নয়াদিল্লি: আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার দিনও এগিয়ে আসছে। সেই আবহে ফের ভারতকে সতর্ক করল আমেরিকা। তবে এবার আর ট্রাম্প নন, দিল্লিকে বার্তা দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিপাবলিকান নেত্রী, ট্রাম্পের সতীর্থ নিক্কি হেলি। ট্রাম্পের মতামত ভারতের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত বলে মত তাঁর। (India-US Relations)
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সুসম্পর্ক যাতে বজায় থাকে, এতদিন সেই মর্মেই সওয়াল করে এসেছেন নিক্কি। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের ঘাড়ে যখন ‘শুল্ক শাস্তি’ চাপান ট্রাম্প, সেই সময়ও দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার পক্ষে মুখ খোলেন নিক্কি। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতকে কার্যত পরামর্শ দিতে দেখা গেল তাঁকে। যত দ্রুত ভারত পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝবে, ততই ভাল বলে মন্তব্য করলেন তিনি। (US Tariff on India)
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিক্কি লেখেন, ‘রাশিয়ার থেকে তেল কেনার বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থান বুঝতে হবে ভারতকে। সমাধানের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে। যত দ্রুত হয়, ততই ভাল। পৃথিবীর দুই বৃহত্তম গণতন্ত্রের মধ্যে এত দশকের বন্ধুত্ব। এই বন্ধুত্বের জন্যই অচলাবস্থা কাটিয়ে বেরোতে হবে। বাণিজ্য চক্তি নিয়ে মতানৈক্য হোক বা রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা, সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আলোচনা জরুরি’।
রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য় ভারতের উপর দুই দফায় ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ছেন ট্রাম্প। ২৫ অগাস্ট থেকে ওই হারে শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা। ট্রাম্পের দাবি, নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে রাশিয়ার থেকে তেল কিনে ভারত আসলে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুঘটকের কাজ করছে। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার থেকে অল্প দামে কেনা তেল অন্যত্র বিক্রি করে ভারতের কিছু সংস্থা ও পরিবার লাভবান হচ্ছে বলেও অভিযোগ ট্রাম্প সরকারের।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। এমনকি চিনও ভারতের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। সীমান্ত সংঘাত ভুলে এই মুহূর্তে চিনের প্রতি সুর নরম হতে শোনা যাচ্ছে ভারতেরও। ভারত ও চিনের মধ্যে এই নয়া সমীকরণে উদ্বিগ্ন নিক্কি। সরাসরি সেকথা ব্যক্তও করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘আমাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হলে চলবে না। গুরুত্ব বুঝতে হবে। চিনের মোকাবিলা করতে ভারতের মতো বন্ধু দেশকে আমেরিকার অবশ্যই প্রয়োজন’।
চিনের মোকাবিলা করতেই ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাই ভারত ও চিনের মধ্যে সখ্য় গড়ে উঠলে, তাতে আমেরিকার দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে। সেকথাই বার বার তুলে ধরছেন নিক্কি। সম্প্রতি নিজের লেখা একটি প্রতিবেদনেও একই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। জানান, চিনকে ঠেকাতে গেলে ভারতকে প্রয়োজন আমেরিকার। তাই কোনও ভাবেই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক নষ্ট করা যাবে না। তবে ট্রাম্প সরকার কী করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ভারত যদিও বার বার বলে আসছে, রাশিয়ার সঙ্গে তেল কেনার সঙ্গে দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। এতে আমেরিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার কোনও কারণই নেই।