Retirement Corpus: চাকরিজীবীদের জন্য এই স্কিমটি অবসরজীবন সুরক্ষিত করার এক বড় উপায়। চাকরিতে থাকাকালীনই মাসিক বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ অবসরকালীন পেনশন হিসেবে একটি নির্দিষ্ট ফান্ডে এই স্কিমের অধীনে জমা হয়ে যায়। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন। এই স্কিমের নাম এমপ্লয়ি পেনশন ফান্ড (EPF) বা ইপিএফ। এই ফান্ডে কর্মীর মাসিক বেতনের ১২ শতাংশ তাঁর বেতনের থেকে কেটে জমা হয় এবং একইসঙ্গে নিয়োগকারী সংস্থাও কর্মীর নামে তাঁর বেসিক পে-র ৩.৬৭ শতাংশ এই ফান্ডে জমা (EPF Calculator) করে থাকে। এই টাকা প্রথম দিকে অনেক কম বলে মনে হবে, কিন্তু ৫৮ বছর বয়সে অবসর গ্রহণের সময় এই টাকাই বাড়তে বাড়তে বিপুল অঙ্কে পৌঁছাবে যা আপনার অবসরজীবনকে আরও সুরক্ষিত করে তুলবে।
ন্যাশনাল পেনশন স্কিম বা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের মত এটিও একটি অবসরভিত্তিক সেভিংস স্কিম। পিপিএফ এবং এনপিএসে যেখানে আপনার বিনিয়োগের অনেক ধরনের উপায় আছে এবং নমনীয়তা আছে। সেখানে ইপিএফের ক্ষেত্রে একই নিয়মে প্রতি মাসে টাকা বিনিয়োগ করে যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। এই ইপিএফে জমানো টাকার উপরে কেন্দ্র সরকার নির্দিষ্ট হারে সুদ দিয়ে থাকে। ইপিএসের মাধ্যমে পেনশন এবং বিমা দুয়ের সুবিধেই দেওয়া হয়ে থাকে।
ইপিএফে কর্মীর বেতনের ১২ শতাংশ কর্মী নিজে এবং কর্মীর নিয়োগকারী সংস্থা দুই তরফেই টাকা বিনিয়োগ করা হয়। আর এই ১২ শতাংশের মধ্যে ৮.৩৩ শতাংশ জমা হয় এমপ্লয়ি পেনশন স্কিমে আর ৩.৬৭ শতাংশ জমা হয় ইপিএফ অ্যাকাউন্টে। ইপিএফ অ্যাকাউন্টে এখন বার্ষিক ৮.২৫ শতাংশ সুদ দেওয়া হয়ে থাকে কেন্দ্র সরকারের তরফে।
ধরে নেওয়া যাক কোনও কর্মীর মাসিক বেতন ৬৪ হাজার টাকা, আর তাঁর বেসিক বেতন হল ৩১,৯০০ টাকা। ফলে এই বেসিক বেতনের ১২ শতাংশ অর্থাৎ ৩৮২৮ টাকা আর ৩.৬৭ শতাংশ অর্থাৎ ১১৭২ টাকা, সব মিলিয়ে ৫০০০ টাকা প্রতি মাসে সেই কর্মী জমান তাঁর ইপিএফ অ্যাকাউন্টে। সেই কর্মী যদি ২৫ বছর বয়সে চাকরি শুরু করে থাকেন, ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ৩৩ বছর কোনও বিরতি ছাড়াই এই টাকা জমা করিয়ে যান, তাহলে বিপুল টাকা জমবে সেই কর্মীর। ধরে নেওয়া যাক, তাঁর বেতন প্রতি বছর ১০ শতাংশ করে বাড়ানো হবে এবং সেই হিসেবে তাঁর ইপিএফে অবদানও বাড়বে প্রতি বছর। তাহলে এই নিয়মে ৫৮ বছর বয়সে অবসর গ্রহণের সময় তিনি পাবেন ৩.৫ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে আসল লাভ হচ্ছে বেসিক পে-র ১২ শতাংশ টাকা কর্মীর জমা করার পাশাপাশি নিয়োগকারী সংস্থাকেও কর্মীর নামে জমা করতে হচ্ছে। অর্থাৎ আপনি ২৫০০ টাকা জমা করলে সংস্থাও দেবে ২৫০০ টাকা। এক্ষেত্রে সুদের হার নির্দিষ্ট, শেয়ার বাজারের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই, ফলে বাজার ওঠা-নামা করলেও রিটার্ন বদলায় না।