- Home
-
আজ ফোকাস-এ
এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় চিদম্বরম, কার্তিকে আগাম জামিন দিল্লির আদালতের
এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় চিদম্বরম, কার্তিকে আগাম জামিন দিল্লির আদালতের
ইউপিএ জমানার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ইতিমধ্যেই আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Last Updated:
05 Sep 2019 06:18 PM
বিচারবিভাগীয় হেফাজতে আটক থাকাকালে যাতে তাঁর নিরাপত্তা অক্ষুন্ন থাকে, তিনি নিরাপদ বোধ করেন, সেজন্য নির্দেশ দিক আদালত। বিশেষ আদালত তাঁকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিহড় জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পরই দিল্লির আদালতে এই আবেদন পেশ করলেন চিদম্বরম। তাঁর আর্জি, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে বলা হোক জেল কর্তৃপক্ষকে। তাঁকে আলাদা সেল বরাদ্দ করতেও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
চিদম্বরমকে ১০ দিন তিহড় জেলে পাঠাল দিল্লির আদালত। তাঁর জামিনে মুক্তির আবেদন খারিজ করেছে আদালত। তাঁকে যাতে জেলে পাঠানো না হয়, সেজন্য শেষ মূহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করে যান তাঁর আইনজীবীরা। কিন্তু সব চেষ্টা বিফলে যায়। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় তাঁর জেলযাত্রা এড়াতে তাঁরা এই প্রস্তাবও দেন যে, তাঁকে জেরা করার জন্য গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিক এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিহড় জেলে থাকতে হবে চিদম্বরমকে। সুপ্রিম কোর্ট আগেই এই মামলায় গ্রেফতারি ঠেকাতে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের রায় পক্ষে থাকায় ইডি তাঁকে গ্রেফতার করতেই পারে। কিন্তু ইডি সেই উদ্যোগ নেয়নি। ফলে বিশেষ বিচারক অজয় কুমার কুহারের সামনে দুটি রাস্তা খোলা ছিল। হয় চিদম্বরমকে ছেড়ে দেওয়া, নয়তো বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো। বিচারক তাঁকে তিহড় জেলে পাঠানোর সিদ্ধান্তই নেন।
চিদম্বরমের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের আবেদনে আপত্তি তুলে তাঁর আইনজীবী কপিল সিবাল সওয়াল করেন, তিনি তদন্তে প্রভাব খাটানো বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, এমন অভিযোগ ওঠেনি।
পাল্টা চিদম্বরম বলেন, কেন আমায় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠাতে হবে? সিবিআই আমায় ১৫দিন হেফাজতে রেখেছে। আমি আত্মসমর্পণ করতে পারি, ইডি আমায় হেফাজতে নিতে পারে। কিন্তু আমায় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো উচিত নয়। হেনস্থা করাই এর আসল উদ্দেশ্য। নিজের আইনজীবী কপিল সিবলকেও একটি বিশেষ রায়ের অংশ আদালতকে পড়ে শোনাতে বলেন তিনি।
দিল্লির আদালতে সিবিআই আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় চিদম্বরমের বিচারবিভাগীয় হেফাজত চেয়ে সওয়াল করল, তিনি জনজীবনে ক্ষমতাশালী, প্রভাবশালী লোক, তাঁকে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। চিদম্বরমের কৌঁসুলি বলেন, বেআইনি অর্থ লেনদেন মামলায় তিনি ইডি-র হেফাজতে যেতে প্রস্তুত।
এর আগে চিদম্বরমের পুত্র কার্তি এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মিডিয়া মামলায় আগাম জামিনে পাওয়ার পর ট্যুইট করে বলেন, এই মামলার সঙ্গে কোনও সম্পর্কই নেই তাঁর, স্রেফ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতে তাঁকে এতে জড়ানো হয়েছে। সময় মতো আইএনএক্স মামলার ধুয়োও মিথ্যা প্রমাণিত হবে।
আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় দুদিনের সিবিআই হেপাজত শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দিল্লির আদালতে তোলা হল চিদম্বরমকে। তাঁর বিরুদ্ধে জারি হওয়া জামিন-অযোগ্য পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি যে পিটিশন দিয়েছিলেন, সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন চিদম্বরম। এর কয়েক ঘন্টা বাদে তাঁকে দিল্লির বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তাঁকে সিবিআইয়ের হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। ২১ আগস্ট রাতে গ্রেফতার হন তিনি। তারপর দফায় দফায় তাঁকে ১৫দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠায় বিশেষ আদালত। আজ তার মেয়াদ ফুরোয়।
প্রেক্ষাপট
নয়াদিল্লি: এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় দিল্লির আদালত আগাম জামিন দিল পি চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তিকে। ইউপিএ জমানার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ইতিমধ্যেই আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
বাবা-ছেলে, দুজনের বিরুদ্ধে এয়ারসেল ম্যাক্সিস মামলা দায়ের করেছে সিবিআই ও ইডি। বৃহস্পতিবার এই মামলায় তাঁদের রেহাই দিয়ে বিশেষ বিচারক ও পি সাইনি আগাম জামিন মঞ্জুর করে তদন্তে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিচারক বলেন, ওঁদের গ্রেফতার করা হলে এক লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড ও সম পরিমাণ অর্থের একজন জামিনদারের বিনিময়ে ছেড়ে দিতে হবে। অভিযুক্তদের তদন্তে সামিল হতে বলা হচ্ছে।
এয়ারসেল-ম্যাক্সিল ডিলের পাশাপাশি ৩০৫ কোটি টাকার আইএনএক্স মিডিয়া মামলায়ও দুজনের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে তদন্ত করছে এজেন্সিগুলি।
এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় কিছুটা স্বস্তি পেলেও আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়েছেন চিদম্বরম। ওই মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে তাঁর জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেনি শীর্ষ আদালত। তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, আর্থিক অপরাধের মোকাবিলা অন্যভাবে করতে হবে কেননা তা দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে। আজই ৫ দফায় বিশেষ আদালতের দেওয়া চিদম্বরমের ১৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ২১ আগস্ট রাতে তিনি গ্রেফতার হন।