নয়াদিল্লি: বাজপাখি শিকার করতে গিয়ে মেয়েরই প্রাণ চলে গেল। খুনের মামলা দায়ের হল বাবার বিরুদ্ধে। ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল আমেরিকায়। ঘটনার পর পিস্তল লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এক মহিলাও গ্রেফতার হয়েছেন। অস্ত্র লুকোতে তিনিই সাহায্য় করেছিলেন বলে অভিযোগ। (US News)

Continues below advertisement

আমেরিকার ইলিনয় থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। গত ২১ জুলাই বাজপাখি শিকার করছিলেন ডেভিড শুলথায়েস। জানা গিয়েছে, একটি পাকাবাড়িতে বসেছিল বাজপাখিটি। বাইরে থেকে বাজপাখিটিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ডেভিড। বাজপাখির শরীর ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় গুলিটি। কিন্তু কোথাও গিয়ে পড়ার পরিবর্তে, গুলিটি জানলার কাচ ভেদ করে সটান ডেভিডের মেয়ে, এমার শরীরে বিঁধে যায়। এমা তখন উল্টো দিকে, নিজেদের বাড়ির বাইরে ছিল। (Gun Violence)

প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জরুরি বিভাগকে খবর দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে এমাকে CPR দেন। সবরকমের চেষ্টা হয় মেয়েটিকে বাঁচানোর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চেষ্টায় সফল হতে পারেননি তাঁরা। সেন্ট লুই এলাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে এমাকে মৃত বলে ঘোষণা করেনি চিকিৎসকেরা। মৃত্যুর ছ’দিন পরই জন্মদিন ছিল এমার। বয়স হতো ১৫ বছর। কিন্তু তার আগে, বাবার ছোড়া গুলিতেই প্রাণ চলে গেল তার।

Continues below advertisement

শেরিফ ডিপার্টমেন্টের তরফে মামলাটি মনরো কাউন্টিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তাদের বক্তব্য, “এই ঘটনার গভীরতা, যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, শিশুমৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনা এড়ানো যেত হয়ত। এখন সেবসব না ভেবে, আসল সত্য উদঘাটন সবচেয়ে জরুরি।” 

এমার মৃত্যুর জন্য তার বাবা ডেভিড এবং ক্যারেন সোয়ার্ৎজে নামের এক মহিলার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। ডেভিডের বিরুদ্ধে বিপজ্জনক ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মামলা দায়ের হয়েছে। ক্যারেনের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ। এমার সঙ্গে ক্যারেনের কী সম্পর্ক জানা যায়নি। তবে তদন্তে উঠে এসেছে, .৪০ ক্যালিবারের পিস্তলটি ক্যারেনই লুকিয়ে রেখেছিলেন। পুলিশকে কী বলতে হবে, তা বাকিদের শিখিয়ে দেন তিনি। পরে ডেভিড যদিও নিজেই আত্মসমর্পণ করেন। ক্যারেন এখনও আত্মসমর্পণ করেননি।

এই ঘটনায় আবারও আমেরিকার অস্ত্র আইন নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। হাতে পিস্তল না থাকলে ডেভিড না গুলি ছুড়তেন, না তাঁর মেয়ের এই পরিণতি হতো বলে মনে করছেন অনেকেই। আমেরিকার অন্য প্রদেশের তুলনায় ইলিনয়ের অস্ত্র আইন বেশ কড়া। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অনেক নথিপত্র জমা দিতে হয় আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি পেতে। কিন্তু সাধারণ নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র রাখার প্রয়োজন কী, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়া তাঁদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেওয়ার যৌক্তিকতা কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বহু বছর ধরেই। আমেরিকায় বন্দুকবাজ হামলা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে আইনে রদবদলের দাবিও উঠে আসছে লাগাতার।