Indian Economy: ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে মার্কিনি বোমারু বিমানের হামলার পরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। আর এর সঙ্গে সঙ্গে কৌশলগত কারণে ইরানের হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার সম্ভাবনাও বেড়েছে চরমে। আর এই সম্ভাবনাকে ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগও। এমন পরিস্থিতি হলে তা ভারতকে জোর ধাক্কা দেবে বলেই সতর্ক করেছেন পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞ রবিন্দর সচদেব।

তিনি বলেছেন, 'যদি ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে ভারত অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল এবং ২৫ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস এই অঞ্চল দিয়ে সরবরাহ করা হয়। ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হবে... কারণ তেলের দাম বেড়ে যাবে, মুদ্রাস্ফীতি উঠবে চরমে। আর অনুমান রয়েছে যে তেলের দাম প্রতি দশ ডলার বাড়লে ভারতের জিডিপি ০.৫ শতাংশ হারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'

ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে মার্কিনি বি২ বোমারু বিমান হামলা চালানোর পরে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর জেরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খমেনেই। ওয়াশিংটনের প্রতি তিনি তীব্র সতর্কবার্তা জারি করে বলেছেন, 'আমেরিকানদের আগের চেয়েও বেশি ক্ষতি ও আঘাত আশা করা উচিত'।

এর সঙ্গে সম্মত হয়ে খমেনেইয়ের প্রতিনিধিত্বকারী শরিয়তমাদারি দ্রুত প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'এখন আমাদের বিলম্ব না করে পদক্ষেপ নেওয়ার পালা। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে আমাদের বাহরিনে মার্কিন নৌবহের উপরে ক্ষেপণাস্ত্র চালাতে হবে, একইসঙ্গে মার্কিন, ব্রিটিশ, জার্মান ও ফরাসি জাহাজের জন্য হরমুজ প্রণালী বন্ধ করতে হবে।

অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার ইরানকে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন যে ইরানের তরফে এবার সমস্ত প্রতিক্রিয়া আরও ভয়ানক ও আরও শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া হবে। এই উত্তেজনার জেরে ভারতের লোহিত সাগরের বাণিজ্যরুটগুলি এখনও প্রভাবিত হয়নি, এখনও ৯০ শতাংশ পণ্যসম্ভার কেপ অফ গুড হোপ দিয়েই চলাচল করছে, তবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ হওয়ার গুরুতর সম্ভাবনা রয়েছে আর এই সংকীর্ণ মাত্র ২১ মাইল প্রশস্ত প্রণালী বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বহন করে যা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের জ্বালানি চাহিদার ৮০ শতাংশেরও বেশি আমদানি নির্ভর করে এই প্রণালীর উপরে।  

তবে ভারতের বাণিজ্য আধিকারিক এবং রফতানিকারকরা ইরানের এই হরমুজ প্রণালীর বদলে ছবাহার বন্দর দিয়ে বিকল্প বাণিজ্যপথ গড়ার পরিকল্পনা করছেন কিন্তু এখানেও দুশ্চিন্তা যে যদি এই বন্দর সক্রিয় না থাকে তাহলে বিপদ বাড়বে।