নয়াদিল্লি: যে সময় নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নয়াদিল্লিতে বৈঠক করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তখন নিজের দেশেই সমালোচনা শুরু হল তাঁর। আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নামা বার্নি স্যান্ডার্স কেন ভারতকে ট্রাম্প অস্ত্র বিক্রি করছেন, সেই প্রশ্ন তুললেন। নেভাদা ও নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রাথমিক বাছাই পর্বে জয়ী, আইওয়ায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রতিনিধি স্য়ান্ডার্সের অভিমত, ভারতকে অস্ত্র না বেচে আমেরিকার বরং উচিত পৃথিবী রক্ষায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নয়াদিল্লির সঙ্গী হওয়া।


গতকাল আমদাবাদের মোতেরা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নমস্তে ট্রাম্প অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারতকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থমূল্যের স্টেট অব দি আর্ট সামরিক হেলিকপ্টার ও অন্যান্য সামরিক যন্ত্রাংশ বিক্রির চুক্তির কথা ঘোষণা করেন। ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্প আরও বলেন, ভারতকে দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক অস্ত্রের কিছু কিছু সরবরাহ করার পরিকল্পনা আছে আমেরিকার। ট্রাম্পের উল্লেখ করা ডিলের মধ্যে আছে ২৪টি এমএইচ-৬০ রোমিও হেলিকপ্টার। ভারত এগুলি আমেরিকার কাছ থেকে পাবে ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দরে। ৬টি এএইচ-৬৪ই অ্যাপাচে হেলিকপ্টারও ভারত পাবে, যেজন্য দিতে হবে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
স্যান্ডার্স বলেছেন, রেথিয়ন, বোয়িং, লকহেডের সম্পদ বাড়াতে ভারতকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অস্ত্র বিক্রির পরিবর্তে আমেরিকার জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় ভারতের শরিক হওয়া উচিত। ট্রাম্পের ভারত সফর নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানানো এই প্রবীণ নেতা বলেছেন, বায়ুদূষণ রোধ, ভাল পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বিষয়ক কাজ সৃষ্টি ও আমাদের পৃথিবীকে বাঁচানোয় একযোগে আমরা কাজ করতে পারি।
২০১৬-য় ভারতকে তাদের প্রধান প্রতিরক্ষা শরিকের মর্যাদা দেয় আমেরিকা। সেইমতো ভারতকে ২০১৮-য় কৌশলগত বাণিজ্য সংক্রান্ত টায়ার ওয়ান মর্যাদা দেওয়া হয়। এর ফলে ভারত ব্যাপক পরিধির সামরিক ও দ্বিমুখী উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর প্রযুক্তি হাতে পাবে, যেজন্য কোনও লাইসেন্স লাগবে না। এধরনের প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করে মার্কিন বাণিজ্য দপ্তর। হালে সহজে বেসরকারি ভারতীয় শিল্পমহলের সঙ্গে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্যও ইন্ডাস্ট্রি সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয় ২+২ আলোচনাতেও।
তবে স্যান্ডার্স যা-ই বলুন, হোয়াইট হাউসের এক প্রাক্তন কর্তা ভারতকে অস্ত্রশস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছেন। জোসুয়া হোয়াইট নামে ওই প্রাক্তন কর্তা বলেছেন, হোয়াইট হাউসে আমরা ভারতের সঙ্গে জলবায়ু ও গ্রিন টেকনোলজি সংক্রান্ত সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিপুল উদ্যম নিয়েছিলাম। নিরাপত্তা সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিক্রি বাড়ানোতেও জোর দিয়েছিলাম। এজন্য নিজের ভূমিকা নিয়ে গর্বিত আমি। আমি ভাবতে চাই, দুটিই শক্তিশালী, মূল্যবোধ-ভিত্তিক পার্টনারশিপের অংশ হতে পারে।