বহু প্রতীক্ষিত অনলাইন গেমিং বিল আজ লোকসভায় পেশ হয়েছে, এবং এই বিল সম্পর্কে খবর জানার পর থেকেই সারা দেশ জুড়ে তা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। খসড়া আইনটি সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করেছে, আর এর মধ্যে অন্যতম হল নিষিদ্ধ অনলাইন গেমিং কার্যকলাপে যুক্ত সন্দেহে ব্যক্তিদের তল্লাশি ও তাদের গ্রেফতার করাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই খসড়া অনুসারে কর্তৃপক্ষকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে। এই খসড়া অনুসারে ডিজিটাল স্পেসে প্রবেশ করার এবং অবৈধ গেমিং কার্যকলাপ হোস্টিং বা সক্রিয় করার সন্দেহে কম্পিউটার সিস্টেম, সার্ভার বা ডিভাইসগুলি তদন্ত করার জন্য নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা থাকবে কর্তৃপক্ষের। এই বিলে বিস্তারিতভাবে ‘যে কোনও স্থান’ বলতে বোঝানো হয়েছে কোনও বাড়ি, গাড়ির ভিতরে, এছাড়া ইলেকট্রনিক রেকর্ড, স্টোরেজ ডিভাইস এবং ভার্চুয়াল স্পেসের মত ডিজিটাল সম্পদগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করে।
এই নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য শাস্তিও উল্লেখ করা হয়েছে এই বিলে। নিষিদ্ধ অনলাইন গেমিং খেলা, হোস্ট করা বা কাউকে গেম খেলতে উৎসাহিত করলে কাউকে ৩ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে। এমনকী ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এই ধরনের প্ল্যাটফর্মের বিজ্ঞাপন বা পৃষ্ঠপোষকতা করলে ২ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
এই আইনে ই-স্পোর্টস এবং গ্যাম্বলিংয়ের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন করা হয়েছে। ই-স্পোর্টসকে প্রতিযোগিতামূলক, দক্ষতা ভিত্তিক, ডিজিটাল গেম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে এবং যা কাঠামোগত নিয়ম ও ইভেন্টের অধীনে পরিচালিত হবে। ই-স্পোর্টসের ফলাফল সম্পূর্ণরূপে খেলোয়াড়ের শারীরিক দক্ষতা ও মানসিক কৌশল ও তাঁর পারফরম্যান্সের উপরে নির্ভর করে, উল্লেখ করা হয়েছে এই আইনে।
আর অন্যদিকে অনলাইন মানি গেমসের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়রা জেতার আশাতে টাকা বাজি ধরে। এই ধরনের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে এমন বিজ্ঞাপন বা প্রচারণার পাশাপাশি এগুলি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হবে। এই অনলাইন গেমিং বিলে সম্মতিসাপেক্ষে তদারকি, সমন্বয় নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১১৭ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ইতিমধ্যেই সুরক্ষিত হওয়ায় আইনটি এখন সংসদের উভয় কক্ষেই বিতর্কের জন্ম দেবে। এই আইন ভারতের ডিজিটাল নীতিমালার ধরণকে এক নয়া রূপ দিতে পারে। একইসঙ্গে অর্থ-চালিত গেমিংয়ের উপরে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আনা হবে।