India Iran Trade : ইজরায়েল-ইরান সংঘাতের (Iran Israel War Situation) ফলে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। উভয় পক্ষের আক্রমণে প্রচুর প্রাণহানি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লড়াই আরও বাড়তে থাকলে ভারতের উপর এর প্রভাব পড়তে পারে। সেই ক্ষেত্রে তেল ছাড়াও বাড়তে পারে এই জিনিসগুলির দাম।

সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে তেলের দামে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে এই লড়াই আরও জোরদার হলে তেলের দাম বৃদ্ধি পাবে। ফলে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে পারে ভারত। মনে রাখবেন, তেলের চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করে ভারত। তেল ব্যয়বহুল হলে পেট্রোল-ডিজেল, গ্যাস ও অন্যান্য জিনিসও সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। ইরান জানিয়েছে, তাদের দুটি তেলের খনিতে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। ইতিমধ্যেই সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে।

এছাড়া, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে তেলের দাম আকাশচুম্বী হতে পারে। এই বিষয়ে ইরাকের বিদেশমন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন, যদি এই গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ২০০ থেকে ৩০০ ডলার পর্যন্ত যেতে পারে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে। এই সংকট মোকাবিলায় ভারতের উচিত তার তেলের ভাণ্ডার মজুদ রাখা।

মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে, জিডিপি ক্ষতিগ্রস্ত হবেতেলের দাম বৃদ্ধি পেলে মুদ্রাস্ফীতিও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সরকারের ভর্তুকি ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং সাধারণ মানুষের পকেটে প্রভাব পড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০ ডলার বৃদ্ধি পেলে দেশের প্রবৃদ্ধি ০.৩ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।

কোম্পানিগুলির লাভও ক্ষতিগ্রস্ত হবেঅনেক বড় ভারতীয় কোম্পানি যারা পেট্রোলিয়াম বা সংশ্লিষ্ট জিনিসের উপর নির্ভরশীল, যেমন আইওসি, বিপিসিএল, এইচপিসিএল, তাদের আয় প্রভাবিত হতে পারে। অন্যদিকে, যেসব কোম্পানি নিজেরাই তেল উত্তোলন করে, তাদের আয় বাড়তে পারে কিন্তু তাও সরকারের নীতির দ্বারা প্রভাবিত হবে।

বিমান ভাড়া, রং, রাসায়নিক ও যানবাহনের উপর প্রভাববিমানে ব্যবহৃত জ্বালানিও তেল থেকে তৈরি হয়। তেল ব্যয়বহুল হলে বিমানের টিকিট ব্যয়বহুল হতে পারে। রং উৎপাদনকারী কোম্পানি, রাসায়নিক, সার এবং গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলিও সরাসরি প্রভাবিত হবে। এর ফলে অনেক জিনিস ব্যয়বহুল হতে পারে।

ভারতের বাণিজ্যও প্রভাবিত হতে পারেভারত ইরান ও ইজরায়েল উভয়ের সঙ্গেই ব্যবসা করে। যদি সংঘাত তীব্র হয়, তাহলে এই দেশগুলি থেকে পণ্য পাঠানো ও গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। জাহাজের রুট পরিবর্তন করতে হতে পারে ও বিমা খরচও বাড়তে পারে।

ওষুধ ও পোশাক বাণিজ্যের উপর প্রভাব পড়বেভারত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে অনেক ওষুধ পাঠায়। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে, সেখানে পাঠানো অর্ডার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর আগেও, যখন হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল, তখন ভারতের টেক্সটাইল অর্ডার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ভারতীয় কোম্পানিগুলিরও ইজরায়েলে ব্যবসা রয়েছেটিসিএস, উইপ্রো, আদানি গ্রুপ, এসবিআই, সান ফার্মা এবং ইনফোসিসের মতো অনেক বড় ভারতীয় কোম্পানির ইজরায়েলে অফিস রয়েছে। যদি যুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে এটি তাদের কর্মচারী ও ব্যবসা উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে। কিছু কোম্পানি ইতিমধ্যেই প্রয়োজনে তাদের কাজ ভারতে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা শুরু করেছে।