কলকাতা: একজন দু'মরসুম ধরেই বাংলার ক্রাইসিস ম্যান হয়ে উঠেছেন। চাপের মুখে বারবার তাঁর ব্যাট থেকে বেরিয়েছে কার্যকরী ইনিংস। কখনও আবার বল হাতে তুলে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। আরেকজনের অভিষেক হয়েছে সদ্য। রঞ্জি ট্রফিতে মাত্র দুই ম্যাচ খেলেই তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, বড় মঞ্চের জন্য তৈরি।
শাহবাজ আমেদ (Shahbaz Ahmed) ও অভিষেক পোড়েল (Abishek Porel)। চলতি রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) প্রথম ম্য়াচে বঢোদরার বিরুদ্ধে বাংলাকে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ফের চাপের মুখে বাংলার ত্রাতা হয়ে দাঁড়ালেন। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে বাংলা অল আউট হল ২৪২ রানে। বাংলার টপ অর্ডার ব্যাটিং ফের ব্যর্থ। রান পাননি ওপেনার সুদীপ ঘরামি (১৪), অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ (০)। ছন্দ হাতড়ে বেড়ানো সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবর্তে বাংলা এই ম্যাচে খেলাচ্ছে ঋত্বিক রায়চৌধুরীকে। তিনি উইকেটে জমে গিয়েও ৩৩ রান করে ফেরেন। একইভাবে ক্রিজে সেট হয়ে গিয়েও বড় রান পাননি সায়নশেখর মণ্ডল (৩৪) ও অনুষ্টুপ মজুমদার (২৯)। ব্যর্থ মনোজ তিওয়ারি (২)। একটা সময় ১১৬/৬ হয়ে গিয়েছিল বাংলা।
সেখান থেকেই পাল্টা লড়াই শাহবাজ ও অভিষেকের। সপ্তম উইকেটে দুজনে ৯৬ বলে ৭৪ রান যোগ করেন। ৬১ বলে ৪০ রান করে কট বিহাইন্ড হন শাহবাজ। যদিও সেই উইকেট নিয়ে বাংলা শিবিরে অসন্তোষ রয়েছে। বলা হচ্ছে, বল শাহবাজের ব্যাটের অনেক দূর দিয়ে গিয়েছিল। ব্যাটে নয়, বল লেগেছিল প্যাডে।
চন্দননগরের অভিষেক ৬২ বলে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ৭৩ রানে আউট হন। মাত্র ৪৬ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। চাপের মুখেও আগ্রাসী ব্যাটিং কি পূর্বনির্ধারিত কৌশল? কটক থেকে মোবাইল ফোনে অভিষেক বললেন, 'আমি এভাবেই ব্যাট করি। মারার বল পেলে মারব, পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন। বেশি কুঁকড়ে থাকার পক্ষপাতী নই। আজকেও স্বাভাবিক ব্যাটিংটাি করতে পেরেছি।'
শাহবাজের সঙ্গে বোঝাপড়ার রসায়ন কী? অভিষেক বলছেন, 'আমরা একে অপরের খেলার ধরন দ্রুত বুঝে গিয়েছি। দুজনই শট খেলতে পছন্দ করি। তাই জুটি হিসাবে ভাল করছি।'
দুজনের লড়াইয়ের তারিফ শোনা গেল বাংলার সহকারী কোচ সৌরাশিস লাহিড়ীর গলাতেও। বললেন, 'শাহবাজ তো এইসব পরিস্থিতিতে দারুণ। তবে অভিষেকও দ্রুত পরিণত হচ্ছে।' যদিও ব্যাটিং নিয়ে তিনি খুশি নন। বলছেন, 'ওপরের দিকের ব্যাটারদের আরও দায়িত্ব নিতে হবে। ২৪২ লড়াই করার মতো স্কোর। কাল প্রথম ঘণ্টাটা গুরুত্বপূর্ণ। ওদের দুই উইকেট পড়ে গিয়েছে। শুক্রবার দ্রুত অল আউট করতে হবে।'
বাংলার রান তাড়া করতে নেমে দিনের শেষে হায়দরাবাদ ১৫/২। দুটি উইকেটই পেয়েছেন মুকেশ কুমার। অভিষেক বলছেন, 'কাল শুরুতেই উইকেটের তাজা ভাব কাজে লাগিয়ে ওদের কয়েকটা উইকেট তুলে নিতে পারলে আমরা ভাল জায়গায় থাকব।'