সন্দীপ সরকার, কলকাতা: দাবা বিশ্বকাপের (Chess World Cup) ফাইনালে উঠে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনের বিরুদ্ধে দুরন্ত লড়াই করে শেষে টাইব্রেকারে পরাস্ত হন। ভারতের বিস্ময় দাবাড়ু সেই আর প্রজ্ঞাননন্দ এখন কলকাতায়। টাটা স্টিল দাবায় অংশ নিতে এসেছেন।
কার্লসেনের বিরুদ্ধে অনলাইন দাবায় জিতেছেন প্রজ্ঞাননন্দ (Praggnanandhaa)। তবে মুখোমুখি সাক্ষাতে টাইব্রেকারে হারলেন। অনলাইনের প্রতিপক্ষ কার্লসেনের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতের প্রতিপক্ষ কার্লসেনের কী পার্থক্য? সোমবার বাইপাসের ধারে অভিজাত হোটেলে বসে প্রজ্ঞাননন্দ বলছিলেন, 'অনলাইনে হোক বা মুখোমুখি, সব মঞ্চেই উনি শক্তিশালী। খুব একটা তফাত নেই। মুখোমুখি খেললে প্রতিপক্ষের মুখ দেখা যায়। শরীরী ভাষা বোঝা যায়। এটাই একমাত্র তফাত।'
কার্লসেনের কাছে কী শিখলেন? প্রজ্ঞাননন্দ বলছেন, 'ওঁর সঙ্গে যখনই কথা বলার সুযোগ হয়, যতটা সম্ভব শিখি। দাবা নিয়ে, চাল নিয়ে প্রচুর আড্ডা হয়। মত বিনিময় হয়। গত ১০ বছর ধরে দাবা দুনিয়াকে শাসন করছেন। খেলাটা নিয়ে ওর চিন্তাভাবনা মুগ্ধ করবে।'
মাত্র ১৮ বছর বয়সেই প্রজ্ঞাননন্দের একাগ্রতা দেখে মুগ্ধ দাবা বিশ্ব। মনঃসংযোগ বাড়ানোর মন্ত্র কী? এবিপি লাইভের প্রশ্নে প্রজ্ঞাননন্দ বলছিলেন, 'বিশেষ কিছু করি না। ম্যাচের সময় মনঃসংযোগ খুব বেশি থাকে। তবে অন্যসময় বেশ অন্যমনস্ক থাকি। মনঃসংযোগ বাড়াতে যোগাভ্যাস ও ধ্যান করি।'
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেন? চেন্নাইয়ের দাবাড়ুর সোজাসাপ্টা জবাব, 'আমার সেই দক্ষতা রয়েছে। পরিশ্রম করছি সেই লক্ষ্যেই।' প্রত্যাশার চাপ সামলান কীভাবে? 'আমি খুব একটা চাপ টের পাই না। হয়তো ভবিষ্যতে পাব। তবে চাপ নিয়ে ভাবি না। অন্যদের প্রত্যাশা নিয়ে ভাবতে চাই না। নিজের সেরাটা দিতে চাই সব ম্যাচে,' বলছিলেন প্রজ্ঞাননন্দ। যোগ করলেন, 'ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষের খেলা বিশ্লেষণ করে প্রস্তুতি নিই। মানসিকভাবে তরতাজা থাকতে চাই। দাবা খুব কঠিন খেলা। তাই মনের দিক থেকে ফুরফুরে থাকতে হয়। দাবা বিশ্বকাপে শেষের দিকে মানসিকভাবে দারুণ জায়গায় ছিলাম না।'
ভবিষ্যতের আনন্দ বলা হচ্ছে প্রজ্ঞাননন্দকে। আপনি নিজে কীভাবে দেখেন? লাজুক হেসে প্রজ্ঞাননন্দ বলছেন, 'অনেক রাস্তা পেরতে হবে। ভারতেও অনেক ভাল দাবাড়ু রয়েছে। অর্জুন, গুকেশ, নিহালরা ভাল খেলছে। আমার কাছে পরিশ্রম করে যাওয়াটাই আসল।' যোগ করলেন, 'দাবার বাইরে আমি ক্রিকেট বেশ পছন্দ করি। সব ভারতীয় ক্রিকেটারদেরই ভাল লাগে। অশ্বিনকে খুব ভাল লাগে।'
সামনেই এশিয়ান গেমস। ভারতীয় দাবাড়ু বলছেন, 'আমাদের দল খুব শক্তিশালী। দারুণ একটা প্রস্তুতি শিবির হল। দলের সকলে ভাল বন্ধুও। ভাল ফলের ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।'