মুম্বই: আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য আগামীকাল শুক্রবার দল বেছে নেওয়া হবে এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটির বৈঠকে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভবিষ্যত কী হবে, তার একটা ধারণা পাওয়া যেতে পাবে ওই বৈঠক থেকে।
৩৮ বছরের ধোনির ব্যাট হাতে ম্যাচ ফিনিস করার দক্ষতা এখন আর আগের মতো নেই বলে অনেকেই মনে করছেন। তিনি অবসর ঘোষণা করতে পারেন বলে জোর জল্পনা চলছে। যদিও ঝাড়খণ্ডের এই খেলোয়াড় এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কিছু বলেননি। দল বাছাইয়ের বৈঠকে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ধোনিকে দলে নেওয়া বা না নেওয়া থেকে তাঁর ভবিষ্যত সম্পর্কে ইঙ্গিত মিলতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে পূর্ণাঙ্গ সফরে ভারত তিনটি পরে টি২০, একদিনের ম্যাচ এ দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে। আগামী ৩ আগস্ট থেকে সিরিজ শুরু হচ্ছে।
আগামী বছর অস্ট্রেলিয়াতে টি ২০ বিশ্বকাপ হবে। ওই টুর্নামেন্টের কথা মাথায় রেখে নির্বাচকরা তরুণ ঋষভ পন্তকেই বেছে নিতে পারেন। কারণ, তাঁকেই ধোনির উত্তরসূরী বলে মনে করা হচ্ছে।
গত অক্টোবলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি ২০ সিরিজের দলে ছিলেন না ধোনি। এবারও তাঁকে দলে না নেওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপে আহত শিখর ধবনের পরিবর্ত হিসেবে পন্তকে দলে নেওয়া হয়েছিল। বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় ভারত।
অধিনায়ক বিরাট কোহলি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজে সীমিত ওভারের ম্যাচগুলি খেলবেন কিনা, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। একটি মহলের অনুমান, আগামী দীর্ঘ ঘরোয়া মরশুমের কথা মাথায় রেখে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে সীমিত ওভারের দলের নেতৃত্বের ভার দেওয়া হতে পারে রোহিত শর্মাকে।
তবে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অঙ্গ হিসেবে যে দুটি টেস্ট খেলা হবে, সেই দলে কোহলিকে রাখা হতে পারে। জসপ্রিত বুমরাহকেও সীমিত ওভারের ম্যাচগুলিতে বিশ্রাম দিয়ে টেস্ট স্কোয়াডে নেওয়া হতে পারে।
বিশ্বকাপে ভারতের বিদায়ের অন্যতম কারণ হিসেবে মিডল অর্ডারের সমস্যাকে দায়ী করা হচ্ছে। এই অবস্থায় নির্বাচক কমিটির বৈঠকে মিডল অর্ডারের পুণর্গঠনের ওপর জোর দেওয়া হতে পারে।বিশেষ করে, চার নম্বর পজিশন নিয়ে সমস্যার আশু সমাধানের দিকে নজর দেওয়া হতে পারে।

মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যান বাছাই নির্বাচকদের সামনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। কারণ, কর্নাটকের মায়াঙ্ক অগ্রবাল, মণীষ পান্ডে ও মুম্বইয়ের শ্রেয়স আয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করেছেন। এভাবে সীমিত ওভারের দলে তাঁদের অন্তর্ভূক্তির দাবি জোরাল হয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ দলের বিরুদ্ধে আনঅফিসিয়াল সফরে ভারত এ দলের হয়ে মণীষ তৃতীয় একদিনের ম্যাচে দুরন্ত শতরান করেছেন। অম্বাতি রায়ডুর আকস্মিক অবসর ও বিজয় শঙ্কর সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় চার নম্বরে এখন নজর থাকবে এই তরুণ ক্রিকেটারের ওপর।
এছাড়াও নির্বাচকরা পঞ্জাবের প্রতিশ্রুতিমান ব্যাটসম্যান শুভমন গিল ও মুম্বইয়ের পৃথ্বী শ-র নামও বিবেচনায় আসতে পারে। তবে চোটের সমস্যা থাকলে পৃথ্বীকে নিয়ে আলোচনা নাও হতে পারে।
ভারত এ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে রানের মধ্যে রয়েছেন শুভমন। তাই ভারতীয় দলের আগামী ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলে জায়গা করে নিতে পারেন তিনি এবং শ্রেয়স আয়ার।
বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জেরে আর সুযোগ নাও পেতে পারেন দীনেশ কার্তিক ও কেদার যাদব।
চোট সারিয়ে ফিট হতে পারলে শিখর ধবনই ওপেনার হিসেবে রোহিতের সঙ্গে থাকবেন। সীমিত ওভারের দলে কেএল রাহুল, হার্দিক পান্ড্য, কুলদীপ যাদব ও যজুবেন্দ্র চাহলরা তাঁদের জায়গা ধরে রাখবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভারত এ দলের হয়ে ভালো পারফরম্যান্সের কারণে তরুণ স্পিনার রাহুল চাহরের নামও বিবেচনায় আসতে পারে।
নতুন মুখ হিসেবে দিল্লির স্পিডস্টার নভদীপ সাইনি দলে আসতে পারেন। ভারত এ দলের চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বল হাতে দারুণ পারফর্ম করেছেন তিনি। একটি ম্যাচে পাঁচ উইকেটও নিয়েছেন।
দলের নিয়মিত পেসার মহম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমারদের পাশাপাশি খলিল আহমেদ, দীপক চাহার ও অভেশ খানদের নামও বিবেচনায় আসতে পারে।
টেস্ট স্কোয়াডে উইকেটরক্ষক নির্বাচনের দিকেও নজর থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার ভারতের শেষ সিরিজে পন্ত এই ভূমিকা পালন করেছিলেন। এখন চোট সারিয়ে ফিট হয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। দেশের সেরা উইকেটরক্ষক হিসেবে তাঁকেই গণ্য করা হয়। নির্বাচকরা তাঁকেই টেস্ট দলে ফিরিয়ে আনবেন, না কি ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পন্তকেই বেছে নেবেন, সেদিকেও নজর থাকবে।