কলকাতা: বৃহস্পতিবার থেকে ধর্মশালায় শুরু ভারত-ইংল্যান্ডের পঞ্চম টেস্ট। আইএসএলে হারল ইস্টবেঙ্গল। গড়াপেটা কাণ্ডের প্রসঙ্গ অ্যাপেক্স কমিটিতে পাঠাল সিএবি। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।
টেস্ট যুদ্ধে ভারত-ইংল্যান্ড
ছবির মতো স্টেডিয়াম। মাঠের যেন গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে ধৌলাধার পাহাড়। বছরের এই সময়েও পুরু বরফের আস্তরণ। ধর্মশালায় কনকনে ঠান্ডা। কলকাতায় যখন দুপুরের দিকে পাখা চালাতে হচ্ছে, হিমাচল প্রদেশের শৈলশহরে তখন সকলের গায়ে সোয়েটার, জাম্পার, টুপি।
যে পরিবেশের সঙ্গে বেশ সড়গড় ইংল্যান্ড। এ যেন এক টুকরো দেশের আবহ বেন স্টোকস ( Ben Stokes), জনি বেয়ারস্টোদের (Jonny Bairstow) সামনে। জানুয়ারিতে টেস্ট সিরিজ শুরু হয়েছিল হায়দরাবাদে। সিরিজের শেষ ম্যাচ ভারতের অন্য প্রান্তে, ধর্মশালায়। বাজ়বলের ঝড় তুলে সিরিজ শুরু করেছিল ব্রেন্ডন ম্যাকালামের প্রশিক্ষণাধীন দল। সিরিজের শেষ ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে যে, বাজ়বল জমানায় প্রথম সিরিজ হারছে ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের মাটিতে বছর দুয়েক আগে যে বাজ়বল তত্ত্ব প্রতিপক্ষকে দুমড়ে দিয়েছিল, ভারতে সেটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে।
সিরিজে পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ভারতের। রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) যে ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কৃতিত্ব দিচ্ছেন গোটা দলকে। হায়দরাবাদের প্রথম টেস্টের পর থেকে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্স গ্রাফ যেমন নীচের দিকে নেমেছে, ভারতের গ্রাফ সেরকমই লাফিয়ে লাফিয়ে উঠেছে। ধর্মশালায় কী হবে? ভারত সিরিজ ৪-১ করে দেবে, নাকি শেষ ম্যাচ জিতে সান্ত্বনা পুরস্কার নিয়ে দেশে ফিরবেন বেন স্টোকসরা?
রোহিতের জবাব
খোঁচাটা দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ওপেনার বেন ডাকেট (Ben Duckett)। জানিয়েছেন, ভারতের যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal) যে আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন তার জন্য কৃতিত্ব প্রাপ্য ইংল্য়ান্ডেরই। কেন? ডাকেটের (Ben Duckett) দাবি, ইংল্যান্ডকে দেখেই আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন জয়সওয়াল। ইংল্যান্ডের বাজ়বল দেখেই নাকি অনুপ্রাণিত হয়েছেন ভারতের তরুণ ক্রিকেটার।
যে দাবি নস্যাৎ করে দিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। শুধু তাই নয়, ডাকেটকে যেন ওড়ালেন মাঠের বাইরে। ডাকেট যে বলছেন যশস্বী আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন ইংল্যান্ডের বাজ়বল দেখে? শুনে হাসছেন রোহিত। বলেছেন, 'আমাদের দলে একটা ছেলে ছিল যার নাম ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant)। বেন ডাকেট সম্ভবত ওর খেলা দেখেনি।'
ডার্বির আগে হার
আইএসএল-এ ফের ধাক্কা খেল লাল-হলুদ শিবির। এফসি গোয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)। প্রথমার্ধে নোয়া সাদাউয়ির গোলে ঘরের মাঠে তিন পয়েন্ট পেল এফসি গোয়া। খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে কার্লেস কুয়াদ্রাতের (Carles Cuadrat) ফুটবলারদের।
খাতায় কলমে এক গোলের ব্যবধান হলেও, ম্যাচে দাপট ছিল এফসি গোয়ারই (FC Goa)। বেশ কয়েকবার গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিল গোয়ার দল। অন্যদিকে, নিজেদের অর্ধেই ৯০ মিনিটের ম্যাচের বেশিরভাগ সময় কাটালেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গলও।
রবিবার, ১০ মার্চ কলকাতা ডার্বি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে ইস্টবেঙ্গল। তার আগে চাপে থাকল লাল-হলুদ শিবির।
অ্যাপেক্স কমিটিতে সিদ্ধান্ত
গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় ক্রিকেটে (CAB Local Cricket)। সুপার ডিভিশন লিগে টাউন ক্লাব বনাম মহমেডানের (Town and Mohammedan Club) দ্বৈরথে ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল সাদা-কালো শিবিরের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছিল, বাইরের ক্রিকেটার খেলানো নিয়ে অভিযোগ করা হবে না, এমন প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে নাকি মহমেডানকে ম্যাচ ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল টাউন ক্লাব। পাল্টা টাউন ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ম্যাচের প্রথম দিনই বাইরের ক্রিকেটার খেলানো নিয়ে সিএবি-তে অভিযোগ করা হয়েছিল। যেখানে দুই দলেরই পরের পর্বে খেলা আটকাচ্ছে না, সেখানে গড়াপেটা করা হবে কোন স্বার্থে, পাল্টা প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। মহমেডান ক্লাবও গড়াপেটার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল।
এবার বল গড়াল সিএবি-র অ্যাপেক্স কমিটির কোর্টে। গড়াপেটার অভিযোগ নিয়ে বুধবার টুর্নামেন্ট কমিটির বৈঠক ডেকেছিল সিএবি। সেখানে টাউন বনাম মহমেডানের সেই বিতর্কিত ম্যাচের ফুটেজ চালিয়ে দেখা হয়। হাজির ছিলেন অভিযুক্ত দুই শিবিরের প্রতিনিধিরা। সঙ্গে সেই ম্যাচের আম্পায়ার, পর্যবেক্ষক, স্কোরাররাও। সকলের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে। জানা গেল, বৈঠকে হাজির মহমেডানের শীর্ষ কর্তা কামারউদ্দিন স্বীকার করে নেন, নিয়ম ভেঙে বাইরের ক্রিকেটার খেলানোয় ১০ পয়েন্ট হারাতে হবে জানার পর গোটা শিবির এতটাই মুষড়ে পড়েছিল যে, ইচ্ছাকৃতভাবে ম্যাচ দ্রুত শেষ করতে চেয়েছিল। সেই কারণেই ব্যাটাররা আউট হয়ে যান। এর সঙ্গে গড়াপেটার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে ক্রিকেটারেরা যে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব দেখাননি, তা মেনে নিয়েছেন মহমেডান কর্তা। সিএবি-র কাছে সেই জন্য ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে। টাউন ক্লাবের পক্ষ থেকে বৈঠকে ছিলেন সিএবি-র যুগ্মসচিব দেবব্রত দাসের পুত্র দেবনিক। তিনি নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন।
বৈঠকের শেষে সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, 'আজকের বৈঠকে ক্লাবগুলোকে ডাকা হয়েছিল। বিশদে আলোচনা হল। ক্লাব প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনা হয়েছে। আম্পায়ার, স্কোরার ও অবাজার্ভারের বক্তব্য শোনা হয়েছে। টুর্নামেন্ট কমিটি, ট্যুর অ্যান্ড ফিক্সচার কমিটি, অবজার্ভার কমিটি, আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যানেরা ছিলেন। সকলের বক্তব্য নেওয়া হল। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আলোচনা হয়েছে।'
স্নেহাশিস যোগ করেন, 'টুর্নামেন্ট কমিটি কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। গোটা বিষয়টা অ্যাপেক্স কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। ১১ মার্চ অ্যাপেক্স কমিটির বৈঠকে এটা নিয়ে আলোচনা হবে। সবার বক্তব্য মিনিটসে নথিবদ্ধ করা হয়েছে। অ্যাপেক্স কমিটির বৈঠকে সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর অ্যাপেক্স কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।'
রঞ্জি ফাইনালে বিদর্ভ
রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে (Ranji Trophy Final) পৌঁছে গেল বিদর্ভ (Vidarbha)। মধ্য়প্রদেশকে ৬২ রানে হারিয়ে দিল তারা। শেষ দিনে জয়ের জন্য ৯৩ রান প্রয়োজন ছিল মধ্য়প্রদেশের। অন্যদিকে বিদর্ভকে তুলতে হল প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট। ৩২১ রান তাড়া করতে নেমে গতকাল দিনের শেষে মধ্যপ্রদেশের স্কোর ছিল ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২২৮ রান। সেখানে থেকে এদিন সকালে ২৫৮ রানেই অল আউট হয়ে যায় শুভম শর্মার দল। আগামী রবিবার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রঞ্জি ফাইনালে খেলতে নামবে বিদর্ভ।