Ujala Brand Success Story: ভারতের এফএমসিজি সেক্টরের ক্ষেত্রে এমপি রামচন্দ্রনের (MP Ramachandran) কাহিনি এক উজ্জ্বল সাফল্যের দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। তাঁর কাহিনিই প্রমাণ যে দৃঢ় সংকল্প থাকলে জীবনে কী কী অর্জন করা যায়। ১৯৮৩ সালে ভাইয়ের (Success Story) কাছ থেকে মাত্র ৫ হাজার টাকা ধার করে কেরালার ত্রিশুরে একটি ছোট্ট ল্যাবরেটরি চালু করেছিলেন এমপি রামচন্দ্রন। সংস্থার নাম দেন জ্যোতি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। আর সেই সংস্থারই বার্ষিক টার্ন ওভার আজ ১৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
এই জ্যোতি ল্যাবরেটরিজ থেকে প্রথম তৈরি করা হয় ‘উজালা’ যা আসলে ছিল একটি সুপ্রিম লিকুইড ফেব্রিক হোয়াইটনার। বাজারে সেই সময় যে ফেব্রিক হোয়াইটনার উপলব্ধ ছিল তা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাই তিনি নিজেই এই ল্যাবে হোয়াইটনার তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। প্রাথমিকভাবে ৬ জন মহিলার একটি দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই উজালা বিক্রি করতেন সেই সময়। তারপর দ্রুত জনপ্রিয়তা ছড়াতে শুরু করে এবং ১৯৯৭ সালের মধ্যেই ভারত জুড়ে পরিচিত নাম হয়ে ওঠে উজালা। শুরু হয় জ্যোতি ল্যাবসের সাফল্যের যাত্রাপথ।
কেরালার ত্রিশুরে সেন্ট থমাস কলেজ থেকে বি.কম উত্তীর্ণ হয়ে একজন হিসাবরক্ষক হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন রামচন্দ্রন। তারপর একটি বিদেশি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির ম্যাগাজিন তাঁর হাতে আসে এবং সেখান থেকে বেগুনি রঞ্জকের ধারণা নিয়ে এক বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে টেক্সটাইল শিল্পে বিপ্লব আনেন এমপি রামচন্দ্রন। তারপরেই মেয়ে জ্যোতির নামে প্রথম ত্রিশুরের একটি জমি কিনে শুরু করেন জ্যোতি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড।
ধীরে ধীরে জ্যোতি ল্যাবস থেকে আলাদা আলাদা পণ্য বের করতে শুরু করেন তিনি। ফলে এই সংস্থাকে তিনি মাল্টি ব্র্যান্ডে পরিণত করেন। বিভিন্ন এফএমসিজি বিভাগে প্রবেশ করে এই সংস্থা যেমন এয়ার কেয়ার, ডিটারজেন্ট, মশা নিরোধক, ফেব্রিক এনহ্যান্সার। জার্মান সংস্থা হেনকেলকে অধিগ্রহণ করে জ্যোতি ল্যাবস যার ফলে তাদের বাজার উপস্থিতি আরও শক্তিশালী হয়। বর্তমানে সংস্থার বাজার মূলধন ১৩,৮৫৩ কোটি টাকা।
২০২০ সালে এমপি রামচন্দ্রন ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ থেকে অব্যাহতি নেন এবং অবসর গ্রহণ করেন। পরে তাঁর বড় মেয়ে এমআর জ্যোতিকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে সংস্থায় নিয়োগ করেন রামচন্দ্রন। বাস্তব জগতের সমস্যাগুলির সমাধান করার মাধ্যমেই নিজের ব্যবসাকে শীর্ষস্তরে নিয়ে গিয়েছেন রামচন্দ্রন।