Job Cuts: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসার পরে বহু মানুষই কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। এমন খবর আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় স্তরে প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপরেই বিনিয়োগ ও মনোযোগ বাড়ানোর জন্য বহু খ্যাতনামা টেক সংস্থা নিকট অতীতে কর্মী ছাঁটাই করেছেন। আগামী সময়ে এই কর্মী ছাঁটাইয়ের মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই আবহেই ইগনাইট-টেক সংস্থার সিইও তাঁর সংস্থার ৮০ শতাংশ কর্মীকে একবারে বরখাস্ত করেছেন। কিন্তু এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে জোর দেওয়ার জন্য নয়। এই সংস্থার সিইও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব যে সুদূরপ্রসারী হবে তা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, আর তাই সংস্থার কর্মীদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে স্বীকার করতে এবং কাজের মধ্যে সেটিকে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁর সংস্থা বেশিরভাগ কর্মী তাতে অস্বীকার করেন, তাই ৮০ শতাংশ কর্মীকেই তিনি ২০২৩ সালে ছাঁটাই করে দিয়েছিলেন।
তাঁর এই পদক্ষেপই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যদিও তাঁর এই সিদ্ধান্ত এই সময়ের কঠোর বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে। সিইও এরিক ভন এখনও ২০২৩ সালের কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। ফরচুন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন যে বৃহৎ পরিসরে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কঠিন, কিন্তু প্রয়োজন হলে তিনি তা করতে রাজি আছেন। এমনকী এই কাজ আবারও করতে পিছপা হবেন না তিনি।
সংস্থায় AI Monday নিয়ে তীব্র বিরোধিতা
সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে এরিক ভন ২০২৩ সালে এআইকে ব্যবসার জন্য হুমকি বলে মনে করেছিলেন। এরপরে তিনি ‘এআই মনডে’ শুরু করেন অর্থাৎ সপ্তাহের এমন একটি দিন যখন সংস্থার সকল কর্মীকে বাধ্যতামূলকভাবে এআই প্রকল্পগুলিতে মনোনিবেশ করতে হবে। সিইওর এই আদেশের বিরুদ্ধে শত শত কর্মী প্রতিবাদ জানান, তিনি তাঁর কর্মীদের বোঝানোর বদলে ছাঁটাই করেন সংস্থা থেকে। তাঁর বক্তব্য ছিল হয় এআই মনডে নীতি মেনে চলুন, নাহলে কাজ ছেড়ে দিন।
এরিক ভনের মতে এআই প্রযুক্তি স্বীকার করে নেওয়ার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি প্রতিবাদ এসেছে কারিগরি ক্ষেত্র থেকে। এআই গ্রহণের বদলে এই কর্মীরা এআইয়ের সীমাবদ্ধতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে মার্কেটিং এবং সেলস টিমের লোকেরা কোনও দ্বিধা ছাড়াই নতুন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। সিইও নিজেই তাঁর বেতনের ২০ শতাংশ এআই প্রযুক্তি প্রশিক্ষণে ব্যয় করছেন। এর মধ্যে এআই সরঞ্জাম ও প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাসের খরচও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
২০২৪ সালের মধ্যে এরিক ভনের এই সংস্থা কঠিন পরিবর্তনের সুফল দেখতে পারে। ইগনাইট-টেক দুটি এআই সলিউশন চালু করেছে যার পেটেন্ট প্রক্রিয়া চলছে। এর বাইরে সংস্থাটি আরও একটি সংস্থাকে অধিগ্রহণ করেছে এবং এর থেকে প্রায় ৭৫ শতাংশ EBITDA অর্জন করেছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে এরিক ভনের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপগুলি কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে।
এআই প্ল্যাটফর্ম রাইটারের গবেষণায় আরও জানা গিয়েছে যে আরও অনেক সংস্থা এরিক ভনের মতই একইরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছে। আর সেখানেও এক তৃতীয়াংশ কর্মী এআই সম্পর্কিত সংস্থার পরিকল্পনার ক্ষতি করছে। মিলেনিয়াল এবং জেনারেশন জেডের ৪১ শতাংশ কর্মী এআই প্রযুক্তি এড়িয়ে যেতে চাইছেন।