কলকাতা: নিজাম প্যালেসে (Nizam Palace) নিয়োগ-দুর্নীতির তিন অভিযুক্ত-পার্থ, কল্যাণময়, এস পি সিন্হা। এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা এস পি সিন্হারও সিবিআই হেফাজত। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। ‘নিয়োগ-দুর্নীতিতে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। শান্তিপ্রসাদ সিন্হা অন্যতম ষড়যন্ত্রী। শান্তিপ্রসাদের মাধ্যমেই মোটা অঙ্কের টাকা গিয়েছে প্রভাবশালীদের কাছে। অসহযোগিতা করছেন শান্তিপ্রসাদ, আরও জেরা প্রয়োজন’। আদালতে দাবি করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
‘আপনারা কেন কথা বার করতে পারছেন না? আপনারা পারছেন না বলে অভিযুক্তকে বারবার হেফাজতে পাঠাতে হবে? সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে প্রশ্ন করেন বিচারক। ‘যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বয়ান রেকর্ড হয়েছে? সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান বিচারক। উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে জানান, ‘শুধুমাত্র নিয়োগ কর্তা ও আর্থিক লেনদেন নিয়েই তদন্ত হয়েছে’।
জেরা করে CBI-এর: পাশাপাশি এসএসসি নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় পার্থ, কল্যাণময়কেও জেরা করে সিবিআই। পার্থ, কল্যাণময়কে পৃথক ভাবে জেরা করা হয়েছে। সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগে কী ভূমিকা ছিল পার্থর? তিনি না জানলে, কারা জানত? প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চাইছে সিবিআই। কার নির্দেশে নিয়োগপত্র দিয়েছেন কল্যাণময়? প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির কাছে তাও জানতে চাইছে সিবিআই।
কী বলছে তথ্যপ্রমাণ ? নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) পার্থ চট্টোপাধ্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করলেও, তথ্যপ্রমাণ অন্য কথা বলছে। নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এমনটাই মনে করছে সিবিআই। খবর সূত্রের। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আজ পার্থ চট্টোপাধ্যায় ( Partha Chatterjee) ও কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে (Kalyanmay Ganguly) জেরা করবে সিবিআই (CBI)। সূত্রের খবর, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি কারা নিয়ন্ত্রণ করত, শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে পার্থর ভূমিকা কী ছিল, তিনি না জানলে, কারা জানত, তা নিয়েই জেরা করা হবে পার্থকে। অন্যদিকে, জেরায় কল্যাণময়ের কাছে জানতে চাওয়া হবে, তিনি কার নির্দেশে নিয়োগপত্র দিয়েছেন। যদিও আদালতে কল্যাণময়ের আইনজীবী দাবি করেছেন, তিনি কোনও নিয়োগপত্র দেননি। সিবিআই সূত্রে দাবি, পার্থ ও কল্যাণময়ের বয়ানে অসঙ্গতি থাকলে দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ত্সনা: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ত্সনা সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারকের। পাশাপাশি, নবম-দশম ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিকাণ্ডে শান্তিপ্রসাদ সিন্হাকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ। এদিন আদালতে সিবিআই দাবি করে, নবম-দশম ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে বড় রকমের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। শান্তিপ্রসাদ সিন্হা অন্যতম ষড়যন্ত্রী। তাঁর মাধ্যমেই মোটা অঙ্কের টাকা গিয়েছে প্রভাবশালীদের কাছে। তাই তাঁকে আরও জেরা করা প্রয়োজন।
পাশাপাশি, শান্তিপ্রসাদ তদন্ত অসহযোগিতার করছেন বলেও আদালতে দাবি করেন সিবিআই আইনজীবী। আপনারা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও কেন কথা বার করতে পারছেন না। আপনারা পারছেন না বলে অভিযুক্তকে বারবার হেফাজতে পাঠাতে হবে? সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে প্রশ্ন করেন বিচারক শেখ কামালউদ্দিন। যে সব সহকারী শিক্ষকরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে কি না, তাও জানতে চান বিচারক। শুধুমাত্র নিয়োগ কর্তা ও আর্থিক লেনদেন নিয়েই তদন্ত হয়েছে। নিয়োগপত্র পাওয়া প্রার্থীদের ডাকা হয়নি। আদালতে জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। এরপরই সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ত্সনা করেন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক।