীতির যোগ নেই। ম্যাচ হেরে দল খুব মুষড়ে ছিল। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর এসে আমাদের উদ্বুদ্ধ করাটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দেশের ভার যার ওপর, তিনি এসে সহমর্মিতা জানাচ্ছেন, এটা বিরাট ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রীর আসাটা বিরাট ব্যাপার ছিল।'