Shani Sare Sati : শনিদেব ন্যায়ের দেবতা। হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্রের নয়টি গ্রহের একটি। এটি শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী গ্রহ। বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, শনি অত্যন্ত শক্তিশালী গ্রহ। শনির সাড়ে সাতির সময়ে শনি সেই ব্যক্তির রাশির দ্বাদশ, ১ম এবং ২য় ঘরের মধ্য দিয়ে যায়।়
এই দশা একজন ব্যক্তির জীবনে সাড়ে সাত বছর স্থায়ী হয়। এই সময়টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন শনি। তবে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হলে এটি বৃদ্ধির সূচক হতে পারে । সাড়ে সাতির তিন পর্যায় প্রায় আড়াই বছর করে স্থায়ী হয়।
প্রথম পর্যায়ে কোনও মানুষে উদ্বেগ বাড়ে। বিষন্নতা গ্রাস করে। অতীতে মানসিক ক্ষতগুলি যন্ত্রণা দেয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে, শনি কর্মজীবন, অর্থ ও সম্পর্কের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। এই সময়কালে মানুষকে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। তৃতীয় পর্যায়ে শনি একজনের জীবনে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন নিয়ে আসে। বিশ্বাস ভাঙতে পারে। আবার নতুন দিশা পেতে পারে জীবন। এই দশা যে শুধু বিষাদের গর্ভে ঠেলে দেয়, এমনটা নয় কিন্তু। বরং এই সময়টাকে ইতিবাচকভাবেও ভাবা যেতে পারে। জীবন এই সময় সঠিক মানুষ, সঠিক বন্ধু, জীবনের ইতিবাচক দিকগুলি খুঁজে নিতে শেখায়। ইতিবাচক শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে সাড়ে সাতিতেও জীবন আলোর নতুন দিশা পেতে পারে।
সাড়ে সাতির প্রভাব ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয়ই হতে পারে। নেতিবাচক দিক থেকে, এই সময়কাল আর্থিক অসুবিধা, স্বাস্থ্য সমস্যা, সম্পর্কের সমস্যা এবং কর্মজীবনের বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, সবার উপর সাড়ে সাতির প্রভাব সমান নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে এই সময়টা সমৃদ্ধিরও হতে পারে। কঠিন সময় মানুষকে আত্ম-সচেতন হতে, নতুন দক্ষতার বিকাশ ঘটাতে ও তাদের জীবনে বাধাগুলি অতিক্রম করাতে আরও সাহায্য করতে পারে। এটি আধ্যাত্মিক জাগরণের সময় হিসেবে মনে করা যেতে পারে। পরমাত্মার প্রতি আত্মনিবেদন করলে অনেক ঝড় ঝঞ্ঝা দূর থেকেই ফিরে যায়। আছড়ে ফেলতে পারে না।
সাড়ে সাতির নেতিবাচক প্রভাবগুলি কাটিয়ে উঠতে, বেশ কয়েকটি প্রতিকার করা যেতে পারে। যেমন , শনি পুজো করা,রুদ্রাক্ষ পরা, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নীলকান্তমণি পরা, দান ধ্যানে মন দেওয়া। হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। বরং নিজেকে ক্রমাগত অনুপ্রাণিত করতে হবে। ইতিবাচক দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। নিয়মিত ধ্যান এবং যোগব্যায়াম অনুশীলন মনকে শান্ত, স্থিতিশীল করতে সহায়তা করতে পারে। এই অনুশীলনগুলি মনকে শান্ত করতে এবং চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে, যা এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে। শেষ পর্যন্ত, শনি সাদে সতীর নেতিবাচক প্রভাবগুলি কাটিয়ে ওঠার চাবিকাঠি হল ইতিবাচক থাকা এবং আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকা।