Nirmala Sitharaman : ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় (Digital India) এখন চিন্তা বাড়াচ্ছে ডিজিটল জালিয়াতি (DIgital Fraud)। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে প্রতি বছর লাফিয়ে বাড়ছে ডিজিটাল প্রতারণার (Cyber Crime) ঘটনা। যার মাশুল গুণতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। চলতি অর্থবর্ষে দেশে ডিজিটাল ফ্রডের পরিমাণ শুনলে আপনিও অবাক হবেন। খোদ সংসদে দাঁড়িয়ে এই পরিসংখ্যান দিয়েছে সরকার।
লোকসভায় চাঞ্চল্যকর তথ্য় দিয়েছে সরকারগত ১০ বছরে দেশে ডিজিটাল লেনদেন যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে ডিজিটাল জালিয়াতির সংখ্যা। এর ফলে লোকসানও বেড়েছে অনেক। বলতে গেলে, দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটা একটা বড় ধাক্কা। লোকসভায় জিজ্ঞাসা করা এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে- ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির প্রাপ্ত অভিযোগ অনুসারে, 2014-15 সালে মানুষ জালিয়াতির মাধ্যমে 18.46 কোটির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। চলতি অর্থ বছরে কেবল ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই সংখ্যা 107 কোটি ছাড়িয়েছে।
দ্বিগুণের বেশি টাকা হারাচ্ছে মানুষগত 10 বছরে সাইবার জালিয়াতির কারণে জনগণের ক্ষতির বিষয়ে লোকসভায় অর্থ মন্ত্রককে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। এই প্রশ্নের উত্তরে অর্থ মন্ত্রক 2014-15 থেকে চলতি অর্থবছরের পরিসংখ্যান সংসদের সামনে তুলে ধরেছে। তবে অর্থ মন্ত্রক বলেছে, এই ধরনের জালিয়াতির বিষয়ে সীমিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে নথিভুক্ত তথ্য থেকে যা আসছে সেটুকুই তুলে ধরা হচ্ছে।
কী বলছে পরিসংখ্যানএই তথ্য অনুসারে 2014-15 অর্থবর্ষে 18.46 কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে দেশে। 2015-16 অর্থবছরে তা বেড়ে প্রায় 27 কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এটি 2016-17 আর্থিক বছরে প্রায় 28 কোটি এবং 2017-18 আর্থিক বছরে প্রায় 80 কোটিতে পৌঁছেছে। বলতে গেলে জিডিটাল ফ্রডের ঘটনা লাফিয়ে বাড়ছে দেশে।
2023-24 সালে সবচেয়ে বেশি জালিয়াতি ঘটেছেবছরের পর বছর এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। যদি আমরা 2023-24 অর্থবছরের কথা বলি, তাহলে গত অর্থ বছরে গত 10 বছরের তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক সংখ্যক জালিয়াতির মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। লোকসানের মুখে পড়েছে গ্রাহকরা। বিগত অর্থ বছরে প্রায় 177 কোটি টাকার জালিয়াতি নথিভুক্ত করা হয়েছে। যদি আমরা চলতি অর্থবছর অর্থাৎ 2024-25 এর কথা বলি, তাহলে এখানেও প্রথম 9 মাসে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমে 107 কোটির বেশি প্রতারণা হয়েছে।
এখানে রইল সম্পূর্ণ তথ্যএখানে আবার উল্লেখ করা জরুরি, এই পরিসংখ্যানগুলি সারা দেশে ঘটছে এমন সব ধরনের ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনা নয়। এই সীমিত পরিসংখ্যান শুধুমাত্র বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্ত অভিযোগের তথ্য। অর্থাৎ এই প্রেক্ষাপটের যদি কথা বলি, দেশে প্রতি বছর ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে জনগণের কয়েকশো কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।
সরকার প্রতিনিয়ত সতর্ক করছে গ্রাহককেসরকার লোকসভায় ডিজিটাল জালিয়াতির প্রশ্নের উত্তরে উল্লেখ করেছে, সরকার ক্রমাগত গ্রাহক ও নাগরিকদের সতর্ক করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই ধরনের ডিজিটাল ও অনলাইন জালিয়াতি রোধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এর পাশাপাশি, সরকারও চেষ্টা করেছে যে এই ধরনের ডিজিটাল প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা যায়। এর জন্য বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে যেখানে উপভোক্তারা কোনোভাবে প্রতারিত হলে অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পারেন। যাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপরাধীর কাছে পৌঁছানো যায় ও উপভোক্তাদের যেকোনও ক্ষতি থেকে রক্ষা করা যায়।