নয়াদিল্লি:  পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সংঘাত বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে। এমন একটা সময়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবারের বাজেটে প্রতিরক্ষামন্ত্রককে ৪.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের জন্য মোট আর্থিক বরাদ্দ গত বছরের ৪,৭১,৩৭৮ কোটি টাকা (প্রতিরক্ষা পেনশন সহ) থেকে ৭.৪ শতাংশ বেড়েছে। পেনশন ছাড়া সীতারামন প্রতিরক্ষা ব্যয়ের জন্য ৩.৬২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। দুই ফ্রন্সে অচলাবস্থার পর্ব যদি ছড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে মূলধনী বরাদ্দে বৃদ্ধি অ্যাসল্ট রাইফেল, ক্ষেপনাস্ত্র ও ল্যান্ড সিস্টেমের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সীতারামনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বাজেটের প্রশংসা করে রাজনাথ বলেছেন, সুশাসনের ছয়টি ভিত্তির ওপর ভিত্তি করে এই বাজেট তৈরি হয়েছে।


রাজনাথের ট্যুইট, ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকার মূলধনী ব্যয় সহ প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়ে ৪.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা করার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে। গত ১৫ বছরে মূলধন বরাদ্দে এটাই সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি। প্রতিরক্ষা মূলধন ব্যয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় যে, প্রতিবেশী চিনের তুলনায় প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভারত বহু পিছিয়ে। চিন ২০১৪-১৯ এ প্রতিরক্ষা বাজেটে ২৬১.১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। অন্যদিকে, ভারতের ব্যয় ৭১.১ বিলিয়ন ডলার।

একইসঙ্গে জানা গেছে, গত অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা খাতে আপৎকালীন ও বাজেটবহির্ভূত ২০,৭৭৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। লাদাখ সীমান্তে চিনা চ্যালেঞ্জের  মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনী সারা বিশ্ব থেকে সাজসরঞ্জাম ও ভাণ্ডার সংগ্রহে নামায় এই অর্থ ব্যয় হয়েছে।

বাজেটের নথিতে দেখানো হয়েছে যে, প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দেওয়া সংশোধিত হিসেব অনুযায়ী অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। চিনের সঙ্গে সংঘাত চরমে উঠেছিল। একটা সময় উভয় পক্ষের ৫০ হাজারের বেশি সেনা যুক্ত হয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতি সাজ-সরঞ্জাম ও ভাণ্ডার সংগ্রহের প্রচেষ্টা তুঙ্গে ওঠে।

গত বছরে সশস্ত্র বাহিনীর সামনে এসেছিল বড়সড় অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ। আর এর ফলে গোলাবারুদ থেকে শুরু করে শীত বস্ত্র, ছোট অস্ত্রের মতো জিনিসপত্রের আপৎকালীন ক্রয়ের পরিমাণ বেড়েছিল। সশস্ত্র বাহিনীও নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে।

গত বছরে আপৎকালীন ক্রয়ের মধ্যে রয়েছে আমেরিকা থেকে অ্যাসল্ট রাইফেল, রাশিয়া থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপনাস্ত্র ও গোলাবারুদ, ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল ও মিরাজ ২০০ যুদ্ধবিমান বহরের জন্য অস্ত্রসম্ভার ও ইজরায়েল থেকে জরুরি ক্রয়।