HDFC Life QuickProtect Plan : যেকোনও অর্থবর্ষ শুরু হওয়ার আগে এটা খুবই সাধারণ বিষয়। এই সময় কিছুটা হলেও আর্থিক বিষয়ে চাপ কম থাকে আমাদের। তাই এপ্রিলে নতুন অর্থবর্ষ শুরু হওয়ার আগে আপনার আর্থিক পরিকল্পনার বিষয়ে হিসেবনিকেশ কষে নিন। এতে সারা বছর মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাবেন আপনি। এই মূল্যায়ন আপনাকে গত বছরের আর্থিক উন্নতির পাশাপাশি বর্তমানের অবস্থা সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা দেবে। এখানেই শেষ নয়, এই হিসেবনিকেশ আপানাকে কম ও বেশি সময়ের আর্থিক পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।
এই ব্লগ পোস্টে আপনি ৭টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ পাবেন, যা আপনার নতুন অর্থবর্ষের আর্থিক মূল্যায়নের সময় যোগ করা উচিত। এর পাশাপাশি কীভাবে এই আর্থিক মূল্যায়ন করা উচিত, তারও পরামর্শ দেওয়া থাকবে এখানে।
১ সম্পদের পরিমাণ ও স্থান দেখে প্রয়োজনে দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনুন
আপনার আর্থিক বিনিয়োগের উন্নতির স্বার্থে প্রথমেই আপনার পোর্টফোলিওর মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। সেই ক্ষেত্রে আপনার সম্পদ যে সব জায়গায় রাখা রয়েছে সেদিকে নজর দেওয়া উচিত। কোনও কারণে বিশেষ কোথাও সম্পদের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলে, অবিলম্বে সেখানে ভারসাম্য আনা উচিত। আপনার পোর্টফোলিওকে আগের মতো ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলাই প্রথম কাজ। ধরে নেওয়া যাক, আপনার শেয়ারে বিনিয়োগ যদি বেশি হয়ে থাকে, তাহলে তাতে ভারসাম্য আনা আবশ্যক। সেই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শেয়ার বিক্রি করে আপনার বন্ডে বা সোনায় বিনিয়োগ করা উচিত। একইভাবে আপনি চাইলে আপনার 'সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান' (SIP)-তে পরিবর্তন আনতে পারেন। সেই টাকাও বন্ডে বা সোনায় বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এই আর্থিক মূল্যায়নের মাধ্যমে সহজেই আপনার পোর্টফোলিওর ক্ষতি এড়ানো যেতে পারে।
২ আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্যের বিষয়েও মূল্যায়ন করুন
বছরের শুরুতেই আপনি আর্থিক লক্ষ্যগুলির দিকে কতটা পৌঁছতে পেরেছেন, তা বুঝে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অনেক সময় এরকমও হতে পারে, আপনার লক্ষ্যের জন্য নির্ধারিত অর্থের পরিমাণ প্রাথমিক হিসেবের থেকে অনেকটাই বেড়ে যায়। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, আপনি যদি কোনও গাড়ি কেনার জন্য মনস্থির করে থাকেন, সেখানে গাড়ির 'ইনপুট কস্ট' বৃদ্ধি গাড়ির দাম বাড়িয়ে দেবে। স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি কেনার জন্য আপনার আর্থিক হিসেবনিকেশ ধাক্কা খাবে। সেই কারণে লক্ষ্যে পৌঁছতে আপনাকে মাসিক সঞ্চয়ের পরিমাণের বিষয়ে নতুন করে বিবেচনা করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে গত বছরের পরিবর্তিত জীবনযাত্রার কারণেও আপনাকে আর্থিক অগ্রাধিকারের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
৩ আপনার পোর্টফোলিওর মূল্যায়ন করুন
আপনার পোর্টফোলিওর একটি সময়ে সময়ে পর্যালোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আর্থিক বছরের শুরুতে এই কাজ করার আদর্শ সময়। পোর্টফোলিও পর্যালোচনার মাধ্যমে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন, কোথায় টাকা রেখে আপনার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। পাশাপাশি কোথায় তহবিল প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে তাও বুঝে নিতে পারবেন বিনিয়োগকারী। যদিও কম লাভের তহবিল ছেঁটে ফেলাও একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এই ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কমপক্ষে ১.৫ বছর কম পারফর্ম করেছে এমন ফান্ডগুলি কেবল বন্ধ করা উচিত। কম পারফরম্যান্সের ফান্ড বিবেচনা করার সময় দেখা উচিত, ওই ধরনের অন্যান্য ফান্ডে কত গড় লাভ এসেছে, তা দেখেই ফান্ড বা তহবিল থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
মনে রাখবেন, আপনার লক্ষ্য পরিবর্তিত হলে একটি পোর্টফোলিও মূল্যায়ন প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একটি ইক্যুইটি ফান্ডে অবসরের ১০-১৫ বছর আগে বিনিয়োগ করেন, সেই সময় আপনার লক্ষ্য এক থাকে। বর্তমানে আপনি 'টার্গেট অ্যামাউন্ট' বা লক্ষ্যের পরিমাণ থেকে মাত্র দুই বছর দূরে থাকলে ফিক্সড ইনকামের জায়গায় জমা তহবিলে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ান। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৪ জীবন বিমায় আপনার কত টাকা লাগবে তা হিসেব করুন
বিয়ে, পিতৃত্ব বা বাড়ির মালিকানার মতো গুরুত্বপূর্ণ জীবনের ঘটনাগুলি অনুভব করার পরে স্বাভাবিকভাবেই আপনার দায়িত্ব বেড়ে যায়। এই নতুন দায়িত্বগুলি পালন করার পর্যাপ্ত পরিমাণ জীবন বিমার কভারেজ নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপযুক্ত কভারেজ নির্ধারণ করতে ও আপনার অতিরিক্ত দায়িত্বগুলির পালনে পূর্বে যে হিসেব কষেছিলেন তা আরও একবার দেখে পর্যালোচনা করুন। সেই ক্ষেত্রে কোনও অতিরিক্ত কভারেজ প্রয়োজন হলে অবিলম্বে তা গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন, আপনার বিমা কভারেজ যেন আপনার ওপর নির্ভরশীলদের মাসিক আয় দেওয়ার জন্য যথেষ্ট হয়। এ ছাড়াও এই বিমা কভারেজের পরিমাণ কোনও বকেয়া ঋণ নিষ্পত্তি ও সন্তানদের শিক্ষার মতো খরচের জন্য যথেষ্ট হওয়া উচিত।
৫ আপনার স্বাস্থ্য বিমায় কত টাকা লাগবে বুঝে নিন
বিয়ে বা বাবা-মা হওয়ার মতো জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় আপনার স্বাস্থ্য বিমা কভারেজের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা প্রয়োজন। আপনি যদি এই ঘটনাগুলির জন্য আগে একটি ব্যক্তিগত পলিসি কিনে থাকেন, তবে তা আপনার প্রয়োজন মেটাবে না। আপনি ও আপনার পরিবারকে পর্যাপ্তভাবে বিমা কভারের অন্তর্ভুক্ত করতে ওই পলিসিকে ফ্যামিলি ফ্লোটার প্ল্যানে বদলে ফেলুন। পাশাপাশি পরিবারের জন্য কভারেজের পরিমাণ বাড়ান। এটি বিমা কভারেজের পাশাপাশি আপনাকে পলিসির যেকোনও সুবিধা গ্রহণ করতে দেবে।
৬ আপনার মাসিক বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ান
সাধারণত নতুন অর্থবর্ষের প্রথম দিকেই আয়কর জমার পরিকল্পনা করা উচিত। এতে আপনার কাছে সব আর্থিক বিকল্পগুলির মূল্যায়ন করার জন্য যথেষ্ট সময় থাকবে। যার ফলে সম্ভাব্য সর্বাধিক ট্যাক্স সংরক্ষণ করার জন্য আপনাকে যে পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হবে, তা দেখে নিন। এই ক্ষেত্রে আপনার কাছে বিনিয়োগ করার জন্য পুরো বছর থাকছে। চাইলে আপনি আপনার বিনিয়োগ বিভিন্ন তহবিলে ছড়িয়ে রাখতে পারেন। এই প্রাথমিক 'ট্যাক্স প্ল্যানিং' বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ, যদি আপনি মার্কেট লিঙ্কড বা বাজার-সংযুক্ত প্রোডাক্ট যেমন ELSS ও NPS-এ বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেন। বছরের শুরুতে একটি SIP শুরু করে আপনি সারা বছর ট্যাক্স বাঁচানোর পাশাপাশি বাজারের উত্থান-পতন থেকে উপকৃত হতে পারেন। আপনি যদি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, তাহলে আপনাকে এমন সময়ে বিনিয়োগ করতে হতে পারে, যখন বাজার হয়তো সবথেকে ওপরে থাকবে। সেই ক্ষেত্রে অস্থিরতার বাজারে ঝুঁকি নিয়েই আপনাকে বড় বিনিয়োগের পথে হাঁটতে হবে।
৭ নতুন অর্থবর্ষের আয়কর পরিকল্পনার জন্য সচেতন হোন
আপনার আর্থিক লক্ষ্যগুলির দিকে অগ্রসর হতে, প্রতি বছর আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আপনার এসআইপি বিনিয়োগ ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করুন। এর পাশাপাশি আপনি ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (NPS) এর মতো অন্যান্য বিনিয়োগের বিকল্পগুলিও দেখতে পারেন। যা আপনাকে 80C এর অধীনে ১.৫ লক্ষ টাকার ওপর ৫০,০০০ টাকা অতিরিক্ত কর ছাড় দেয়। এরপরও আপনার যদি ১১ বছরের কমবয়সী একটি মেয়ে থাকে, তাহলে তার জন্য একটি সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা অ্যাকাউন্ট খুলে আপনি আয়করের আরও সুবিধা নিতে পারবেন। যা আপনাকে PPF-এর মতো অন্যান্য ছোট সঞ্চয় প্রকল্পের তুলনায় বেশি রিটার্ন দেবে। আপনি HDFC লাইফ কুইকপ্রোটেক্ট প্ল্যানকে একটি এই ক্ষেত্রে সমাধান হিসাবে বিবেচনা করতে পারেন, যা Death, Disease, Disability এই (3D) বিমা কভার দিয়ে থাকে।
HDFC Life QuickProtect Plan (এইচডিএফসি লাইফ কুইকপ্রোটেক্ট প্ল্যান)
এই একটি প্ল্যানে চারটি কভারেজের সুবিধা রয়েছে। এখানে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু সুবিধা বিকল্প, গুরুতর অসুস্থতা প্লাস রাইডার, দুর্ঘটনাজনিত অক্ষমতা রাইডারের উপর আয়ের সুবিধা, বিশেষভাবে একটি গুরুতর অসুস্থতা রাইডারের সঙ্গে ১৯টি গুরুতর অসুস্থতার বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি লাইফ কভার ছাড়াও দুর্ঘটাজনিত মৃত্যতে 2x কভারেজ দিয়ে থাকে। জেনে নিন,HDFC লাইফ কুইকপ্রোটেক্ট প্ল্যানের মূল বৈশিষ্ট্য।
দুর্ঘটনাজনিত অক্ষমতার উপর HDFC লাইফ ইনকামের সুবিধা
দুর্ঘটনাজনিত স্থায়ী অক্ষমতার ক্ষেত্রে HDFC Life QuickProtect প্ল্যান পরবর্তী ১০ বছরের জন্য রাইডার সাম অ্যাসিওর্ড-এর ১ শতাংশের সমান নিয়মিত মাসিক আয়ের সুবিধা দিয়ে থাকে। এর অর্থ, আপনার যদি ১৫ লাখের প্যাকেজের জন্য ৭৫ লাখ আয়ের সুবিধা সহ একটি পলিসি থাকে, সেই ক্ষেত্রে আপনি প্রতি মাসে ১২,৫০০ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। যদি আপনি 'হায়ার সাম অ্যাসিওর্ড' বা নিশ্চিত আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করেন, সেক্ষেত্রে আনুপাতিকভাবে আপনার মাসিক আয়ও বৃদ্ধি পাবে।
এইচডিএফসি লাইফ জটিল অসুস্থতার ক্ষেত্রে সুবিধা
এই পলিসিতে ১৯টি গুরুতর অসুস্থতার যেকোনও একটি নির্ণয়ের পরে এককালীন অর্থ জমার বিষয়কে বোঝায়।
দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে সুবিধা
এইচডিএফসি লাইফ কুইকপ্রোটেক্ট বেছে নেওয়ার একটি সুবিধা হল, এতে আপনি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ঘটনায় 'অ্যাডিশনাল সাম অ্যাসিওর্ড' বা
অতিরিক্ত নিশ্চিত রাশি হিসাবে 'বেসিক সাম অ্যাসিওর্ড'-এর ১০০ শতাংশ সমতুল্য অর্থ পাবেন।
এইচডিএফসি লাইফ 2 প্রোটেক্ট লাইফ ক্লিক করুন
'HDFC Life Click 2 Protect Life' মৃত্যুর ক্ষেত্রে বিপুল আর্থিক সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
আপনার যোগ্যতা পরীক্ষা করতে ও আরও বিশদ তথ্যের জন্য HDFC Life-এর QuickProtect-এ যান বা টোল-ফ্রি নম্বর 1800-266-9777-এ কল করুন। গ্রাহক সেবা প্রতিনিধিদের প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পাওয়া যায়।
এই নির্দিষ্ট কৌশলগুলি বাস্তবায়িত করে আপনি আপনার আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারবেন। এই প্ল্যানের মাধ্যমে আগামী বছরগুলিতে আপনার আর্থিক যাত্রা আরও মসৃণ হবে।