সন্দীপ সরকার, কলকাতা: স্যুইৎজারল্যান্ডের জুরিখে তিনি যখন জ্যাভলিন হাতে ছুটছিলেন, প্রতি পদক্ষেপে টের পাচ্ছিলেন যন্ত্রণা। কুঁচকির যে চোট তাঁকে দীর্ঘদিন ভোগাচ্ছে। সঙ্গে জ্বর-সর্দি-কাশিতেও বেশ কাবু হয়ে পড়েছিলেন। অন্য কোনও অ্যাথলিট হলে হয়তো ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের বাইরের লড়াইয়েই হতোদ্যম হয়ে পড়তেন।


কিন্তু তিনি নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra)। অলিম্পিক্সের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনাজয়ী একমাত্র ভারতীয় অ্যাথলিট। জুরিখে ডায়মন্ড লিগে শারীরিক সমস্যাকে অগ্রাহ্য করে পদক ছিনিয়ে আনলেন। তবে সোনা নয়। জ্যাভলিনে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নীরজ জিতেছেন রুপো।


শুক্রবার দুুপুরে জুরিখ থেকে জুম কলে এবিপি লাইভের প্রশ্নে নীরজ বললেন, 'কুঁচকির চোট নিয়ে থ্রো করেছি। কুঁচকির ব্যথা বেশ কিছুদিন ধরেই ভোগাচ্ছে। সত্যি কথা বলতে কী, নিজের একশো শতাংশ দিতে পারিনি। তার ওপর বুদাপেস্টে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার সময়ই জ্বর ও সর্দি-কাশি হয়েছিল। জুরিখেও অসুস্থ শরীর নিয়ে এসেছি।'


এরপরই ফুটে বেরল নীরজের পেশাদারিত্ব। বললেন, 'চোট বা অসুস্থতার কথা আগে বলিনি। কারণ, তা হলে মনে হতো অজুহাত দিচ্ছি। আমি সেটা চাইনি।' যোগ করলেন, 'নিজের শরীরকে বুঝতে হয়। বুদাপেস্টে শরীর খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তবে বিশ্রাম নিলে সেরে উঠব দ্রুত। ১৭ সেপ্টেম্বর ডায়মন্ড লিগের ফাইনাল রয়েছে। ফাইনালের জন্য প্রস্তুতি নেব।'


চোট বা অসুস্থতা থাকলে নিজের সেরাটা দেওয়া যায় না, জানিয়েছেন নীরজ। বলেছেন, 'শরীর ফিট থাকলে মনের দিক থেকেও একশো শতাংশ চাপমুক্ত থাকা যায়। চোট থাকলে খোলা মনে নামা যায় না।'


বুদাপেস্টে জ্যাভলিনে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর নীরজ জানিয়েছিলেন, ৯০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে চান। তবে বৃহস্পতিবার সেরা ছন্দে ছিলেন না ভারতীয় অ্যাথলিট। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রথম ইভেন্টে নেমে সোনা হাতছা়ড়া হল নীরজ চোপড়ার। তবে ইউজ়িনে ডায়মন্ড লিগ ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করেছেন নীরজ। জুরিখ ডায়মন্ড লিগে রুপো জিতলেন অলিম্পিক্স ও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নীরজ। ১৭ সেপ্টেম্বর  ডায়মন্ড লিগ ফাইনালে ফের সোনা জয়ের সুযোগ থাকবে নীরজের সামনে।


নীরজ বলছেন, 'গত বছর তিনবার ৮৯ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছি। এবার সেটা পারছি না। তাই কিছুটা হতাশা রয়েছে। তবে পরিশ্রম করে যাব। চোটমুক্ত থাকতে হবে।' যোগ করেছেন, 'আগে যে পদকের স্বপ্ন দেখতাম, আজ সেগুলোই ঘরে। আমি এখন বিশ্বাস করি, ভারতের খুব সাধারণ ঘর থেকে উঠে এসে আমি পারলে, সবাই পারবে। সব ক্ষেত্রে পারবে।'


অ্যাথলিটের কেরিয়ার যে কুসুমাস্তীর্ণ হয় না, জানিয়েছেন নীরজ। বলেছেন, 'অ্যাথলিটের জীবন বেশ কঠিন। অনেকের মধ্যে থেকে কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য কয়েকজন মাত্র নির্বাচিত হয়। তার মধ্যে থেকে লড়াই করে মূল পর্বে ওঠে কয়েকজন। তারপর পদকের জন্য লড়াই হয়। তারপর হরাতে গোনা কয়েকজন পদক পায়।'




আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন