বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে বিপদের মুখে পড়েছিলেন ওঁরা। এমন অবস্থায় এগিয়ে এল ভারতীয় উপকূল রক্ষীবাহিনী (Indian Coast Guard)। ২৭ জন বাংলাদেশি (Bangladesh) মৎস্যজীবীকে (fishermen) উদ্ধার (rescue) করল তারা। তাঁদের ৩টি ট্রলারের (boat) মধ্যে দুটি ঝড়ে (storm) উল্টে (capsizes) যায় বলে খবর। একটি উদ্ধার করা গিয়েছে।


কী হয়েছিল?
উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রে খবর, বাংলাদেশের ওই তিনটে ট্রলার মাছ ধরতে এসেছিল। নিম্নচাপের জেরে বঙ্গোপসাগরে যখন দুর্যোগ ঘনাচ্ছে, সেই সময়ই ভারতের জলসীমায় সেগুলি ঢুকে পড়ে। তার পরই বিপর্যয়। ভারতের উপকূলরক্ষী বাহিনীর ডর্নিয়ার বিমান গভীর সমুদ্রের আকাশ থেকে অনুসন্ধানের কাজ চালাচ্ছে। পাশাপাশি তাদের ২ উদ্ধারকারী জাহাজ, আইসিজিএস অনমোল(ICGS ANMOL) এবং  আইসিজিএস ভরদ-ও(ICGS VARAD) অনুসন্ধানের কাজ করছে। সূত্রের খবর, যে সাতাশ জনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে তাঁরা আপাতত উদ্ধারকারী জাহাজেই রয়েছেন। এর পর তাঁদের রাজ্য প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কবে তাঁরা বাংলাদেশ ফিরবেন, সেটা দুদেশ আলোচনা করেই স্থির করবে বলে খবর। 


মর্মান্তিক ট্রলারডুবি এপারেও...
গত ১৯ অগাস্ট একটি ট্রলারডুবির ঘটনায় সুন্দরবনেরও ১৮ জন মৎস্যজীবী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। কেঁদো দ্বীপের কাছে চড়ায় ধাক্কা মেরে উল্টে যায় এফ বি সত্যনারায়ণ নামে ট্রলার। মৎস্যজীবীদের খোঁজে সাহায্য নেওয়া হয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর।  জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের আবহাওয়া খারাপের সতর্কতা পেয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ফেরার চেষ্টা করছিল ট্রলারটি।  তখনই বিপদ ঘটে। পরে ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়। তার পর বাকিদেরও উদ্ধার করা হয়। ২১ ঘণ্টারও বেশি সমুদ্রের নোনা জল লেগে অনেকের দেহেই ঘা হওয়ার জোগাড়। উত্তাল সমুদ্রে সাঁতার কেটে কারও দেহেই একফোঁটা শক্তি নেই যেন। অক্সিজেন ও জলশূন্যতা দুটোই চরমে। ফিরিয়ে আনার পরই তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্স ও মেডিক্যাল টিম দুটোই তৈরি ছিল। প্রসঙ্গত, গত জুনেও মাছ ধরতে গিয়ে দুটি ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায় একটি ট্রলার। নিখোঁজ হয়ে যান এক মৎস্যজীবী।  গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে এই কেঁদো দ্বীপ থেকে বেশ কিছুটা দূরে বঙ্গোপসাগরে। তবে হালের ছবিটা এত মর্মান্তিক নয়। পর পর দুটি ঘটনায় বিপদগ্রস্তদের বাঁচাল ভারতীয় উপকূলরক্ষীবাহিনী।   
উল্লেখ্য, নিম্নচাপের ঝড়বৃষ্টিতে তীব্র ক্ষতিগ্রস্ত ঝড়ের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হলদিয়া-নন্দীগ্রাম ফেরিঘাট। বন্ধ ফেরি চলাচল। টানা বৃষ্টিতে বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী নদীতে জল বাড়ায় বন্ধ হল অস্থায়ী সেতু। সব মিলিয়ে দাপট স্পষ্ট।


আরও পড়ুন:নিম্নচাপ-পরবর্তী কেমন আবহাওয়া মহানগরে?