নিউ ইয়র্ক: বিটকয়েন আমাদের বিনিয়োগের ধাঁচটাই বদলে দিয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ারের পাশাপাশি বিনিয়োগে আগ্রহী খুব ক্ষুদ্র একাংশ এখন বিটকয়েনেরও খোঁজখবর নিচ্ছে। পছন্দ করুন বা না করুন বিটকয়েন কিন্তু থাকার জন্যই এসেছে। আর এতে বিনিয়োগে আগ্রহীর সংখ্যাটা বাড়ছে দিনে দিনে। অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিচ্ছেন এই ক্রিপ্টোকারেন্সির খুঁটিনাটি জানতে। আবার অনেকের বক্তব্য, এতে ঝুঁকি আছে, তা ছাড়া স্থায়িত্বও কম।

কিন্তু বিটকয়েন নিয়ে সিরিয়াসলি ফেঁসেছেন আমেরিকার স্টেফান থমাস। বিটকয়েন বাজারে আসার পর প্রথম দিকেই এতে বিনিয়োগ করেন তিনি। তখন এর মূল্য বাজারে এক বা দুই অঙ্কের বেশি ছিল না। এখনও পর্যন্ত তাঁর বিটকয়েনের সংখ্যা ৭,০০২টি, বাজারে এর মূল্য চোখ ছানাবড়া করে দেওয়ার মত, ২৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ১৮০০ কোটি টাকা। নিরাপদে রাখার জন্য থমাস তাঁর সব বিটকয়েন একটি এনক্রিপ্টন ডিভাইসে রেখে দেন, তার নাম আয়রনকি।

এই আয়রনকি কতটা নিরাপদ কে জানে, তবে তার বিরাট সমস্যা রয়েছে। ঠিক পাসওয়ার্ড বেছে নেওয়ার জন্য এ মাত্র ১০ বার চেষ্টা করতে দেয়। যদি ডিভাইসের মালিক এই ১০ বারের চেষ্টাতেও ঠিক পাসওয়ার্ড মনে করতে না পারেন, তবে আয়রনকি বরাবরের মত তা এনক্রিপ্ট করে দেয়, অর্থাৎ পুরো টাকাটাই সারা জীবনের জন্য গেল।

থমাসের এখন মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলার দশা, কারণ পাসওয়ার্ড ভুলে গিয়েছেন তিনি। আর ইতিমধ্যেই এনক্রিপ্টন ডিভাইস আনলক করার জন্য আট আটটা ব্যর্থ চেষ্টা করে ফেলেছেন।

এখন ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে এটা বিরাট সমস্যা। একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক কির ওপর ভিত্তি করে এটি তৈরি হয়, যা বিটকয়েনের মত ক্রিপ্টোকারেন্সির ইউনিক আইডেন্টিফায়ার। শুধু মালিকের কাছেই এটি থাকে। সাধারণ ব্যাঙ্কের মত এর কোনও সেন্ট্রাল বডি নেই, পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে যারা নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে দেবে বা এটা খোলার কোনও মাস্টার কি নেই। অর্থাৎ কেউ যদি নিজের ক্রিপ্টো ওয়ালেটের পাসওয়ার্ড ভুলে যান, তবে কোনও কোম্পানি বা হেল্পলাইন তা খুলতে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না। আর এক সমস্যা হল, বিটকয়েনের বাস্তবে কোনও মূল্য নেই, কোনও নিয়ামক সংস্থা এর মূল্যের ওঠানামা নির্ধারণ করে না। সবটাই করে ডার্ক ওয়েব, যারা কোনও চিহ্ন রাখে না। অর্থাৎ ভবিষ্যতে থমাস যদি কখনও তাঁর পাসওয়ার্ড মনে করে ফেলতেও পারেন, কোনও গ্যারান্টি নেই, যে তাঁর বিটকয়েন অর্থমূল্য একই থাকবে।

এখনও পর্যন্ত এভাবে ভুলে যাওয়া পাসওয়ার্ডের দৌলতে বিটকয়েনে আটকে রয়েছে ৯.৫ লাখ কোটি টাকা, যা বহু দেশের সম্মিলিত জিডিপির থেকে বেশি!