মুম্বই: ট্যাক্সিতে সওয়ার যাত্রীকে ফোনে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলতে শুনে দেশবিরোধী আলোচনা করছেন সন্দেহ হওয়ায় থানায় টেনে নিয়ে গিয়েছেন যে উবের-চালক, তাঁকে শনিবার সান্তাক্রুজ থানায় ‘অ্যালার্ট সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড’ খেতাব দিলেন মুম্বই বিজেপির প্রধান মঙ্গল প্রভাত লোধা। রোহিত গৌর নামে উবের চালককে সংবর্ধনা জানানোর পাশাপাশি সেই যাত্রী, কবি-সমাজকর্মী বাপ্পাদিত্য় সরকারকে সিএএ-র বিরুদ্ধে ‘দেশবিরোধী চক্রান্তে’র দায়েও অভিযুক্ত করেছেন লোধা।
তিনি ট্যুইট করেছেন, রোহিত সিংহ গৌর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রচনা করা উবের যাত্রীকে পুলিশের হাত তুলে দিয়েছে। রোহিতকে মুম্বইয়ের বাসিন্দাদের তরফে সান্তা ক্রুজ থানায় ডেকে সংবর্ধনা দিলাম, অ্যালার্ট সিটিজেন পুরস্কার দিলাম। রোহিতের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার ছবিও শেয়ার করেন তিনি।


কলা ঘোড়া ফেস্টিভ্যালে কবিতা পাঠের অধিবেশনে অংশ গ্রহণ করতে ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মুম্বই আসেন জয়পুরের বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য। মুম্বইয়ের নাগপাড়়ার সিএএ-এনআরসি বিরোধী চলতি প্রতিবাদ কর্মসূচিতেও সামিল হন তিনি।
গত বুধবার রাতে জুহু থেকে কুরলা যেতে উবের চাপার পর তিনি ফোনে এক বন্ধুর সঙ্গে সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদ-আন্দোলন নিয়ে কথা বলছিলেন। তাঁর কথা শুনে ওই ক্যাবচালক এটিএম থেকে টাকা তুলে আনার অছিলায় গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ ডেকে এনে তাঁকে গ্রেফতার করতে বলেন। বাপ্পাদিত্যকে থানায় নিয়ে গিয়ে ২ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয় পুলিশ।
অভিযোগ, ক্যাবচালক তাঁকে বলেন, অন্য কোথাও না নিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত তাঁর। বাপ্পাদিত্য পরে বলেন, ওই ক্য়াবচালকের উগ্র মেজাজ, আগ্রাসী আচরণ, মুখের খারাপ ভাষাই পরিষ্কার বুঝিয়ে দিচ্ছে, দেশে এখন কী পরিস্থিতি রয়েছে। তবে হেনস্থা, হয়রানি হলেও উবের চালকের কেরিয়ার, ভবিষ্যতের ক্ষতি হতে পারে মনে করে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করছেন না বলে জানিয়েছেন বাপ্পাদিত্য।
তবে সিএএ-র সমালোচনা করে ফোনে কথাবার্তা শুনে ফেলে যাত্রীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য উবের সাসপেন্ড করেছে তাঁকে। বাপ্পাদিত্যকে উবেরের পক্ষ থেকে ফোন করে এই পদক্ষেপের কথা জানানো হয়।
বাপ্পাদিত্য়ের দাবি, উবের-চালক তাঁকে মুম্বইয়ে শাহিনবাগের মতো পরিস্থিতি তৈরির আলোচনা করায় অভিযুক্ত করেন, এমনকী তাঁর কাছে ফোনে বাপ্পাদিত্য়ের কথাবার্তার রেকর্ড আছে বলেও জানান।
উবের চালকের অবশ্য এত বিতর্কের পরও নিজের আচরণের জন্য় অনুতাপ নেই। এরপরও কোনও যাত্রীকে একই ধরনের কথা বলতে শুনলে তিনি এরকমই করবেন বলে জানিয়েছেন রোহিত। যাত্রী ফোনে কারও সঙ্গে কী কথা বলছেন, সেটা শোনা যাত্রীর ব্যক্তিগত পরিসর, গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা, এটা মানতে নারাজ তিনি।