মুর্শিদাবাদ: বছর দুই আগে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে পেয়েছিলেন আবাস যোজনার বরাদ্দ টাকা। সেই টাকায় কেমন বাড়ি তৈরি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে এসে বিস্মিত হলেন কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত সংস্থার প্রতিনিধিরা। একতলা সুদৃশ্য ঝাঁ চকচকে বাড়ি। মার্বেল, টাইলসে মোড়া। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাওয়া মাত্র ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় এমন বাড়ি বানানো সম্ভব? মুর্শিদাবাদের ডোমকলের গরাইমাড়ির বাসিন্দা পেশায় কৃষক তৈমুর ইমাম হাসানের সাবলীল জবাব, আবাস যোজনা এবং জব কার্ডের টাকা মিলিয়ে ২ বছর আগে এই বাড়ি তিনি তৈরি করেছেন। রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের দল। ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে আবাস যোজনায় দুর্নীতি। সমস্তইটাই সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে জেলায় জেলায় যাচ্ছেন তাঁরা। 


১০০ দিনের কাজ দেখতে দল: কিছুদিন আগে মুর্শিদাবাদের সভা থেকে কেন্দ্রীয় দল নিয়ে সপ্তমে সুর চড়ান মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও বিজেপির কোর্টে বল ঠেলেছেন তিনি। পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি গেরুয়া শিবিরও।


মমতার কটাক্ষ: উল্লেখ্য, একইদিনে  ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মুর্শিদাবাদের ডোমকলে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। গড়াইমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১০০ দিনের কাজ খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। 


আবাস যোজনায় একাধিক দুর্নীতি:


সাজানো-গোছানো একতলা ঘর। তা সত্ত্বেও এই বাড়ির মালিক আবেদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায়। তালিকায় নাম আসেনি বলে অভিযোগও জানান। তারই তদন্তে এসে চক্ষুচড়ক গাছ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


আবাস তালিকায় হুগলির বেঙ্গাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের পরিবারের ৬ সদস্যের নাম। বাসিন্দাদের অভিযোগের মুখেও নিরুত্তাপ পঞ্চায়েত প্রধান। শুক্রবার, আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লক অফিসের  গেট আটকে বিক্ষোভ দেখালেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর নেতা-কর্মীরা। বর্ধমান ১ নম্বর ব্লকে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সামনেই ঘর না পাওয়ার অভিযোগ জানালেন ২ বাসিন্দা। 


দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় ফের স্বজন পোষণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতাপনগরের গাড়াল অঞ্চলের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় নস্করের স্ত্রীর নাম রয়েছে আবাস-তালিকায়। টাইলস বসানো দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে আবাস যোজনায় নাম উঠল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা। তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের সাফাই, আবেদনের সময় আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল। বাড়ি হওয়ার পর, বিডিও-র কাছে নাম কাটানোর আবেদন জানানো হয়েছে। তৃণমূল সদস্যের স্ত্রীর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোনারপুরের বিডিও।  এর আগে সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও প্রতাপনগর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি দিলীপ ঢালি ও উপপ্রধান মামুদা বিবির পরিবারের সদস্যদের নাম ছিল আবাস তালিকায়।