সুনীত হালদার, হাওড়া: 'রাস্তা দখল করে দোকান দেওয়া থেকে প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে তুলে আনা। ফেল কড়ি মাখো তেল! ৫০০ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা! হাওড়া পুরসভার গেটের বাইরে হাওড়া জেলা গণতান্ত্রিক নাগরিকবৃন্দর নামে টাঙানো তালিকায় অভিযোগ, এটাই শিবপুরের বিধায়কের বেআইনি কাজের প্রাইস লিস্ট'। যাঁরা করেছেন, তাঁদের ছবি ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে- প্রতিক্রিয়া অভিযুক্ত বিধায়ক ও মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির। তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। 


প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে তুলে আনতে হলে প্রেমিককে দিতে হবে ৫০ লক্ষ টাকা! ৩০ লক্ষ টাকা লাগবে কারও জমি দখল করতে হলে! আর কাউকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে হলে, তার রেট ১০ লক্ষ টাকা! শুধু তাই নয়,তালিকায় আরও আছে।  বেআইনি বাড়ি তৈরি করলে প্রতি তলার জন্য লাগবে ১০ লক্ষ টাকা। ৫ লক্ষ টাকায় মিলবে পুরসভার চাকরি। ১০০ দিনের কাজ পেতে মহিলাকে দিতে হবে ২০০০ টাকা।


অভিযোগ, এটাই শিবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়কের বেআইনি কাজের প্রাইস লিস্ট! হাওড়া জেলা গণতান্ত্রিক নাগরিকবৃন্দর নামে চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ তুলে ব্যানার টাঙানো হয় হাওড়া পুরসভার গেটে। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্য। বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না শাসক-বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির।


মঙ্গলবার রাতে হাওড়া পুরসভার গেটের বাইরে মন্ত্রীর নামে এরকম দু'টি বড় বড় ব্যানার দেখা যায়। যেখানে সাত রকম তোলাবাজির রেট দেওয়া হয়েছে। ব্যানারের নীচে লেখা, হাওড়া জেলা গণতান্ত্রিক নাগরিকবৃন্দ। কে বা কারা ব্যানার লাগিয়েছেন তা দেখেননি বলে দাবি পুরসভার কর্মীদের। পরে খবর পেয়ে হাওড়া থানার পুলিশ ব্যানার দু'টি খুলে নিয়ে যায়। 


শিবপুর ও ক্রীড়াপ্রতিমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক মনোজ তিওয়ারির কথা, গোটা ঘটনা তদন্ত হচ্ছে। যারা পোস্টার মেরেছে তাদের ছবি সিসিটিভি তে ধরা পড়েছে। তার কাছেও ছবি এসেছে। সময়ের অপেক্ষা। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে।


বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই এ প্রসঙ্গে বলছেন, আমরা অনেকদিন আগে থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের তোলাবাজি নিয়ে বলে আসছি। এবার হাওড়া পুরসভার গেটে শিবপুরের বিধায়কের বিরুদ্ধে পোস্টার। সাধারণ মানুষ তৃণমূলের রাজত্বে খুব ভয়ে ও আতঙ্কে রয়েছেন। তারা তৃণমূলের নেতার বিরুদ্ধে বলতে ভয় পাচ্ছে। কেউ কিছু বললে মার খাবে নয়তো পুলিশ কেস হতে পারে। তাই মানুষ এইভাবে পোস্টার দিয়ে প্রতিবাদ করছে।


সম্প্রতি মন্ত্রীর অফিসে ডেকে পাঠিয়ে, একজনকে মন্ত্রী সাজিয়ে পুলিশের সামনে কারখানা ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন শিবপুরের এক ব্যবসায়ী। ঘটনা নিয়ে প্রকাশ্যে আসে দুই মন্ত্রীর দ্বন্দ্ব। ব্যানারকাণ্ডের পিছনেও কি দলের দ্বন্দ্ব? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচির আগে উঠছে এই প্রশ্ন। তুঙ্গে বিতর্ক।