নয়াদিল্লি: ভারতের ক্রিকেট দলের কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অনিল কুম্বলে। এই ঘটনা নিয়ে দেশের ক্রিকেট মহলে তোলপাড় চলছে। উল্লেখ্য, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরই কুম্বলের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তারপরও কুম্বলের ইস্তফার কারণ নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই।
গতমাসেই বিসিসিআই নতুন কোচের জন্য আবেদনপত্র চেয়েছিল। এরপরই জানা যাচ্ছিল যে, বোর্ড, কোচ ও অধিনায়ক বিরাট কোহলির মধ্যে সব কিছু ঠিকঠাক নেই। নতুন কোচের পদে আদেবন চাওয়ার ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়, বোর্ড কুম্বলের কার্যকালের মেয়াদ বাড়াতে রাজি নয়।
নতুন কোচ নিয়োগ না হওয়ায় বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, চাইলে কুম্বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর পর্যন্ত কোচ থাকতে পারেন। কিন্তু ওই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি কুম্বলে। দলের সঙ্গে বিমানে ওঠেননি। পরে ইস্তফা দিয়ে দেন।
জানা গেছে, সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও ভিভিএস লক্ষ্মণকে নিয়ে গঠিত ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটি (সিএসি)বোর্ডকে পরামর্শ দিয়েছিল যে, কোচের পদে কুম্বলেকেই রাখা উচিত। কারণ, ওই পদের জন্য তিনিই সবচেয়ে উপযুক্ত।
কিন্তু এরপরও সবকিছু ঠিকঠাক হল না। সূত্রের খবর, কোহলির সঙ্গে কুম্বলের মতভেদই এর প্রধান কারণ। কোহলি চাইছিলেন, কুম্বলে তাঁর কাজের পদ্ধতি বদলান। নাহলে পদ থেকে সরে যান।
সূত্রের খবর, কোচ-অধিনায়কের এই সংঘাতের প্রভাব দল ও বোর্ডের ওপরও পড়ছিল। এ ধরনের পরিস্থিতির অবসান ঘটাতেই প্রাক্তন কিংবদন্তী স্পিনার সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কোহলি বোর্ড ও সিএসি-র কাছে বারেবারেই অভিযোগ করেছেন, কোচ তাঁর সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করছেন। দল বাছাই থেকে শুরু করে ব্যাটিং অর্ডারের বদল- তাঁর সঙ্গে মতান্তর ঘটছে কোচের। যদিও কুম্বলে ওই অভিযোগ মানতে চাননি। বোর্ডের সঙ্গে তাঁর শেষ বৈঠকে কুম্বলে সাফ জানিয়ে দেন, কোহলি যা চাইছেন, তা জানার পর তিনি আর কোচের পদে থাকতে পারেন না। সূত্রের খবর, কুম্বলে বলেছিলেন, তিনি এমন কোচ হতে চান না, যিনি শুধু ড্রেসিংরুমে ঘুরে বেড়াবেন।
কুম্বলের বক্তব্য ছিল, দল কী করে এগোবে এবং কীভাবে কাজ করবে-সে ব্যাপারে যদি তাঁর সিদ্ধান্তের কোনও গুরুত্ব না থাকে, তাহলে দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনও লাভ নেই। কুম্বলে এও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, প্রথম এগারো নিয়ে তাঁর মতামত অগ্রাহ্য করা হয়। দলে কে থাকবে, কে থাকবে না, সে বিষয়ে যদি দলই সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে কোচ পদে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হবে না।
সূত্রের খবর, কুম্বলে এটাও জানতেন যে, বোর্ড কী চাইছে। কিন্ত সে কথা গত ১৯ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। সিএসি কাকে কোচ নিয়োগ করার পক্ষে, তা জানার জন্য অপেক্ষা করছিল বোর্ড। কিন্তু কমিটি কুম্বলের পক্ষে সওয়াল করায় তাঁকে আসল কথাটা না জানিয়ে অন্য কোনও উপায় ছিল না বোর্ডের।
কোহলি-কুম্বলে বিবাদের কারণ
সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই কোচ ও অধিনায়কের মধ্যে মতভেদ চলছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে দুজনের মধ্যে ফের বিবাদ বাধে। কুম্বলে ফাইনালে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পক্ষে ছিলেন। টিম মিটিংয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোহলি ফিল্ডিং নিতে চেয়েছিলেন। জানা গেছে, ম্যাচের শেষে কোচ কুম্বলে প্লেয়ারদের তিরস্কারও করেছিলেন।
সূত্রের খবর, কুম্বলে কোনও খেলোয়াড়ের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য কুম্বলে কড়া কথা বলতেন। তিনি চাইতেন, খেলোয়াড়রা নিজেদের পারফর্ম্যান্স সংশোধন করুন। কোহলিও দল নিয়ে যথেষ্ট সিরিয়াস। তিনি মনে করতেন, এভাবে খেলোয়াড়দের বকাঝকা করলে অনিশ্চয়তার ভাবনা মনে আসতে পারে। যা দলের পরিবেশে প্রভাব ফেলতে পারে।
জানা গেছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে কোচ দলের একটি ছোট ট্রেনিং ক্যাম্প করার কথা বলেছিলেন, যাতে আইপিএলে যে সব খেলোয়াড়রা ভালো পারফর্ম করতে পারেননি তাঁদের প্রস্তুত করা যায়। কিন্তু বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের আপত্তিতে কোচের প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
জানা গেছে, দলের খেলোয়াড় ও কোচের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার বিষয়টি অধিনায়ক টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়ে দেন। সূত্রের খবর, খেলোয়াড়রা তাঁকে যে কথা বলেছিলেন, সে কথাই কোহলি টিম ম্যানেজমেন্টকে জানান।
শুধু ড্রেসিংরুমে ঘুরে বেড়াতে কোচ থাকতে চাননি কুম্বলে
ABP Ananda, web desk
Updated at:
22 Jun 2017 10:50 AM (IST)
NEXT
PREV
খেলা (sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -