কলকাতা: ফ্ল্যাট বা বাড়ি কিনতে হোক বা গাড়ি কিনতে, ঋণ (bank loan) প্রায় সবারই লাগে। কখনও ব্যক্তিগত কোনও কাজের জন্য পার্সোনাল লোন, কখনও বাইকের জন্য। এই লোনের জন্য অনেকসময়েই বিস্তর দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। কখনও প্রয়োজনমতো টাকা ঋণ মেলে না। কখনও আবার চড়া সুদের কারণে ঋণ নিতে সমস্যা হয়। কখনও আবার ঠিকমতো নথি থাকে না বলে ব্যাঙ্ক থেকে সহজে লোন মেলে না। ঋণ নেওয়ার কথা হলে কী কী নথি গুছিয়ে রাখবেন? হাতের কাছে কোনটা রাখতে হবে? দেখে নেওয়া যাক।


এক এক রকমের নথির জন্য নথির সামান্য হেরফের হয়ে থাকে। সেগুলো কী কী, তা একটু পরে আসা যাক। তার আগে দুটি কথা প্রয়োজন। বাড়ি বা গাড়ির লোনের জন্য অনেকেই আগে থেকে পরিকল্পনা করেন। ইদানিং, এর জন্য ইনকাম ট্যাক্স (Income Tax File) ফাইল করা থাকলে সুবিধা হয়। বাড়ি বা গাড়ির লোনের জন্য অন্তত ২ বছরের ITR করা থাকলে, লোন পেতে সুবিধা হয়। যাঁরা আয়করের আওতায় পড়েন না, তাঁরাও ট্যাক্স ফাইল করে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে লোন পেতে এবং বিদেশে যাওয়ার ভিসা পেতে সুবিধা হয়। এছাড়াও CIBIL Score যেন ভাল থাকে। ঠিকমতো EMI দিলে এই স্কোর ভাল থাকে। যাঁরা আগে কখনও লোন নেননি, তাঁদের যদি ক্রেডিট কার্ড (Credit Card) থাকে এবং সেই কার্ডের পেমেন্ট সবসময় ঠিকমতো হয়ে থাকে তাহলে CIBIL স্কোর ভাল থাকে।


১. সম্পত্তি সংক্রান্ত ঋণ:


এই ধরনের ঋণ পেতে গেলে চাকরিরতদের জন্য প্রয়োজন


বাসস্থানের প্রমাণ (রেশন কার্ড/ফোনের বিল/ বিদ্যুৎ বিল/ ভোটার কার্ড)


পরিচয়ের প্রমাণ (ভোটার কার্ড/আধার কার্ড/ড্রাইভিং লাইসেন্স/অফিসের পরিচয়পত্র)


সাম্প্রতিক ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট/যে অ্য়াকাউন্টে গত ৬ মাস ধরে বেতন ঢোকে তার পাসবই


গত ৬ মাসের স্যালারি স্লিপ (Salary Slip)


গত ২ বছরের Form 16


ওই সম্পত্তির যাবতীয় নথির ফটোকপি


এই ধরনের ঋণ পেতে গেলে স্বনিযুক্ত পেশার ব্যক্তিদের জন্য প্রয়োজন


গত ২ বছরের সার্টিফায়েড ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট (Certified Financial Statement)


বাসস্থানের প্রমাণ (রেশন কার্ড/ফোনের বিল/ বিদ্যুৎ বিল/ ভোটার কার্ড)


পরিচয়ের প্রমাণ (ভোটার কার্ড/আধার কার্ড/ড্রাইভিং লাইসেন্স)


গত ৬ মাসের ব্যাঙ্ক লেনদেনের স্টেটমেন্ট


ওই সম্পত্তির যাবতীয় নথির ফটোকপি



২. ব্যক্তিগত লোনের (Personal Loan) জন্য 


অনেকক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত ঋণ বা পার্সোনাল লোনের প্রয়োজন হয়। অনেকসময়েই ক্রেডিট কার্ড থাকলে ব্যাঙ্ক সেরকম নথি ছাড়াই এই ঋণ দেয়। কিন্তু সেটা নাহলে যে যে নথিগুলি লাগে


পরিচয়ের প্রমাণ (ভোটার কার্ড/আধার কার্ড/ড্রাইভিং লাইসেন্স)


বাসস্থানের প্রমাণ (রেশন কার্ড/ফোনের বিল/ বিদ্যুৎ বিল/ ভোটার কার্ড/আধার কার্ড)


গত ৩ মাসের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, কখনও কখনও ৬ মাসের পাসবইয়ের কপি


সাম্প্রতিক স্যালারি স্লিপ এবং শেষ Form 16



৩. ব্যবসা সংক্রান্ত ঋণ (Business Loan)


অনেক ছোট-বড় ব্যবসায়ী, তাঁর ব্যবসার জন্য ঋণ নেন। এগুলিকে Business Loan বলা হয়। এর জন্য প্রয়োজন-


PAN Card- ব্য়ক্তিগত/সংস্থা/ফার্মের নামে


আধার কার্ড
পাসপোর্ট
ভোটার কার্ড
ড্রাইভিং লাইসেন্স- এগুলির মধ্যে যে কোনও ২টি বা তার বেশির নথি। বাসস্থান এবং পরিচয়ের নথি হিসেবে এটি কাজে লাগবে।


গত ৬ মাসের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট


সাম্প্রতিক ITR এবং গত ২ বছরের আয়ের কম্পুটেশন, ব্যালান্স শিট, লাভ-ক্ষতির হিসেবের নথি। এগুলি CA Certified হতে হবে।


Proof of continuation অর্থাৎ ITR, ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স সার্টিফিকেট


এছাড়া প্রয়োজন মতো, ব্যবসা সংক্রান্ত নথি প্রয়োজন। যেমন পার্টনারশিপ ডিড, একক ব্যবসা হলে তাঁর নথি--


৪. বাণিজ্যিক গাড়ি কিনতে গেলে (Commercial Car loan)


অনেক ছোটখাট ব্য়বসায়ী কাজের জন্য বাণিজ্যিক গাড়ি কিনতে চান। অনেকে বাণিজ্যিক গাড়ি কিনে ব্যবসা করতে চান। তাঁদের জন্য প্রয়োজন বেশ কিছু নথি


বয়সের প্রমাণ
পরিচয়পত্র
অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম
ছবি
বাসস্থানের প্রমাণ
আয়ের নথি
Work in Hand/Contract-এর নথি
এখন কোনও গাড়ি থাকলে তার নথি
সিগনেচার ভেরিফিকেশন প্রুফ
এবং এর সঙ্গেই প্রয়োজন মতো আরও নথি দিতে হতে পারে।


ঋণ বরাদ্দ হয়ে গেলে, তা ছাড়ার আগে আরও কিছু নথি লাগে।
RTO-এর নথি, তার সঙ্গে ঋণ চুক্তি বা লোন এগ্রিমেন্টের কপি
পোস্ট ডেটেড চেক, ECS ফর্ম (ব্যাঙ্ক থেকে EMI কাটার জন্য)
মার্জিন মানি রিসিপ্ট
ইনস্যুরেন্স-এর নথি


বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ঋণ দেওয়ার বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। তার জন্য প্রয়োজনীয় নথির তালিকায় কিছুটা অদল-বদল হতে পারে। তাই সবার আগে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া প্রয়োজন।


আরও পড়ুন: সোনায় ঠাসা! গোটা পৃথিবীর সম্পদের চেয়েও দামি! এ কোন জায়গা?