চিটাগং: সীমান্ত সমস্যাকে ভারত সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে বলে নেতা-মন্ত্রীদের একাংশ অভিযোগ তুলছিলেন দীর্ঘ দিন ধরেই। তার মধ্যেই দেশের সার্বভৌমিকতা রক্ষা নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Bangladesh PM Sheikh Hasina)। জানিয়ে দিলেন, বিদেশি আগ্রাসনের (Foreign Agression) হাত থেকে দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমিকতা রক্ষায় যথেষ্ট সক্ষম তাঁরা। 


রবিবার প্রেসিডেন্ট প্যারেড ২০২১ উপলক্ষে চিটাগংয়ের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ সেনা অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন হাসিনা। সেখানেই বিদেশি আগ্রাসন নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, ‘‘আমরা শান্তির বজায় রাখায় বিশ্বাসী। দেশপিতার বিদেশনীতি সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে এবং কারও ক্ষতিসাধন না করতে শিখিয়েছে। সেই নীতিতেই বিশ্বাসী আমরা। কিন্তু বহির্শত্রু যদি আক্রমণ করে, সে ক্ষেত্রে দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমিকতা রক্ষা করার যোগ্যতাও অর্জন করেছি আমরা।’’


হাসিনার কথায়, ‘‘বিদেশি শত্রু যদি কখনও আক্রমণ করে, দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমিকতা রক্ষার ক্ষমতা আছে বাংলার মাটির বীর সন্তানদের। সকলের সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিতে তৈরি আমরা। কিন্তু দেশের সেনাকে সতর্ক থাকতে হবে। অটল থাকতে হবে নিষ্ঠা এবং কর্তব্যে। প্রয়োজনে দেশের জন্য আত্মবিসর্জন দিতে হবে।’’


এ দিন সরাসরি কোনও দেশের নাম যদিও মুখে আনেননি হাসিনা। কিন্তু মূলত ভারতের সঙ্গেই সীমান্ত (Bangladesh Border) রয়েছে তাদের। সীমান্তের সামান্য অংশ রয়েছে মায়ানমারের সঙ্গে। তাই হাসিনার মন্তব্যে ভারতের উদ্দেশেই বার্তা দেখছেন কূনীতিকরা। এমনিতে দুই দেশের মধ্যে বরাবর সুসম্পর্ক থাকলেও, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA), জাতীয় নাগরিকত্ব পঞ্জি (NRC) এবং সর্বোপরি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সাম্প্রতিক কালে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে টানাপড়েন দেখা গিয়েছে ঢাকার। 


এর নেপথ্যে রয়েছে ভারতের শাসকদল বিজেপি-র ভোটনীতি। বাংলা, অসম, ত্রিপুরায় ভোটের সময় লাগাতার বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশকে হাতিয়ার করেছে তারা। ভারতে জায়গা না পেয়ে মায়ানমার থেকে চলে আসা রোহিঙ্গাদের একটা বড় অংশের বাংলাদেশে ঢুকে পড়া নিয়েও সঙ্ঘাত তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসিনার মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।