চণ্ডীগড়:  পবিত্র ধর্মগ্রন্থের অবমাননার অভিযোগে ভয়ঙ্কর হত্যার ঘটনা। পঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরে (Amritsar Golden Temple) এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ (Man Beaten to Deatn)। ঘেরাটোপ টপকে তিনি 'গুরু গ্রন্থ সাহিব'-এর (Guru Granth Sahib) সামনে রাখা তলোয়ার ছুঁতে যান বলে অভিযোগ। তাতেই মন্দিরের মধ্যেই তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠছে সর্বত্র।  


শনিবার সন্ধ্যায় স্বর্ণমন্দিরে সন্ধ্যাকালীন প্রার্থনা চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, লাফিয়ে প্রার্থনা চলাকালীন লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরা জায়গায় রাখা গুরু গ্রন্থ সাহিবের কাছাকাছই পৌঁছে যান ওই যুবক। তার পর হাত বাড়িয়ে তলোয়ারটি নিতে যান। তাতেই শোরগোল পড়ে যায়। প্রার্থনা ছেড়ে ওই যুবককে আটকাতে ছুটে যান সকলে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভিড়ের হাতে আটক হন ওই যুবক। তার পর মন্দির চত্বরেই উন্মত্ত ভিড় অভিযুক্তকে পিটিয়ে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ। 


স্বর্ণমন্দিরের ঘেরা ওই জায়গাটিতে শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ 'গুরু গ্রন্থ সাহিব' রাখা রয়েছে। একমাত্র গ্রন্থি শিখরাই ওই ঘেরা জায়গায় প্রবেশ করতে পারেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, তলোয়ার দিয়ে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুটি কুটি করে ছিড়ে ফেলতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু ওই যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলা নিয়ে কোনও মন্তব্য় করেননি কেউ। 


অমৃতসরের ডিসিপি পরমিন্দর সিংহ ভান্দল সংবাদমাধ্যমে বলেন, “আজ ২৪-২৫ বছরের এক যুবক স্বর্ণমন্দিরে যেখানে গুরু গ্রন্থ সাহিব রয়েছে, সেখানে ঢুকে পড়ে। তলোয়ার দিয়ে সেটি ছিড়ে ফেলতে গিয়েছিল। ভিড় তাকে ধরে ফেলে এবং বার করে আনে। সেই নিয়ে ঝামেলা চলাকালীন মৃত্যু হয় তার।”


ওই যুবক একাই ছিলেন বলে জানিয়েছে অমৃতসর পুলিশ। ঠিক কী ঘটেছিল, তার জন্য মন্দির এবং মন্দির সংলগ্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছেলেটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রবিবার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃত যুবকের পরিচয় জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত।


আরও পড়ুন: শৈত্যপ্রবাহ, সঙ্গে ঘন কুয়াশা, উত্তরের একাধিক রাজ্যে জারি সতর্কতা


কিন্তু গুরুদ্বারে যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলার তীব্র নিন্দা শুরু হয়েছে। শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ভাইপ্রীত সিং রণধাওয়া সংবাদমাধ্যমে বলেন, “অমৃতসর সাহিবের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। পঞ্জাব সরকারের উচিত, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা।”


বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিংহ সিরসা বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে কথআ হয়েছে। তদন্তে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।”


পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল গোটা ঘটনার নিন্দা করেছেন। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন তিনি। স্বর্ণমন্দিরের মতো পবিত্র স্থানে এমন নৃশংস ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত বলে জানিয়েছেন।


তবে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ঘিরে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। কৃষক আন্দোলন চলাকালীন দিল্লি সংলগ্ন সিঙ্ঘু সীমানায় এমনই ঘটনা ঘটে। ধর্মগ্রন্থ অবমাননার দায়ে এক ব্যক্তির দেহ ছিন্নভিন্ন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।