নয়াদিল্লি: আয়কর কাঠামো বদলাল না। উল্টে দাম রোজকারের কাজে লাগে এমন বহু জিনিসের দাম বাড়ল। যেমন, বিদেশি মোবাইল ফোন, মোবাইল ফোনের চার্জার, ইলেকট্রনিক্স দ্রব্য, কটন, গাড়ির যন্ত্রাংশের। তবে দীর্ঘমেয়াদি সুফলের আশায় পরিকাঠামোক্ষেত্রে বিপুল বরাদ্দ করা হল। করোনা-আবহে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও বরাদ্দ বাড়ল ১৩৭ শতাংশ। করোনা-কালে আইসিইউতে চলে যাওয়া অর্থনীতির হাল ফেরাতে মোদি সরকার কী দাওয়াই দেয়, সেদিকে নজর ছিল গোটা দেশের। সোমবারের বাজেটে বহু ঘোষণাতেই মধ্যবিত্তের মুখে নামল অন্ধকার। আবার সুদুরপ্রসারী উন্নয়নের স্বার্থে ঘোষিত কিছু প্রকল্প মুখে হাসিও ফোটাল। করোনার জেরে আয় কমেছে, আবার জিনিসপত্রের চড়া দামের জেরে খরচ বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ চাকুরিজীবীরা আয়কর ছাড়ের আশা করলেও কোনও সুরাহা দিল না কেন্দ্রীয় সরকার। তবে, করোনায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার দেশবাসীর মৃত্যুর পর পর, স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বুঝে এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বরাদ্দ করা হয়েছে ২ লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকা। মোদির ড্রিম প্রজেক্ট স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৪১ হাজার কোটি টাকা। দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের লক্ষ্যে, বিনিয়োগ টানতে ও কর্মসংস্থান তৈরির জন্য জাতীয় সড়ক তৈরিতে ১ লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বাজেটে । রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া উন্নত মানের জামাকাপড় তৈরি করতে সাতটি টেক্সটাইল পার্ক তৈরি হবে, ২০টি বড় শহরে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা করেছেন নির্মলা।
পরিকাঠামোয় জোর দেওয়া হয়েছে বলে বাজেট সমর্থন করে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য, কৃষিতে বিপুল বরাদ্দের ফলে দীর্ঘমেয়াদি সুফল মেলার সম্ভাবনা রয়েছে ঠিকই। তবে মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের জন্য তাৎক্ষণিক কোনও সুরাহার খবর এই বাজেটে নেই।
কারণ, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়েনি। পঁচাত্তর বছরের বেশি বয়সীদের জন্য শুধু রিটার্ন ফাইলে রেহাই দেওয়া হয়েছে। আয়করে কোনও ছাড় নেই। মোবাইল ফোন, চার্জার, সুতির পোশাকের মতো নিত্যব্যবহার্য জিনিসের দাম বেড়েছে। যন্ত্রাংশেরও দাম বাড়ায়, গাড়িরও দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলেছেন, কী বাজেট করেছে? ভেকধারী সরকারের ফেকধারী বাজেট। হুক্কা হুয়া বাজেট। শুধু বিজেপিকে যারা টাকা দেয়, তাদের জন্য আছে, বাকি কারও জন্য কিছু নেই।
১৯৫২ সালের পর এই প্রথম এমন বাজেট, যে সময় দেশে ঋণাত্মক বৃদ্ধি বা মন্দা চলছে। এই প্রেক্ষাপটে বাজেটের দীর্ঘমেয়াদি দাওয়াইয়ে সাধারণ মানুষ কী ফল পাবেন, সেই উত্তর অবশ্য দেবে সময়।