Boat Data Breach: অডিও ডিভাইস কেনার ক্ষেত্রে ভারতীয়দের পছন্দের তালিকায় এখন প্রথমের দিকেই থাকে বোট সংস্থা। সাধ্যের মধ্যে অডিও প্রোডাক্ট লঞ্চ করে এই সংস্থা। বোটের বিভিন্ন অডিও ডিভাইসের দাম থাকে মাঝারি রেঞ্জে। তবে আকাশছোঁয়া দাম নয় বলে ফিচার এবং স্পেসিফিকেশন ও ডিজাইনের ক্ষেত্রে কখনও আপস করে না। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এমন একটি তথ্য যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছি বোটের অডিও ডিভাইস ইউজারদের। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শুধু অডিও ডিভাইস নয় বোট বিভিন্ন ওয়ারেবল ডিভাইস অর্থাৎ স্মার্টওয়াচও লঞ্চ করেছে ভারতে।
সম্প্রতি জানা গিয়েছে, বোট ইন্ডিয়ার ডেটাবেস ব্রিচ হয়েছে। অর্থাৎ বোট ইন্ডিয়ার আওতাধীন ইউজারদের তথ্য আর সুরক্ষিত নয়। ৭.৫ মিলিয়নের বেশি ইউজারদের উপর এই ডেটা ব্রিচের প্রভাব পড়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে বোট ইন্ডিয়ার তৈরি ডিভাইস। অনেকেই এই সংস্থা ইয়ারফোন, হেডফোন, ইয়ারবাডস, স্মার্টওয়াচ এইসব ব্যবহার করেন। সেই বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের ডেটা সংক্রান্ত সুরক্ষা-নিরাপত্তা আর গোপনে নেই, বরং সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
বোটের ইউজাররা এই খবর শোনার পর থেকে যথেষ্টই চিন্তায় রয়েছেন। কারণ হয়তো এতক্ষণে ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে ডার্ক ওয়েব মাধ্যমে। আর সেখানে এইসব তথ্য কিনে নেওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা দেওয়ার লোকও রয়েছে। অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি হয়ে যেতে পারে এবং তা ব্যবহার হতে পারে বিপজ্জনক কাজে। অথচ আপনি ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পাবে না। ফোর্বস ইন্ডিয়ার রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, বোটের ডিভাইস ব্যবহারকারীদের নাম, ইমেল আইডি, ফোন নম্বর, ঠিকানা - এইসব তথ্য ফাঁস হয়েছে। ফোর্বস ইন্ডিয়ার তরফেই জানানো হয়েছে যে ৫ এপ্রিল, ২০২৪ এই ডেটা ব্রিচিং- এর ঘটনা ঘটেছে। ShopifyGUY নামের এক হ্যাকারের বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগ। এই হ্যাকারের দাবি ২ জিবি- র বেশি বোট ইউজারদের ডেটা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং এখন তা ডার্ক ওয়েবে উপলব্ধ রয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোনও ডেটাবেস যদি হ্যাকারদের দখলে চলে আসে তাহলে ইউজারদের ফোন নম্বর এবং ইমেল আইডি ব্যবহার করে একটি ডিভাইসের নিরাপত্তা বেষ্টনী নষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে। শুধু তাই নয় 'ফিশিং মেল' পাঠিয়ে ইউজারদের থেকে তথ্য এবং টাকাও হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে ওই ফিশিং মেলের মাধ্যমে আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে সমস্ত ডিভাইসকে ভাইরাস আক্রান্ত করে তার নিয়ন্ত্রণ হ্যাকার নিজের হাতে নিয়ে নিতে পারে।
কীভাবে প্রতারিত হতে পারেন ইউজাররা
- স্ক্যামার বা প্রতারকরা ভুয়ো ফোন করতে পারেন ইউজারদের। এই জাতীয় ফোন ধরে তথ্য বলে দিলেই বাড়বে বিপদ।
- বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠিয়ে সেখানে ক্লিক করতে বলা হতে পারে। পরিবর্তে দেখানো হবে উপহার কিংবা টাকা জিতে এওয়ার প্রলোভন।
- এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ ডাউনলোড করার কথাও বলা হতে পারে ইউজারদের।
- আজকাল সর্বত্র এআই- এর ছড়াছড়ি। হ্যাকারদের জন্যেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। প্রযুক্তির মাধ্যমেও গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে পারেন তাঁরা।
আপনি যদি বোটের কোনও জিনিস কিনে থাকেন এবং ব্যবহার করে থাকেন তাহলে হয়তো আপনার নামও ডেটাবেসে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কীভাবে ওই হ্যাকারদের ইউজারদের তথ্য ভাণ্ডারের নাগাল পেয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ক্রেতাদের আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য অন্তত একটু বেশি সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। কারণ সবচেয়ে ভয়ের তথ্য হল হ্যাকার এইসব ডেটা মাত্র EUR 2 - এই মূল্যে বিক্রি করে দিতে চায়। ভারতীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৮০ টাকা। এর থেকেই অনুমান যে বোটের জিনিস ব্যবহারকারীদের তথ্যের ভাণ্ডার হাতিয়ে তার সাহায্যে প্রতারণা করার জন্য নির্ঘাত মুখিয়ে রয়েছে প্রতারকরা। এই গোটা ঘটনায় এখনও বোট সংস্থার তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। আগামী দিনে বোট কর্তৃপক্ষের তরফে পুরো বিষয়টাই পরিষ্কার ভাবে ইউজারদের জানানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।