কলকাতা: ইলেক্ট্রিক স্কুটার (Electric Scooter)বেশ সাফল্য পেয়েছে। ক্রেতাদের নজরও কেড়েছে। Ola S1 –এর মতো নয়া কোম্পানিগুলি রেকর্ড বুকিংয়ের দাবি করেছে। Ather –এর মতো সংস্থাগুলিও এক্ষেত্রে ভালো ফল পেয়েছে। তাহলে কী বলা যেতে পারে যে, পেট্রোল স্কুটারের (Petrol Scooter) দিন শেষ? তা কিন্তু পুরোপুরি নয়। 


হোন্ডা অ্যাক্টিভের মতো সর্বসময়ের জনপ্রিয় স্কুটারের মতো পেট্রোল স্কুটারগুলির জনপ্রিয়তা কিন্তু ব্যাপক পর্যায়েই রয়েছে এবং সেগুলিই এখনও পর্যন্ত বেস্ট সেলিং স্কুটার। ওলা-কে নিয়ে যেভাবে হৈচৈ হচ্ছে, এগুলি নিয়ে হয়ত হচ্ছে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বিক্রিতে ভাঁটা পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়ার পেট্রোল স্কুটারগুলির মধ্যে আধিপত্য রয়েছে হোন্ডা অ্যাক্টিভ, TVS Jupiter ও TVS Ntorq-এর। 


বৈদ্যুতিক স্কুটারগুলির এখনও নির্ভরযোগ্যতা বা এমনকি পরিসর বা এমনকি  দামে নাগালের সঙ্গে মেলে, এজন্য কিছু সময় এখনও রয়েছে। দেখে নেওয়া যাক, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 


দাম


সাধারণত পেট্রোল স্কুটারের তুলনায় বৈদ্যুতিক স্কুটারের দাম বেশি।  কিন্তু ভর্তুকির কারণে দাম কমেছে। এর থেকেই বোঝা যায়, পেট্রোল স্কুটারে এখনও তুলনায় সস্তা। ইলেকট্রিক স্কুটার রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কম। কারণ, এতে পার্টস কম। কিন্তু এরসঙ্গে দেখতে হবে দীর্ঘস্থায়িত্ব। পেট্রোল স্কুটার চলে দীর্ঘদিন। ইলেকট্রিক স্কুটারের ব্যাটারির মেয়াদ চার বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে পারে। 


পারফরম্যান্স


ইলেকট্রিক স্কুটারের যেখানে এগিয়ে তা হল তারা বেশি দ্রুত ও সিমলেস অ্যাকসিলারেশন সহ মসৃণ। তাই শহরের পথে, যেখানে অল্পবিস্তর ফাঁকের মধ্যে তাৎক্ষণিক গতি তোলার ক্ষেত্রে ইলেকট্রিক স্কুটার চালানো তুলনায় সহজ। ইলেকট্রিক স্কুটারে অনেক বেশি টর্ক থাকে যা পারফরম্যান্সকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এমনটা কিন্তু নয় যে, পেট্রোল স্কুটার ঢিমে গতির, কিন্তু ইলেকট্রিক স্কুটারের এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক মাত্রা রয়েছে। 



পরিসীমা এবং ব্যবহারযোগ্যতা


এই জায়গায় কিন্তু এগিয়ে পেট্রোল স্কুটার। ইলেকট্রিক স্কুটারে ব্যাপক রেঞ্জের প্রতিশ্রুতি থাকে, কিন্তু বাস্তবে পেট্রোল স্কুটারের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে না।  শহরে পরিবহণের ক্ষেত্রপে ইলেকট্রিক স্কুটারের নতুন লাইন আপ বাস্তব রেঞ্জের ক্ষেত্রে ভালো ধারণা গড়ে তুলতে পারে, কিন্তু পেট্রোল স্কুটারের ক্ষেত্রে যে ফিল ইট, শাট ইট, ফরগেট ইট-এর মতো অনুভূতি রয়েছে, তাকে পিছনে ফেলতে পারে না ইলেক্ট্রিক স্কুটার।  রেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ না রেখেই পেট্রোল স্কুটার যে কোনও জায়গাতেই নিয়ে যাওয়া যায়। চার্জিং পরিকাঠামোর অভাবও রয়েছে। কয়েকটি শহর ছাড়া পেট্রোল স্কুটারের ক্ষেত্রে যে স্বাচ্ছন্য পাওয়া যায়, ইলেকট্রিক স্কুটারে সেই সুবিধা অমিল, তা পেট্রোলের দাম যতই বেশি হোক না কেন। 



কোনটি কেনা যায়?


বড় শহরের বাসিন্দা বলে এবং বাড়িতে-অফিসে চার্জিংয়ের অ্যাকসেস থাকলে ও স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত হতে ইলেকট্রিক স্কুটারে কাজ চলতে পারে। রেঞ্জ বেশ ভালো, মসৃণ, দ্রুত ও সহজে ব্যবহারযোগ্য। সেইসঙ্গে পেট্রোলের দাম বেশি হওয়ায় যাতায়াতে তা সস্তাও বটে। 
আর এক্ষেত্রে বলা যায়, পেট্রোল স্কুটার আরও বেশি টাফ, নির্ভরযোগ্য ও বছরের পর বছর রক্ষনাবেক্ষণও সহজ। আর যে কোনও জায়গায় নিয়ে যাওযার স্বাধীনতা রয়েছে। সেইসঙ্গে পেট্রোল ভরে চললেই হল। চার্জিং পরিকাঠানমো সহ বেশি দাম ইলেকট্রিক স্কুটারের ক্ষেত্রে একটি ঝক্কি। অনেক দিক থেকেই পেট্রোল স্কুটার এখনও সুবিধাজনক ও এর যে বেশি বিক্রি, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।